গত 27 শে মার্চ এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালকে রাতারাতি COVID এক্সক্লুসিভ ঘোষণা করা হয় এবং বেশিরভাগ সিনিয়ার ডাক্তারদের বাঘা যতীন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফলে দুটো সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমত, লোকবলের অভাব। দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ 24 পরগনার বিপুল সংখ্যক প্রান্তিক মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের হয়রানি।
বাঙ্গুর শুধুমাত্র হাসপাতাল নয়, চিকিৎসাশিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বটে। ফলত যেটা দাড়ায় যে, পুরোদস্তুর নতুন এক পরিস্থিতিতে সামনের সারিতে দাড়িয়ে লড়াই শুরু করেন মূলত জুনিয়র ডাক্তাররা ও সংখ্যায় অপ্রতুল কিছু সিনিয়র ডাক্তার।পরিকাঠামোর অভাব,অভিজ্ঞতার অভাব, সঙ্গে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব তো ছিলই। গত তিনমাস যাবৎ এই অসম লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এর ফলে তাদের ডাক্তারি শিক্ষা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার সাথে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই সমস্যার সুরাহা চেয়ে গত ১৯ শে জুন জুনিয়র ডাক্তাররা সুপারের কাছে আবেদন জানালে তিনি সরাসরি জানান, এ ব্যাপারে তিনি অপারগ। কারণ, এটা ওপর মহলের আদেশ। এরপর যথাক্রমে আবেদন জানানো হয় ডিএমই , ডিএইচএস, এমনকি হেল্থ সেক্রেটারিকেও (WBDF-এর মধ্যস্থতায়)।
কিন্তু সমাধান আসে না। কারণ, সরকারের বিশ্বাসভাজন মন্ত্রী চান বাঙ্গুর এভাবেই থাকুক। এই গিমিক হয়ত ভোটের বৈতরণী পার করার রাস্তা (লক্ষ্মীলাভের রাস্তাও)। ফলে, ডাক্তারদের কথা তো ছেড়েই দিন, মানুষের ভোগান্তি হলে হোক। এই অবস্থায় আন্দোলন ছাড়া রাস্তা ছিল না। গত ২রা জুলাই আমরা আবার সুপারের কাছে আমাদের দাবী সনদ জমা দি। কিন্তু এক সপ্তাহের ওপর অপেক্ষা করেও কোনো উত্তর না পাওয়ায় ১১ ই জুলাই আমরা অবস্থান বিক্ষোভে বসি। এর পর থেকেই কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রমাগত হুমকি আসতে থাকে। তার মধ্যে ক্যারিয়ার নষ্ট থেকে শুরু করে গ্রেপ্তার সবই রয়েছে। এর পর আন্দোলন ভাঙার জন্য কিছু জুনিয়র ডাক্তারকে রাতারাতি পিজিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, বাঙ্গুর ডিউটি করা থেকে বিরত রাখা হয় এবং পিজিতে যোগদান না করলে সাসপেনশন ও মাইনে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের সংখ্যা মেডিক্যালের তুলনায় খুবই কম ও বেশিরভাগই অন্য রাজ্যের পড়ুয়া। ফলে চাপ তৈরি হচ্ছে।
তাই সকলের কাছে আবেদন আন্দোলনকারীদের পাশে দাড়ান। মানুষের পাশে দাড়ান। সংখ্যায় কম হলেও আন্দোলনকারীরা তদ্বির নয় সংগ্রামের মাধ্যমেই নিজেদের দাবি আদায়ে অনড়।
#unlock mrbh