কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আক্রমণে আমাদের রাজ্যে সরকারি হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ২০০০০ রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন। সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে সমস্ত সঙ্কটাপন্ন রোগীদের ভর্তি করানো যাচ্ছে না বা সময়মত বেড পাওয়া যাচ্ছে না। রয়েছে অক্সিজেনের আকাল। এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কোভিড রোগীদের সাহায্যে রাজ্য জুড়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন রেড ভলান্টিয়ার সহ অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম এর পক্ষ থেকে বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেহেতু সব রোগীকে সময়মত হাসপাতালে ভর্তি করানো যাচ্ছে না সেই পরিপ্রেক্ষিতে, প্রাথমিকভাবে বাড়িতে কোভিড রোগীর চিকিৎসা কীভাবে হতে পারে সেটা সহজভাবে বুঝিয়ে একটি ভিডিও মারফত কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ অর্জুন দাশগুপ্ত। সেগুলি হলো:
১. অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪% শতাংশের বেশী হলে বাড়িতেই চিকিৎসা করুন।
২. যথেষ্ট পরিমাণএ জল খান।
৩. যদি বগলে জ্বর ১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশী হয় তাহলে প্যারাসিটামল (ক্যালপল ৫০০ মিলিগ্রাম) খান। যদি জ্বর না কমে প্রয়োজনে ৬ ঘণ্টা পর পর। দিনে সর্বাধিক ৮ টা খেতে পারেন (৪ গ্রাম)।
৪. কাশি থাকলে গরম জলের ভাপ নাক মুখ দিয়ে নিন। স্প্যাজম বা বুকে সাঁই সাঁই আওয়াজ হলে ইনহেলার ( Salbutamol, Levosalbutamol, Salmeterol) নিন।
৪. পেট খারাপ হলে ডিহাইড্রেশন আটকাতে যথেষ্ট পরিমাণএ ওআরএস বা এক গ্লাস জলে ২ চামচ চিনি, ৩ আঙ্গুলের এক চিমটি নুন আর ১/২ লেবু মিশিয়ে পান করুন। প্রতিবার পায়খানার পরে এটা খাওয়াতে হবে।
৫. যদি খোলা ঘরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪% এর কম হয় এবং ৬ মিনিট হাঁটার পর স্যাচুরেশন ৩% এর বেশী কমে যায় তাহলে হাসপাতালে অবশ্যই ভর্তি হতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শমত নীচের ওষুধগুলো খাওয়া শুরু করা যেতে পারে যতক্ষণ না হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ৮ থেকে ১২ দিনের মধ্যে রোগের বাড়াবাড়ি হতে পারে। বিনা কারণে স্টেরয়েড দেবেন না, ক্ষতি হতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নয়
ক. ওরাল স্টেরয়েড ( Dexamethasone 6 mg or Methyprednisolone 32mg or Prednisolone 40 mg রোজ ৫ থেকে ১০ দিন)
খ. রক্ত জমাট না বাঁধার জন্য ( inj. Enoxaparin 40 mg s/c OD)
গ. প্রোনিং (কীভাবে করতে হয় ইউ টিউবে দেখা যাবে) করালে অক্সিজেনের অভাব কিছুটা মিটবে।
কফ সিরাপ, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন, এন্টিবায়োটিকস (যদি না অন্য কোন ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে), ভিটামিন সি, ডি, জিঙ্ক খাওয়ানো যেতে পারে, কিন্তু কাজ হয় এরকম কোন প্রমাণ নেই তবে ক্ষতিও নেই।
রুটিন সিটি স্ক্যানের কোন ভূমিকা নেই। যখন কোভিডের উপসর্গ আছে কিন্তু পরীক্ষায় নেগেটিভ আসছে, তখনই স্ক্যান করিয়ে রোগ নির্ধারণ করা হয়।
বাড়িতে শুধু অক্সিজেন দিয়ে খুব একটা লাভ হয় না। তখনই দেবেন যখন হাসপাতালে ভর্তি করা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পরেছে।