An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

ব্যথার বাণী -২

IMG_20201129_081530
Dr. Pranesh Mondal

Dr. Pranesh Mondal

Physical Medicine & Rehabilitation Specialist
My Other Posts
  • November 29, 2020
  • 8:12 am
  • 4 Comments

“কারণ তো আপনার বাড়িতেই লুকিয়ে…মনে হচ্ছে কিচেনের জন্যই এসব হচ্ছে!”

কথা গুলো শুনে বেশ অবাকই হলেন অলোকবাবু। পাশ থেকে ওনার স্ত্রী রিনা দেবী কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে নিচু গলায় ধমকের সুরে বললেন, “কতবার তোমাকে বলেছিলাম…তুমি তো আর শুনলেই না! বাস্তুশাস্ত্র মেনে কিচেনটা অগ্নি কোণে করলে তো আর এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হত না!”

অলোকবাবু বেশ চিন্তায় পড়লেন। তিনি কি ডাক্তার দেখাতে এসে, শেষে জ্যোতিষীর পাল্লায় পড়লেন? না না.. তা কি করে হবে…তিনি তো ভালো করে খোঁজ খবর নিয়েই এসেছেন এই পেইন ফিজিশিয়ানের কাছে! তাহলে কি কোনোভাবে স্ত্রীর রান্নার সুখ্যাতির কথা জেনে গেছেন? চেহারা দেখে তো এই শেষ বয়সেও ডাক্তারবাবুকে বেশ খাদ্যরসিকই মনে হচ্ছে!

কিন্তু সেই রান্না তো তিনি নিজেই এখন খেতে পাচ্ছেন না। রিনা দেবীর ডানদিকের কাঁধ থেকে কনুই অব্দি অসহ্য ব্যথা, খুন্তি তো ধরতেই পারছেন না এখন। সমস্যাটা অবশ্য বেশ কয়েক বছর ধরেই লেগে আছে। নতুন বাড়িতে আসার পর থেকে সেটা আরও বেশি করে হচ্ছে। আগেও অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে, কনুইয়ে দু-তিনবার ইনজেকশন, হাতের ব্যায়াম কিছুতেই কিছু হয় না।

ইনজেকশনের পর কিছুদিন ব্যথা কম থাকে, কিন্তু তারপর আবার হয়। এক একদিন তো সন্ধ্যের দিকে এত ব্যথা হয় যে দু-তিনরকম পেইনকিলার খেয়েও কমে না। এখন তো শুধু কনুই না, কাঁধের ব্যথাও শুরু হয়ে গেছে।

অলোকবাবুর সম্বিৎ ফিরলো ডাক্তারবাবুর গম্ভীর গলার শব্দে, “মন দিয়ে শুনুন…ঘরের কিছু জিনিস পরিবর্তন করতে হবে…না হলে ব্যথা আবার ঘুরে ফিরে আসবে!”

অলোকবাবু এবার না বলে থাকতে পারলেন না, “বলছিলাম কি…ডাক্তার বাবু আপনারাও এত পড়াশুনা করে বাস্তু মানেন?”

ডাক্তারবাবু কিছু একটা বলতে গিয়ে হঠাৎ থেমে গেলেন।

অলোকবাবু এদিকে বলে চললেন, “কিন্তু তাই যদি হবে তাহলে আমার কব্জির ব্যথা হল কেনো? যেদিন বাড়িতে থাকি ভালো থাকি, আর অফিসে গেলেই সেদিন ব্যথা খুব বেড়ে যায়।”

কথাটা শুনেই রিনা দেবী আঁতকে উঠলেন,”তোমার কব্জিতে ব্যথা বলো নি তো?”

–“তুমিই সারা দিনরাত এতো ব্যথা ব্যথা করে যাও যে আমি আর বলার সময় পাই কোথায়? সে আমার একটু আধটু ব্যথা থাকলেও আমি সহ্য করে নেবো। আগে তোমারটা দেখ…”

রিনা দেবী রেগেমেগে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু ডাক্তারবাবু জোর করে থামালেন, “ঝগড়া ঘরে গিয়ে করবেন। আমার অনেক রোগী এখনও বাইরে অপেক্ষা করছে…আমার কথাগুলো এবার মন দিয়ে শুনুন। দুজনের ব্যথাই নির্মূল হবে।”

এতে কাজ হল, দুজনেই এবার চুপ করে বসে ডাক্তারবাবুর দিকে মনোযোগ দিলেন।

–“প্রথমে রিনা দেবীর কথায় আসি। আপনি কতক্ষণ রান্না করেন? আর আপনার ওভেনের উচ্চতা কি খুব বেশি?”

