Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

ব্যথার পাহাড় পেরিয়ে-৪

esi
Dr. Subrata Goswami

Dr. Subrata Goswami

Anaesthetist & Pain Specialist. Health Administrator. Writer and Actor.
My Other Posts
  • December 12, 2022
  • 6:39 am
  • No Comments

ব্যথার অচলায়তন অতিক্রমণের এক প্রয়াস পর্ব ৪

যোগ্যতা অর্জন

সব কাজেরই অনেকগুলো স্তর থাকে, আমাদেরও ছিল দীর্ঘ সময় ধরে পেইন ম্যানেজমেন্ট চিকিৎসার ওটি করছি, কিন্তু মনে প্রশ্ন উঠত যে আমি কি আদৌ এসব করতে পারি? আমার কি কোন কোয়ালিফিকেশন আছে এই কাজগুলো করার?  আমি অপারেশন করছি, এগুলো কোথাও গিয়ে রোগীর জন্য রিস্ক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে না তো? এই আত্মসমালোচনা থেকেই পেইন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে জানতে আরও পড়াশোনা করতে চাইছিলাম।

অনেক খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ইউএসএ-তে পেইন ম্যানেজমেন্টের উপর একটা পরীক্ষা হয়। প্রথম আমেরিকাতেই পেইন এডুকেশন শুরু হয়েছিল। যেসব দেশে এখনো পেইন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ফেলোশিপ চালু হয়নি, সেখান থেকে ওদেশে পরীক্ষা দিতে যায়। আমেরিকাতে প্রথম পৃথ্বীরাজ নামে একজনের তত্ত্বাবধানে পেইন ম্যানেজমেন্ট শুরু হয়েছিল। তাঁকেই পেইন ম্যানেজমেন্টের জনক বলা হয়।

আমার সঙ্গে সুব্রত রায় বলে একজন চিকিৎসক ওই পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। ফেলোশিপের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য প্রথমে সুপারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হল। উনি তো জানতেনই আমি কি ধরনের কাজ করছি, তাই খুব সহজেই অনুমতি পেয়ে যাই। পরীক্ষা দেওয়ার আগে আমাদের হাতে মাত্র ছ মাস সময় ছিল।

সব কাজ বন্ধ করে দিয়ে পড়াশোনা শুরু করি। আমি পেইন নিয়ে কাজ করার সময় যে বইগুলো পেয়েছি তার প্রথম পাতা থেকে শেষ পাতা পর্যন্ত বারবার পড়তে থাকি। আমার টার্গেট ছিল অন্তত তিনবার বইটা পড়া। এইভাবে পড়ার জন্য বইয়ের কোন পাতায় কি লেখা ছিল সব আমার আত্মস্থ হয়ে যায়। আমরা জানতাম এটাই আমাদের অস্ত্র। আমাদের কোনো শিক্ষক ছিল না, বইতে যা লেখা ছিল একজন সেগুলো পড়তো আর অন্যজন অপারেশন থিয়েটারে সেই পদ্ধতিতে কিভাবে কাজ করা যাবে তার অভ্যাস করত। আগেই বলেছি পৃথ্বীরাজের বই আমরা ফলো করতাম। এইভাবে একজন অদৃশ্য শিক্ষক পৃথ্বীরাজকে সামনে রেখে আমরা পেইন ম্যানেজমেন্টের সব কাজ শিখতে লাগলাম। দ্রোণাচার্যকে গুরু হিসেবে সামনে রেখে একলব্যর সাধনার মতোই ছিল আমাদের সাধনা। আমাদের পড়াশোনাতে সেই সময় হাসপাতালের রোগীরাও সাহায্য করেছিল।

২০১০ নাগাদ আমরা বুদাপেস্ট-এ যাই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। তখনকার দিনে প্রায় তিন লাখ টাকার মত খরচ হয়েছিল। যা আমাদের কাছে অনেক, ফেল করলে অনেকগুলো টাকা নষ্ট হবে-এই ভয় আমাদের ছিল।

