১৪ই জুলাই, ২০২০
আমাদের রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ক্রমাগত ভয়াবহ দিকে এগোচ্ছে। খবরের কাগজে বা নিউজ চ্যানেলে চোখ রাখলে রোজ মর্মান্তিক দুর্ভাগ্যজনক নানা ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। সমস্যা আসলে কোথায় সেটা আমরা সকলেই বুঝছি। কেবল ডাক্তারদের উপর দোষ চাপিয়ে এ ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই। প্রয়োজন অতিদ্রুত যথাযথ পরিকল্পনা ও তার প্রয়োগের। গিমিক, শর্টকাট দিয়ে প্যানডেমিকের মোকাবিলা করা যায় না।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব আছে সরকারের কাছে। আমরা মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার রা আমাদের আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে বলেছি যে, আমাদের আন্দোলন আসলে স্বাস্থ্যনীতির যে গলদ গুলো রয়েছে তার বিরুদ্ধে, কোভিড ও নন কোভিড উভয় চিকিৎসা কিভাবে ভালো হওয়া সম্ভব তা বলার চেষ্টা আমরা বারবার করেছি। আবারও বলছি, অতিদ্রুত যথাযথ পরিকল্পনা ও তার প্রয়োগ না করলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা কিন্তু চোখের সামনে ভেঙে পড়বে।
১) অবিলম্বে প্রতিটি দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের ( secondary and tertiary level) হাসপাতালে শুধুমাত্র কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ব্লক খুলতে হবে। যাতে করোনা উপসর্গযুক্ত বা করোনা পজিটিভ রোগীদের এই হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে হয়রানির শিকার না হতে হয়।
২) প্রতিটি মেডিকেল কলেজ সহ তৃতীয় স্তরের (Tertiary level) সরকারি হাসপাতালে গুরুতর ভাবে অসুস্থ কোভিড রোগীদের জন্য (ডাক্তারি পরিভাষায় Level III, IV) সিসিউ বেড ও অন্যান্য আয়োজন সহ বিশেষ কোভিড ব্লকের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দের নিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি ( Infection Control Committee) তৈরি করে সেই কমিটির তত্ত্বাবধানে এ ‘নন কোভিড উইং’ এ করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগী দের চিকিৎসা স্বাভাবিক রাখতে হবে।
৩) কোভিড রোগীদের ভর্তি ও রেফারেল প্রক্রিয়ার জটিলতা হ্রাস করতে হবে, স্বাস্থ্যভবন ও প্রতিটি হাসপাতালের মধ্যে সমন্বয় যথাযথ হতে হবে। স্বাস্থ্যভবন এ ২৪x৭ কন্ট্রোল রুম খুলে কোভিড ও কোভিড সাসপেক্ট (যাদের পরীক্ষা এখনো হয়নি বা রিপোর্ট পাওয়া যায় নি) রোগীরা কোথায় যাবেন তার যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। রোগী স্থানান্তরের জন্য অক্সিজেন যুক্ত এম্বুল্যান্স এর ব্যবস্থা এই কন্ট্রোল রুম থেকে করতে হবে।
যথেচ্ছ রেফার করা যাবে না, করতে হলে রোগীর তাৎক্ষণিক ভাবে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা করে, স্বাস্থ্যভবনের কন্ট্রোল রুম কে জানিয়ে, কন্ট্রোল রুম এর মাধ্যমে রেফার করতে হবে।
৪) মেডিকেল কলেজের মত হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগ কে কার্যত অকেজো করে রাখা হয়েছে, ফলে খারাপ রোগী হঠাৎ এসে পড়লে তার চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অবিলম্বে প্রোটোকল মেনে রোগীদের আপতকালীন চিকিৎসার সেট আপ চালু করতে হবে।
কারণ হার্ট এটাক, এনকেফেলাইটিস, প্রবল শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস এর মত ইমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে কোভিড পজিটিভ না নেগেটিভ সেই রিপোর্ট আসা অবধি অপেক্ষা করা যাবে না বা অন্য কোথাও রেফার ও করা যাবে না। ফলে তাদের চিকিৎসা কিভাবে হবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সরকারি নির্দেশিকা অবিলম্বে প্রয়োজন।
