মন নিয়ে আমাদের মনে অনেক ধন্দ আছে।যদি জানতে চাওয়া হয় মন কোথায় থাকে? সাধারণভাবে একটা ধারণা প্রচলিত আছে মন আমাদের হৃদয়ে আছে। তাই তো মনের ব্যথায় তীরবিদ্ধ হৃদয়খানা আইকন হয়ে গেছে। হৃদয় যদি হৃদপিণ্ডকে বোঝায় তবে মনের সঙ্গে তার ভারি দুরের সম্পর্ক। আমাদের হৃদযন্ত্র কি কাজ করে কিংবা ফুসফুস কি কাজ করে সে সম্বন্ধে একটা ধারণা সাধারণ মানুষের আছে। কিন্তু মনের কাজ কারবার কি ভাবে চলে সে সম্বন্ধে অনেকেরই স্পষ্ট কিছু জানা নেই।মস্তিষ্কের (Brain) দ্বারাই মূলত: মন পরিচালিত। মন বিকল হলে কি করেই বা বোঝা যাবে মন ভাল নেই মন ভাল নেই মন ভাল নেই……
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বলেছে সুস্থতা বলতে শুধু রোগের অনুপস্থিতি বোঝায় না। সুস্থ তাকেই বলা হবে যিনি শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে ও সমাজগত দিক থেকে ভাল আছেন। তার মানে শরীরের সুস্থতা যেমন প্রয়োজন মনের সুস্থতাও সে রকম গুরুত্বপূর্ণ।
মানসিক সুস্থতা সার্বিক সুস্থতার অন্যতম শর্ত।
এমন ধারণা ঠিক নয় যে মনের অসুখ বলে কিছু হয় না বা চাইলেই সে অসুখ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।অনেকে ভাবেন মনের অসুখ ( মাথার অসুখ) মানেই সে পাগল। তাই মনের রোগের ডাক্তারের কাছে যাওয়া বেশ লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ডায়াবেটিস হলে অনায়াসে বলা চলে আমার তো রক্তে সুগার পাওয়া গেছে। কিন্তু ডিপ্রেশন হলে বলতে পারা যায় না, আমার মনের অসুখ হয়েছে। এই লজ্জার কারণ আসলে মনের রোগের সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা। ম্যালেরিয়া কি বা জন্ডিস হলে কি উপসর্গ সে সম্বন্ধে ধারণা থাকলেও উদবেগ রোগ কাকে বলে কিংবা স্কিজোফ্রেনিয়া কি অথবা ম্যানিয়া বলতে আমরা যা বুঝি আসলে তা ম্যানিয়া নয়, ওসিডি এমন অনেক কিছু সাধারণভাবে অজানা। অজানাকেই তো ভয় বেশি আমাদের। তাই চট করে জেনে নেওয়া যাক কি উপসর্গ দেখলে
বোঝা যাবে মনের কল কাঠি বিকল হচ্ছে, কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
* মেজাজের পরিবর্তন যেমন খুব বিষন্ন হয়ে যাওয়া বা খিটখিটে হয়ে যাওয়া।
* খুব ভয় বা উদবেগের শিকার হওয়া।
* সামাজিকভাবে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া।
* ঘুম বা খিদের বিশেষ পরিবর্তন যেমন খুব বেশি খিদে বা ঘুম হওয়া বা খুব কম খিদে বা ঘুম হওয়া।
* ব্যক্তির রোজকার কাজকর্ম ব্যহত হওয়া।
আপনার নিজের বা আপনার কাছের মানুষটার মধ্যে এই উপসর্গ দেখলে বুঝতে হবে আপনি বা আপনার প্রিয়জনটির চিকিৎসার প্রয়োজন। টাইফয়েড বা ম্যালেরিয়া কিংবা নেহাত সর্দি কাশি হলে যেমন চিকিৎসকের সাহায্য নেন, এক্ষেত্রেও লজ্জা ভুলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। যেমন শরীরের রোগ নির্ণয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা হয় (রক্ত, প্রস্রাব, ই সি জি) প্রয়োজনে ডাক্তারবাবু মনের রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা করাতে পারেন। ওষুধ ও কাউন্সেলিং করে সুস্থ হোন, জীবনকে উপভোগ করুন।