আমরা পড়ার জন্য প্রাইভেটে যেটুকু কাজ করতাম তা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমার স্ত্রী সেই সময় একটা পার্ট টাইম চাকরি করতেন। তবুও আমাকে সংসারের কোনো দিকে দেখতে হয়নি। আমার স্ত্রীর সমর্থনের জন্যই এই কাজে এগোতে পেরেছিলাম।

যাই হোক পরীক্ষা দেওয়া গেল, ফিরে এসে আগের মতই কাজ শুরু করে দিলাম। শিয়ালদা ইএসআই-তে যে বিভিন্ন রকমের পদ্ধতি ব্যবহার করে পেইন ম্যানেজমেন্টের কাজ চলছে সেই খবর চারিদিকে ছড়িয়ে গিয়েছিল। সাধারণ মানুষের কাজে লাগার জন্য এই কাজের প্রচার প্রয়োজনও ছিল। তাই আমরা নানান ওয়ার্কশপ, সেমিনার করে কিভাবে কি কাজ করা হচ্ছে এবং তাতে রোগীর কি উপকার হচ্ছে সেই সব দেখতাম। এমন ভাবেই একটি সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন আর জি করের তৎকালীন প্রিন্সিপাল ডাক্তার সুশান্ত ব্যানার্জি। তিনি হাসপাতালে এসে সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থাটি দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন এবং আর জি কর এও এমন একটি পেইন ইন্সটিটিউট চালু করতে উৎসাহী ছিলেন। বলেন, “ইএসআই এমন পরিষেবা দিচ্ছে তবে হেলথে কেন নয়?” সরকারিভাবে হেলথ ডিপার্টমেন্টের স্পেশাল অর্ডার করিয়ে আর জি কর-এ নিয়ে যাওয়া হয় আমাকে। পেইন ক্লিনিক খোলার তোড়জোড় শুরু হল সেখানেও।

২০১১-এ আর জি কর মেডিকাল কলেজ হাসপাতালেও পেইন ক্লিনিক খোলার কাজ শুরু হয়। এখানেও প্রথমে ক্লিনিক খোলার জায়গা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, কিছুটা খোঁজার পর ফিজিক্যাল মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের পাশে একটা ধুলো ভর্তি ঘর পাওয়া যায়, ঘরে ঢোকার পর দেখি টেবিল, চেয়ার—সব সেই ঘরেই আছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ওই ঘরেই কাজ শুরু করব বলে ঠিক করি। একটা তালা নিয়ে এসে ঘরের বাইরে লাগিয়ে দিই, তারপর প্রিন্সিপালের কাছে গিয়ে জানাই, প্রিন্সিপাল অনুমতি দিয়ে দেন। ঘরটা পরিষ্কার করে একটা কাগজে পেইন ক্লিনিক লিখে দরজায় আটকে দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালে যেখানে কম্পিউটারাইজড টিকিট কাটা হয় সেখানে গিয়ে এবার থেকে পেইনের টিকিট করার কথা বলা হল। এই ভাবেই খুব তাড়াতাড়ি আর জি কর-এ অফিসিয়ালি পেইন ক্লিনিক চালু হয়ে যায়।

আর জি কর-এর পেইন ক্লিনিকের আউটডোরে বসে রোগী দেখাও শুরু হল। এবার ওটি কোথায় পাবো? রেডিওথেরাপি ডিপার্টমেন্টের হেড ছিলেন ডা. সুবীর গাঙ্গুলী। ওনার কাছে ওটি রুম চাওয়া হয়। উনি বলেন “হ্যাঁ করতে পারো, শুক্রবার তো ওটি ফাঁকাই থাকে”। ডা. অসীম কুন্ডু, ডা. দীপশ্রীদি মিলে এনেস্থেসিয়া দিতেন, পরবর্তীতে ওটিতে ওনারা সি-আর্মটা ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। এই ভাবেই আর জি কর-এও পেইন ম্যানেজমেন্টের কাজ শুরু করা গেল।

