দেখে ভালো লাগছে যে আমাদের রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রক আমাদের, জুনিয়র ডাক্তারদের প্রস্তাব মতো কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে। আমরা মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার দের সংগঠন MCKRDA এর পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে প্রেস বিবৃতি দিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব রাখি যা এই মুহুর্তে কোভিড মোকাবিলার জন্য অত্যন্ত জরুরি বলে আমাদের মনে হচ্ছে।
কোভিড এর বিরুদ্ধে লড়াই টা আমরা করছি সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে থেকে আর সমস্ত নীতিনির্ধারকেরা এসি ঘরে বসে কাগজে কলমে পলিসি নির্ধারণ করছেন। তার ফলে যে ফাঁক থেকে যাচ্ছে, তার খানিকটা অন্তত মিটবে এই প্রস্তাব গুলো মানলে আর তাতে উপকার হবে আসলে জনসাধারণের, সেটা অল্প হলেও বুঝছেন তাঁরা।
গঠিত হয়েছে ৩০ সদস্যের সেল, সাসপেক্টেড রোগী ও কোভিড আক্রান্ত রোগীরা কিভাবে কোথায় যাবেন, ভর্তি হবেন সে বিষয়গুলি তারা স্বাস্থ্যভবনের কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটর করবেন৷ এম্বুল্যান্স এর ব্যাপারেও দায়িত্ব নেবে এই কন্ট্রোল রুম।
প্রতিটি ল্যাবরেটরিতে কোভিড টেস্ট হওয়ার পর কোনো রোগীর রিপোর্ট পজিটিভ এলে তা কেন্দ্রীয় একটি ডেটাবেসে নথিভুক্ত করার কাজও করা হবে বলে খবর।
কিন্তু সমস্যা হল, গতকাল ও আজও কিন্তু এরকম বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যেখানে বার বার ফোন করে রোগীর পরিজন রা বুঝতে পারেন নি কোথায় নিয়ে যেতে হবে। তাতে হয়রানির চূড়ান্ত হতে হয়েছে। ফলে ঘোষণা হলেও যথাযথ কাজ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে। যে পরিমাণে সংক্রমণ এবং তার সাথে পাল্লা দিয়ে জনসাধারণের ভয় বাড়ছে তাতে রেফারেল, এডমিশন, টেস্টিং সংক্রান্ত জটিলতা কমিয়ে যথাযথ কোভিড মোকাবিলা করতে গেলে কন্ট্রোল রুম কে ২৪x৭ কার্যকরী থাকতে হবে, বেড এর সংখ্যা স্বচ্ছ ভাবে পাবলিশ করতে হবে, প্রতিটি হাসপাতাল ও এই কন্ট্রোল রুমের অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের কো-অর্ডিনেশন লাগবে, নাহলে যে কারণে এটা চালু করা হল তা হবে না, কেবল আরেকটা গিমিক হিসেবেই থেকে যাবে।
কিন্তু মূল সমস্যা যেটা থেকে যাচ্ছে যে তা হল, প্রতিটি হাসপাতালে ‘কোভিড ব্লক’ বানানো, অন্ততপক্ষে প্রতিটি হাসপাতালে সাসপেক্টেড রোগীদের জন্য SARI(সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) ওয়ার্ড বানানো, টার্সিয়ারি হাসপাতাল গুলোকে খারাপ রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করা ও কম উপসর্গ যুক্ত রোগীদের লেভেল ১, ২ হাসপাতালে রাখা – এই বিষয়গুলি নিয়ে স্পষ্টতার চূড়ান্ত অভাব ও ঢিলেমি।
NRS হাসপাতালে ১১০ বেডের কোভিড ব্লক ইতিমধ্যে খোলা হয়েছে। অত্যন্ত স্বাগত উদ্যোগ। বাকি হাসপাতাল গুলো তেও অবিলম্বে এই ব্যবস্থা করতে হবে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কমিটি কে নিয়মিত হাসপাতাল গুলি পরিদর্শন করতে হবে ও আইসোলেশন ওয়ার্ড, ডনিং ডফিং এরিয়া, SARI ওয়ার্ড থেকে কিভাবে সংক্রমণ ছড়ানো ন্যূনতম হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতাল গুলোর ‘নন কোভিড উইং’ এ বাকি রোগের চিকিৎসা স্বাভাবিক রাখতে হবে, সেফ হোম কোয়ারান্টাইন, লেভেল ১,২ হাসপাতালের বেডের সংখ্যা বাড়াতে হবে অনেক, টার্সিয়ারি হাসপাতাল গুলোতে হাই ফ্লো অক্সিজেন লাইন, ভেন্টিলেটর এর সংখ্যা বাড়াতে হবে।
সোজা কথায় কেবল নোটিশ দিয়ে নয়, যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় যথাযথ কো-অর্ডিনেশন করে, যথাযথ বিজ্ঞান সম্মত মডেলে পরিকাঠামো তৈরি ও ব্যবহার যদি করা যায়, তাহলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় খানিক হলেও ঠেকানো যেতে পারে।
#DoctorsForPeople
#InclusiveNotExclusive