গত ২০ মার্চ ২০২০ তারিখে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এজেন্টস নামক জার্নালে ফ্রান্সের Aix Marceseille University এবং অন্যান্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা একটি লেখা প্রকাশ করেছেন যা দাবি করছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং অ্যাজিথ্রোমাইসিন নামক দুটি Antimicrobial ওষুধ COVID-19 আক্রান্তদের ওপর কার্যকরী হচ্ছে। তাঁরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে বেশ কিছু সংখ্যক আক্রান্তদের ওপর এই ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চালান এবং কার্যকরী ফলাফল পান বলে দাবি করেছেন।
ভারতে সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে, যে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী আশঙ্কাজনক রোগীদের সাথে কাজ করছেন তাঁদের ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে আগে থেকেই এই ওষুধ খেতে বলা হয়েছে। সরকারি সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই খবরটি রীতিমতো চারদিক ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, করোনা প্রতিকারে যে সমস্ত ওষুধের নাম উঠে আসছে সেগুলি প্রত্যেকটাই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে, এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া অনুচিত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে তাঁদেরকেই এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাঁরা আক্রান্তদের সাথে রয়েছেন বা আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করছে্ন, সেটাও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে। সাধারণ মানুষের জন্য তা একেবারেই না।
গবেষণা থেকে, এরকম অনেকগুলো ওষুধের নাম উঠে এসেছে, যেমন চীনে Remdesivir নামেও একটি ওষুধের নাম উঠে এসেছে যা একটি অ্যান্টি ভাইরাল ড্রাগ। ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন একটি প্রাচীন ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক এবং অবশ্যই জীবনদায়ী ওষুধ। ওষুধটি আর্থরাইটিস – জন্যও ব্যবহৃত হয়।
কিন্তু এর বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। এমনকি যে যে ওষুধ একসাথে খেতে বলা হচ্ছে, তা সঠিকভাবে নিতে না জানলে আপনার হৃদযন্ত্র বরাবরের জন্য বিকল হয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি ওষুধটি চোখের সমস্যা এবং নার্ভের সমস্যাও তৈরি করতে পারে। ক্ষতিকর হতে পারে সন্তানসম্ভবা মহিলাদের জন্যও।
এগুলি প্রতিটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ, অর্থাৎ চিকিৎসকদের নির্দেশ এবং পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা একেবারেই যায় না। তাই করোনা আতঙ্ক থেকে বাঁচতে যদি ঝোঁকের মাথায় এই রকম কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, তা আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তাই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এরকম কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নেবেন না।
ভরসা রাখুন। লক ডাউন সফল করুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। অযথা আতঙ্কিত হবেন না, গুজবে কান দেবেন না।
ঔষধের নাম দিয়ে এই ধরনের প্রচার দেওয়া উচিত না কারণ আমি কয়েক জনের কাছে শুনেছি যে অনেকেই এই Hydroxy chloroquin কিনছে। কিন্তু খাচ্ছে কিনা জানিনা।তবে কিনেছে যখন খাওয়ার জন্যই কিনেছে, কারণ লোকের মধ্যে ভয় ছড়িয়েছে আর আমাদের দেশে সবাই মোটামুটি ছোটোখাটো ডাক্তার।