আর জি কর-এ এখনো পেইন ম্যানেজমেন্টের কাজ চলছে। অন্যদিকে শিয়ালদা ইএসআই-তেও পেইনের নানান চিকিৎসা হচ্ছে। দুটো জায়গায় একসাথে কাজ এগোচ্ছে। সেই সময় হেলথ ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাদের কাজে খুশি হয়ে appreciation letter পাঠানো হয়েছিল।

 

পেইন-ক্লিনিক থেকে পেইন ইন্সটিটিউট:

সমর্থন ও বাধা

ক্রমশ, শিয়ালদা ইএসআই-এ পেইন ক্লিনিক আরও উন্নত হচ্ছিল। চিকিৎসার জন্যই আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কাজ করতে গিয়ে বুঝি একটা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জেনারেটর না হলে হবেই না! এবার সেটা কে দেবে? ওই মেশিন চেয়ে ইএসআই কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখি। চিঠিতে কেউ সরাসরি না করে না। কিন্তু যে যন্ত্রের দাম ৪০ লাখ টাকা, সেখানে ওরা বলে মোট ১০ লাখের বেশি টাকা দেওয়া যাবে না। এবার ১০ লাখে তো মেশিন পাওয়া যাবে না, আর পাওয়া গেলেও সেটা খুব নিম্নমানের হবে। আমাদের কাজের জন্য ওই দামিটাই প্রয়োজন, কিন্তু কিনবো কোথা থেকে? ইএসআই পূর্বাঞ্চল অফিসে বলি আবেদন করি, সেখানেও বাধা আসে। তারা জবাব দেয়, দিল্লির হেড অফিসের অর্ডার লাগবে। দিল্লিতে চিঠি পাঠানো হয়। দিল্লি থেকে প্রশ্ন আসে কেন এই মেশিন চাই? আদৌ এই মেশিন রোগীদের কতটা উপকারে লাগবে? চিঠিতে এইসব লিখে পাঠাতে বলেন। উত্তর পাঠাই, ফের ওনারা ফেরত প্রশ্ন পাঠান, এই ভাবেই চলতে  থাকে। শেষে একদিন ওনারা বলেন দিল্লির অনুমতি না হলে চলবে না।

ডিরেক্টারের কাছে দিল্লি যাওয়ার অনুমতি চাই, উনি দিয়ে দেন। দিল্লি গিয়ে মেডিকেল কমিশনারের সঙ্গে দেখা করি, ওনাকে জানাই আমাদের হাসপাতালে এই যন্ত্রটি খুব প্রয়োজন, তিনি বলেন নিশ্চয়ই পাবেন। আমি দামের কথা জানাই, মেডিকেল কমিশনার আমাকে আশ্বাস দেন এবং বলেন আপনারা ঠিকঠাক ভাবে প্রপোজাল পাঠান, আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। দিল্লিতে যাওয়ার সময় আমাদের কাজকর্মের একটা প্রেজেন্টেশন করে নিয়ে গেছিলাম, সেটা দেখে ওনারা খুব সন্তুষ্ট হন। আমরা রেডিওফ্রিকোয়েন্সি জেনারেটর কেনার অনুমতি পেয়ে যাই। খুব তাড়াতাড়ি যন্ত্রটা কেনাও হয়ে যায়, তা দিয়ে কাজও শুরু করি। এইভাবে চেষ্টা করতে করতে আরো একটা লড়াই জিতে যাই আমরা।

