বিজ্ঞানকথা গ্রুপে একজন প্রশ্ন করলেন:
জানতে চাই…. যাঁরা আংশিক ভাবে শ্রবণে অক্ষম, লিপ রিড করে কথা শোনেন/ বোঝেন তাঁদের কী hearing aid ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে?
যদি হয় সেটা কী ভাবে সম্ভব, বিশেষত যাঁরা লিপ রিড করেন… তাঁরা তো ঠোঁটের নড়াচড়া দেখেই (অবশ্য সাথে শব্দ শোনার ও দরকার পড়ে) কথা বোঝেন। আর সেখানে মেশিন তো কেবল আওয়াজের তীব্রতা বাড়িয়ে সাহায্য করে।
আর শেষ প্রশ্ন যাঁরা এটি ব্যবহার করেছেন, রাস্তায় ট্রেনে বা বাসের হর্নে কী তাঁদের সমস্যা হয় না?? কারণ আওয়াজ তো দ্বিগুণ হয়ে তখন কানে পৌঁছায়।
আমার উত্তর:
লিপ রিডিং সহজাত ক্ষমতা। কানে কম শুনলে মানুষ নিজেই নিজের অজান্তে লিপ রিড করতে শুরু করেন। উদাহরণ স্বরূপ বয়স্ক কোন মানুষকে যিনি শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়ার কথা স্বীকার করেন না, তাঁর সাথে মুখের ওপর হাত চাপা দিয়ে কথা বললে দেখবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। সেরকমই কানে কম শোনা মানুষের সাথে চিৎকার করে কথা বললে কোন লাভ হবে না। মুখোমুখি সামনে বসে মুখ নাড়িয়ে আস্তে কথা বললেও দেখবেন সব বুঝতে পারছেন। লিপ রিডিং শ্রবণশক্তির অল্টারনেটিভ নয়, পরিপূরক। পাখির আওয়াজ, ঝর্নার শব্দ লিপ রিডিং করে বোঝা যাবে না। এই সমস্ত শব্দ মিলিয়েই আমাদের জগৎ। আর আজকাল ডিজিটাল হিয়ারিং এইডে বিভিন্ন মাত্রার শব্দ এডজাস্ট করা যায়। তাই পেছনের বাসের শব্দ, হর্নের আওয়াজ আস্তে করে শুধু কথাবার্তা জোরে শোনানো সম্ভব। হিয়ারিং এইড প্রযুক্তি অসামান্য উন্নতি করেছে গত দুই দশকে। অন্য অনেক মেডিক্যাল প্রযুক্তির থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী। ব্যবহার বাড়লে দামটাও কমবে এমন আশা রাখাই যায়।