১
সিগন্যাল লাল হয়ে আছে। ষ্টিয়ারিং-এ হাত রেখে অপেক্ষা করছি। পেছন থেকে পিঁ পিঁ আওয়াজ। অটোচালক ইঙ্গিত করল একটু এগিয়ে গিয়ে তাকে জায়গা করে দিতে। বাধ্য হয়ে অনেক হিসেব করে সামনের দানবীয় লরিটার দিকে আরো ছ’ ইঞ্চি এগোলাম। বন্ধ হয়ে থাকা ট্রাফিক পেছনে ফেলে, লাল হয়ে থাকা সিগন্যালকে থোড়াই কেয়ার করে, অটো-টা এগিয়ে গেল। দু-মিনিট বাদে যথা নিয়মে সিগন্যাল সবুজ হল। আধমাইল টাক এগোতেই অটোরিক্সাটা-কে আবার দেখা গেল। ঢিমে তালে চলেছে। সামনে দুপুরের ফাঁকা যশোর রোড। তাকে টপকে এগোলাম। পিছনে পড়ে রইল সিগন্যাল ভেঙ্গে এগিয়ে যাওয়া অটো।
২
ফাঁকা ব্যাঙ্কের কাউন্টার। মাত্র তিনজন লোক লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। পাশ থেকে সক্ষম যুবক এসে লাইন ভেঙ্গে কাউন্টারে হাত ঢুকিয়ে দিল।
‘পাশবুকটা আপডেট করে দিন তো, দিদি।’
৩
সরকারী হাসপাতাল। কিন্তু নতুন তৈরী বেশ পরিচ্ছন্ন সিঁড়ি। সিঁড়ির কোনায় বালি ভরা পিকদানি। ওপরে উঠলেই বেসিন। তবু লোকটা থুক্ করে সাদা দেওয়ালটা পানের পিকে নোংরা করে দিল।
৪
রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা বালি ও কাঁকরে মোটরবাইকটা পিছলে গেল। পেছনের আরোহিণীর হাত ভাঙ্গল। বাইকচালক মাথায় আঘাত পেয়ে ইনটেনসিভ কেয়ারে। অ্যাক্সিডেন্টের সময় দুজনের হেলমেট দুটোই বাইকের পাশে ঝুলছিল।
ওপরের ঘটনাগুলো সকলের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা।
অঙ্ক শিখতে গিয়ে দুধে জল মেশাতে শেখা একটা জাতি, যারা প্রতিনিয়ত নিয়ম ভাঙ্গে, তাদের মাস্ক যে গলায় বা পকেটে থাকবে- এতে আর আশ্চর্য কি!
নিয়ম ভাঙ্গাতেই যে আমাদের আনন্দ!
প্রয়োজন না থাকলেও।
বিপদের সম্ভাবনা থাকলেও।