শিয়ালদা ইএসআই-তে দিন দিন পেইনের রোগীও বাড়ছিল। স্থানসংকুলান কঠিন হতে থাকে। আমরা তখনো অন্যের ক্লিনিকে ধার করা সময়ে কাজ চালাচ্ছিলাম। এতে সমস্যা হচ্ছিল, অন্য ডিপার্টমেন্টের লোকজনের নানান মন্তব্য আসে। তবুও কাজটা চালিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু এটা ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে উঠছিল যে এইভাবে জোড়াতালির সংসারে আর কাজ চালানো যাবে না। পেইন ক্লিনিকের জন্য এবার অন্য একটি জায়গা দেখতেই হবে।

ইতিমধ্যেই অনেক শিক্ষার্থী পেইন ক্লিনিকে ট্রেনিং নিতে আগ্রহ প্রকাশ করছিলেন। তাঁদের কয়েকজনের ট্রেনিং নিতে আসাটা পাকা হয়ে যাওয়ার পরেই স্থান সংকুলানের সমস্যাটা আরও বেশী করে অনুভাব করতে লাগলাম। একদিকে চিকিৎসা অন্যদিকে ট্রেনিং এই সব কাজ একসঙ্গে করতে গেলে অনেকটা জায়গা প্রয়োজন। সেই সময় জায়গাটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কি করা যায় এই ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ মনে পড়ে, আমাদের হাসপাতালের ছাদে একটা ঘর আছে। যদিও সেই ঘর ওই সময় খুব অপরিষ্কার ছিল, ব্যবহার হতো না। সুপারকে অনুরোধ করি, ওই ঘর সমেত ছাদটা পেইন ক্লিনিকের জন্য খুলে দেওয়া হোক। এতদিন ঘরটায় তালা ঝুলত এবং কারো খোলার অনুমতি ছিল না। আমরা তৎকালীন শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং দোলা সেন-এর সহযোগিতায় তালা খুলে ছাদ ব্যবহারের অনুমতি পাই।

সেখানে টিনের চাল দিয়ে পুরো ছাদটা ঢেকে শুরু করা হলো পেইন ইনস্টিটিউট। বোর্ড লাগানো হলো, একটা ক্লাস রুম আর একটা ওটি তৈরি করা হলো। ইনস্টিটিউটের পরবর্তী ধাপ মানে ট্রেনিং কোর্স চালু করা হল। ডাক্তাররা পড়বেন- প্রাথমিকভাবে সেই রকমই প্রয়োজনীয় কিছু শর্ট কোর্স চালু করতে চাইছিলাম। ডিরেক্টর বলেন এই কাজটি করতে হলে আগে হেলথ ইউনিভার্সিটির অনুমতি নিতে হবে। আমরা রেজিস্ট্রার অফ সোসাইটির কাছেও পরামর্শ নেওয়ার জন্য চিঠি দিই। কিন্তু মুশকিল হল রেজিস্ট্রার অফ সোসাইটি জানান তাঁরা কখনো ডাক্তারদের পড়াশুনোর অনুমতি দিতে পারেন না, সেটা দিতে পারে হেলথ ইউনিভার্সিটি, পারে মেডিকেল কাউন্সিল। এই ভাবেই একের পর এক বাধা আসতে থাকে। কিছু হবে না ভেবেই প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেই নিয়েছিলাম শিয়ালদায় ট্রেনিং ইন্সটিটিউট শুরু করতে পারবো না।

ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের অনুমতির জন্য হেলথ ইউনিভার্সিটিতে যাই, সেখানে ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করার জন্য একটি ফরম ফিলাপ করতে বলা হয়। যদিও তার আগে ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের জন্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে একটা অনুমতি পত্র নিয়ে আসতে হবে। স্বাস্থ্য দপ্তর তখনই অনুমতি দেবে যখন তারা মনে করবে এ রাজ্যে এই কোর্সের প্রয়োজন আছে। আমি সমগ্র বিষয়টা জানাতে ডিরেক্টর অফ মেডিকেল এডুকেশনের কাছে যাই। সৌভাগ্যক্রমে তখন ডিএমই ছিলেন ডা. সুশান্ত বন্দোপাধ্যায়, যিনি এর আগে আর জি কর হাসপাতালের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব সামলেছেন, ওনার সময়েই আর জি কর-এ পেইন ক্লিনিক শুরু হয়েছিল। উনিতো আমাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আগে থেকেই সব জানতেন। এই কাজে ট্রেনিং সেন্টারের প্রয়োজন, সেটা উনিও উপলব্ধি করেছিলেন। গোটা বিষয়টা জানার পর উনি বলেন, “ভালো কাজ, এটা অবশ্যই  হওয়া দরকার”।