৫) করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা কেবল নোটিশ দিয়ে দায়সারা ভাবে করলে চলবে না, যথাযথ প্রোটোকল মেনে নন-কোভিড উইং আলাদা করে প্রতিটি রোগীর চিকিৎসা সুনিশ্চিত করতে হবে। নাহলে কিন্তু এই রোগীরা চিকিৎসা না পাওয়া অবস্থায় যদি কোভিড আক্রান্ত হন তাহলে তাদের বাঁচানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে।
৬) ত্রিস্তরীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থা কে কাজে লাগিয়ে একদম কমিউনিটি স্তর থেকে উপসর্গ ভিত্তিক ভাবে কো মর্বিডিটি ও বয়সভিত্তিক ভাবে ভাগ করে কোভিড রোগীদের ট্রায়াজ করতে হবে। স্বাস্থ্যভবনের কন্ট্রোল রুমের মনিটরিং এ ও সরকারি নির্দেশিকা মেনে রোগীদের উপসর্গ, শারীরিক অবস্থা বিচার করে যে হাসপাতালে যে রোগীর চিকিৎসা হওয়া উচিত তা যাতে হয় নিশ্চিত করতে হবে।
৭) বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিং হোম ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোভিড টেস্টিং যাতে বৈধভাবে হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। সেই টেস্ট কোন পদ্ধতি তে করা হচ্ছে এবং তার ফলাফল বাধ্যতামূলক ভাবে স্বাস্থ্য দপ্তর কে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে। (যেমন টিবি, পোলিও পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটা কেস পজিটিভ হলে তা সরকার কে জানাতে হয় অতি দ্রুত তেমন ভাবে)। যে সমস্ত হাসপাতালে ‘তাৎক্ষণিক কিট’ টেস্ট করে পজিটিভ রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে তাদের দ্রুত সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্যভবনের কন্ট্রোল রুমে জানিয়ে, রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে রোগীকে প্রয়োজনীয় অন্য জায়গায় পাঠানোর যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে।
৮) প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রুপ ডি কর্মচারী, ওয়ার্ড বয় এর উপস্থিতি সুনিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের সুরক্ষা ও উপযুক্ত মাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং তাদের কাজে লাগিয়ে রোগীদের ভর্তি করে যাতে দ্রুত ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা যায়, রোগীদের রক্তপরীক্ষা, X-ray থেকে শুরু করে প্রতিটি ইনভেস্টিগেশন যাতে দ্রুত ও হয়রানিমুক্ত ভাবে হয় সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে।
৯) কোভিড এর মোকাবিলা করার জন্য অবিলম্বে নতুন পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে হবে। ভেন্টিলেটর এর সংখ্যা বাড়াতে হবে, হাই ফ্লো অক্সিজেন লাইন তৈরি করতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক এর ওয়েবসাইটে রোজ যে ফাঁকা বেডের সংখ্যা দেখানো হচ্ছে তার প্রকৃত অবস্থা কি তা প্রকাশ করতে হবে।
সর্বোপরি, পুরনো পরিকাঠামো দিয়ে এত রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি কোভিড এর মত ‘বার্ডেন’ এর মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আমাদের রাজ্যে যেখানে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি, সেখানে তা ব্যবহার করে কোভিড মোকাবিলায় নতুন সেট আপ তৈরি করা সম্ভব বলেই আমরা মনে করি, কিন্তু তা করতে হবে অত্যন্ত দ্রুত। এবং, কেন্দ্র থেকেও এ জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে হবে৷
কারণ, এই সময়ে অযথা ঢিলেমির পরিণাম কিন্তু মারাত্মক হবে।
ENGLISH VERSION OF MCKRDA PRESS RELEASE
14.07.2020
The condition of the Corona virus pandemic in our state is gradually becoming more and more frightening. Everyday there is news of one dreadful unfortunate event after another. We can all largely comprehend where the problem lies. There is no way of escaping the situation by putting all blame on doctors. The situation demands immediate infrastructure development and its fruitful implementation. Otherwise is impossible to battle a pandemic with gimmicks or shortcuts.