তিনি একটা ইন্সপেকশান টিম ভিজিট করতে পাঠালেন শিয়ালদায় ইএসআই-তে। তারা এসে লাইব্রেরী দেখলো, আমাদের লাইব্রেরীতে আগে থেকেই সমস্ত প্রয়োজনীয় বই রাখা ছিল। তারা ক্লাসরুম দেখল। সবকিছু দেখে ইন্সপেকশান টিমের লোকজন খুব খুশি হয় এবং আমরা অনুমতি পেয়ে যাই। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে ফের ইউনিভার্সিটিতে যাওয়া হয়। সেখানে সে সময়ে ভাইস চ্যান্সেলার ছিলেন ডা. অমিত ব্যানার্জি, তিনি কোর্সটা সম্পর্কে জানতে চান। কি ধরনের কোর্স চালু করতে পারি, সে বিষয়েও জিজ্ঞাসা করেন। আমি ফেলোশিপ কোর্সের কথা বলি। তিনি তখন সিলেবাসের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি সিলেবাস বানিয়ে আনার পরামর্শ দেন। এই সিলেবাস বানানো একটা পর্ব। কারন আমাদের সামনে কোনো সিলেবাস ছিল না। ইউএসএ, অস্ট্রেলিয়া, ইউকে থেকে এক একটা সিলেবাস জোগাড় করি, পৃথ্বীরাজেরই একটা সিলেবাস নিই। সবগুলো মিলিয়ে একটা বড় সিলেবাস তৈরি হয়। এ ছাড়াও যেগুলো দরকার বলে আমাদের মনে হয়েছিল সেই সবগুলোই এই সিলেবাসের সঙ্গে যোগ করে দিই। এবার এই বড় একটা সিলেবাস নিয়ে ফের ইউনিভার্সিটিতে ভিসি-র সঙ্গে দেখা করতে যাই। এবার ইউনিভার্সিটি থেকে অনুমতি দেওয়া হয়।

২০১২ থেকে পেইন ইনস্টিটিউটের ট্রেনিং কর্মসূচী শুরু হয়। প্রথম ১০ জন স্টুডেন্ট নিয়ে ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সূচনা হয়। এরপর একে একে প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রগুলোও চলে আসে। প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং শুরু হয়। কোর্সও চালু হয়ে যায়। শিয়ালদা ইএসআই-এর সেই ছোট্ট পেইন ক্লিনিক ধীরে ধীরে পেইন  ইনস্টিটিউটে পরিণত হয়। আমাদের উদ্দেশ্য সফল।

এসময় বহু চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী এই প্রতিষ্ঠানটিকে উন্নত করার লক্ষ্যে এগিয়ে এসেছিলেন। প্রফেসর এস. এন. বাসু, ডা. শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, ডা. অমিত চক্রবর্তী, ডা. সুব্রত রায়, ডা. প্রশান্ত রায় কর্মকার, ডা. শুভঙ্কর ঘোষ, ডা. অমিতাভ চক্রবর্তী সহ আরও অনেক মানুষের চেষ্টাতে পেইন ইন্সটিটিউট তৈরী সম্ভব হয়েছিল।