We would like to make a specific few suggestions to the government at this point. We, the junior doctors of Medical College and Hospital, Kolkata have said since day one of our movement that the movent was against the loopholes of the existing health policies and we have opined time and again regarding the manner in which covid and non covid can be treated effectively. And we have emphasised upon the fact that without proper infrastructure and its immediate efficient use, the health system will soon crumble in front of our eyes.
- Covid-only blocks should be started in all secondary and tertiary level hospitals immediately. So that symptomatic or covid positive patients do not have to face harassment by going to one hospital after another.
- Every Medical college and all tertiary level government hospital (level III and IV according to medical terms) should be equipped adequately for treating critical covid patients including CCU beds and special covid blocks. Infection Control Committees should be set up in every hospital consisting of specialist doctors and treatment in ‘non-covid wings’ should be continued under their supervision.
- Smooth communication should be established between Swasthya Bhawan and every hospital in order to avoid harassment of patients regarding their admission and referral. A 24×7 control room should be set up in Swasthya Bhawan to properly direct covid suspect patients (those who have not had the covid test or who did not receive their test reports) to respective hospitals. The control room should also do the needful to ensure ambulances and with oxygen facilities are available for these patients during travel. Patients should not be referred to other centres without reason, any referral should be carried out after primary treatment and informing the control room and thereafter as per their guidance.
- The General Emergency of hospitals such as Medical College has been kept non-functional making treatment of critical non covid patients near-impossible once they get here. Emergency services must be restored without any delay in these facilities to avoid such events. Because heart attack, encephalitis, severe respiratory distress, diabetic ketoacidosis are emergencies which cannot wait for covid reports and cannot be referred to other centres. Therefore, notice regarding the treatment of these patients should be issued by the government immediately.
- This initiative should not stop at only the issuing of a notice regarding non covid patient treatment. Non-covid wings should be started following proper segregation protocols with detailed guidelines regarding the same since if these patients also contract covid while already affected with these diseases, saving their lives will become near-impossible.
- Utilising the three tier health system effectively, triage of covid patients should be done according to co-morbidities and age. Obeying the control room monitoring at Swasthya Bhawan and government guidelines, patients should be classified according to their symptoms, clinical condition and sent to the proper hospital according to said classification.
- It should be ensured that covid testing is done in an authentic and legal manner in different hospitals, nursing homes and diagnostic centres. The health department should compulsorily be informed of the methods of testing as well as reports (in the same manner as the government is informed promptly of every positive case of TB and polio). The hospitals- where rapid testing is being done- should inform the control room of all positive reports promptly and after primary treatment, patients should be sent to other facilities through the control room in a proper manner.
- Every hospital should have adequate number of group D staff and ward boys and their safety and proper wages should be ensured. They should be deployed for the prompt admission, rapid transit and it should be ensured by the authorities that Xrays, blood investigations and all other investigations of the patients will be carried out without harassment.
- New infrastructure should be made available immediately for the management of covid. The number of ventilators should be increased, high-flow oxygen lines should be installed.
The actual condition of the number of vacant beds displayed on the health ministry website should be made public.
Above all, the ‘burden’ of covid alongside already existing morbid diseases cannot be tackled with old equipment. We feel that new infrastructure can be made available for covid in our state as health funds allotted for our state are more than other states, but it needs to be done immediately. And Central Government must allocate fund for the same.
Becauase any delay in these measures will cause dreadful consequences.