ট্রেনিং ইন্সটিটিউট তৈরীর পথটি সুগম ছিল না। কেন এমডি না করেই পাতি এমবিবিএস ডাক্তাররা এই কোর্সে সুযোগ পাবেন সে বিষয়ে সারা দেশ থেকেই আপত্তি উঠেছিল। সবার মত ছিল এমডি এনেস্থেশিয়া করে তবেই পেইন ম্যানেজমেন্টে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশান করার সুযোগ পাওয়া উচিত। কিন্তু আমরা মনে করি এমবিবিএস ডিগ্রিটাই অনেক বড়। পেইন ম্যানেজমেন্টে ভর্তি হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। ভারতের বিপুল সাধারণ মানুষ ও গ্রামাঞ্চলের জনগণের জন্য তাঁরা কাজ করেন। এমডি চিকিৎসকেরা তো প্রধানত শহরেই থেকে যাবেন।

চলবে…

অনুলিখন: শুক্লা সরকার ও পিয়ালী দে বিশ্বাস

PrevPreviousA Hunger Striker’s Diary
Nextকলেজ-ক্যাম্পাসে শেষ কথা বলবে সেখানকার ছাত্রছাত্রীরাই।Next
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

স্বাস্থ্য দপ্তরের নাম হওয়া উচিত সার্কাস দপ্তর

June 4, 2023 No Comments

আমাদের রাজ্যে বিগত কয়েকদিন ধরে স্বাস্থ্য দপ্তরে যা চলছে তাতে এখন থেকে নাম হওয়া উচিত সার্কাস দপ্তর। বছরের পর বছর কলকাতায় থাকা একজন চিকিৎসকের বদলির

স্কুল শিক্ষায় বিবর্তন বাদ

June 4, 2023 No Comments

বিবর্তন নিয়ে কিছু ভুল ধারণা ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং তথা এনসিইআরটি বিদ্যালয়ের ‘পাঠক্রমকে যুক্তিযুক্ত করে সাজানো’-র জন্য নানা

ডিপ্লোমা ডাক্তার: লক্ষ্য কি বেসরকারি ক্ষেত্রে সস্তার চিকিৎসক সরবরাহ না কি স্থায়ী নিয়োগের দায় এড়ানো?

June 3, 2023 No Comments

তথ্যের জাগলারি নতুন কোনো প্রকল্প তৈরি করতে গেলে, পরিস্থিতির বাস্তব বিশ্লেষণ যেমন জরুরি তেমনই তথ্য পরিসংখ্যান অপরিহার্য। বাজারের নিয়মে, কোন উৎপাদনে লাভ হতে পারে, সেটা

আন্দোলন

June 2, 2023 No Comments

প্রিন্সিপ্যালের রুমের কাঁচ ঢাকা বড় টেবিলটার উল্টোদিকে রাখা কালো ভারী টেলিফোনটা বেজে উঠল। ষ্টুডেন্টস ইউনিয়নের সেক্রেটারি পরিতোষ রিসিভারটা তুলে ডাঃ অমিতাভ বোসের হাতে সেটা এগিয়ে

দীপ জ্বেলে যাও ৭

June 1, 2023 No Comments

শুভ ভাবতেও পারে নি কলেজে এত তাড়াতাড়ি এতটা পরিচিত মুখ হয়ে উঠতে পারবে। নির্বাচনে জিতে সে এখন পাঁচ জন ছাত্র প্রতিনিধির এক জন। সেটার থেকেও

সাম্প্রতিক পোস্ট

স্বাস্থ্য দপ্তরের নাম হওয়া উচিত সার্কাস দপ্তর

West Bengal Doctors Forum June 4, 2023

স্কুল শিক্ষায় বিবর্তন বাদ

Dr. Jayanta Das June 4, 2023

ডিপ্লোমা ডাক্তার: লক্ষ্য কি বেসরকারি ক্ষেত্রে সস্তার চিকিৎসক সরবরাহ না কি স্থায়ী নিয়োগের দায় এড়ানো?

Dr. Manas Gumta June 3, 2023

আন্দোলন

Dr. Chinmay Nath June 2, 2023

দীপ জ্বেলে যাও ৭

Rumjhum Bhattacharya June 1, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

434861
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]