–“আসলে আমি তো লম্বা নই, তাই আমার কাছে একটু উঁচুই মনে হয়, স্লাবটা একটু নিচু হলে সুবিধা হত। তাও আমার অতটা অসুবিধা হত না। কিন্তু লকডাউনে ছেলে বাড়ি আসার পর ওর পছন্দমত রান্না করতে গিয়ে কড়াইটা পাল্টাতে হয়েছে। এই নতুন কড়াইটা ওভেনে বসালে বেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে।”

–“তাহলে তো আপনি আসল কারণ ধরেই ফেলেছেন। কব্জি-কনুই-কাঁধ সবই রান্না করার সময় খুব বাজেভাবে থাকে, মানে কোনো জয়েন্ট খুব বেশি ফ্লেক্সড, আবার কেউ খুব বেশি এক্সটেন্ডেড। আর খুব বেশিক্ষণ এভাবে থাকলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাড়ের সাথে লেগে থাকা টেন্ডনের অংশগুলো, যার দ্বারা মাংসপেশি হাড়ের সাথে আটকে থাকে। তাই আপনাকে এই উচ্চতা যেভাবেই হোক কমাতে হবে…তবেই ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।”

অলোকবাবু এর মধ্যে বলে উঠলেন, “কনুইয়ের ব্যথাটা টেনিস এলবো…সেটা আগের ডাক্তার বাবুরাও বলেছেন…কিন্তু কাঁধের ব্যথাটা? ওটা কি ফ্রোজেন শোল্ডার?”

–“কাঁধের ব্যথা মানেই ফ্রোজেন শোল্ডার…এটা ভাবা একদমই ঠিক না। অনেক কিছুই হতে পারে, তবে ওনার বাইসিপিটাল টেণ্ডিনাইটিস হয়েছে। আর এর কারণও লুকিয়ে আছে ওই একই জায়গায়।”

–“সে তো বুঝলাম, কিন্তু আমার কব্জির ব্যথার কারণটা এবার বলুন।”

ডাক্তারবাবু ভালো করে পরীক্ষা করে বললেন, “আপনাকে অফিসে কম্পিউটার ওয়ার্ক করতে হয়?”

–“হ্যাঁ, ওটাই তো বেশি করতে হয়।”

–“তাহলে মাউস রাখার জায়গাটাও তো ঠিক মত রাখতে হবে!”

কথাটা শুনেই অবাক চোখে তাকিয়ে উঠলেন অলোকবাবু। তারপর বললেন, “ডাক্তারবাবু, আপনি তো দেখছি সত্যিই জ্যোতিষী! হাত দেখেই সব গড়গড় করে বলে দিলেন। আসলে আমাদের তো প্রচুর বিল মেলাতে হয়, তাই টাইপ করার থেকে মাউসের কাজই বেশি। আর এই লকডাউনের জন্য এত ফাইল জমে ছিল যে সেগুলো টেবিলে রাখার পর আর মাউসটা ঠিক মত রাখার জায়গা পাওয়া যায় না, ফাইলের ওপরই কোনরকমে বসিয়ে কাজ চালাই।”

–“আর ওই জন্যই তো আপনার ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুলটা বেশি বেঁকে থাকে… যার জন্য ডি-ক্যুয়েরভ্যানস ডিজিজ হয়েছে।”

মন্ত্রমুগ্ধের মত কথাগুলো শুনতে শুনতে অলোক বাবু মনে মনে কুর্নিশ জানালেন ওনার অফিসের সহকর্মীকে, যার কথা শুনে তিনি এই অভিজ্ঞ ফিজিয়াট্রিস্টের শরণাপন্ন হয়েছেন। এরপর হঠাতই অলোকবাবু কাঁচুমাচু করে বলে ওঠেন, “স্যার আমার ছেলেকে যদি একবার দেখে দেন…ওর অ্যাপয়েন্টমেন্টটা করা হয় নি।”

ডাক্তারবাবু কিছু বলার আগেই ওনার অ্যাটেনডেন্ট এসে ধমক দিয়ে বললো এরকম নিয়ম নেই। কিন্তু অলোকবাবু নাছোড়বান্দা। শেষে ডাক্তারবাবু ছেলেকে তাড়াতাড়ি ভিতরে নিয়ে আসতে বললেন।

বেশ গোলগাল চেহারার উনিশ কুড়ি বছরের একটা ছেলে, চোখে চশমা, ধীর পায়ে ভিতরে প্রবেশ করলো। কিছু বলার আগেই ওর বাবা মা শুরু করে দিলেন বলতে। পা থেকে মাথা কিছুই প্রায় বাকি রাখলেন না। ডাক্তার বাবু সব শুনে যেটা বুঝলেন যে, ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, তাই সারা দিনরাতই ল্যাপটপের সামনে পড়াশুনা করে যায়। কিন্তু তার এখন ঘাড় থেকে পিঠের দিকে অসহ্য ব্যথা। বেশিক্ষণ কম্পিউটারের সামনে থাকলে চোখ-কপালেও ব্যথা হয়। সারারাত নাকি ঘুম হয় না, তাই ঘুম থেকে উঠতেও দুপুর হয়ে যায়। তার সাথে সব কাজকর্মও কয়েকঘণ্টা করে পিছিয়ে যায়।

ডাক্তারবাবু পাশের বেডে শুতে বলে ভালো করে পরীক্ষা করে দেখলেন। তারপর কানের কাছে গলা নামিয়ে চুপি চুপি বললেন, “উঁহু, সারা দিনরাত ধরে এত পড়াশুনা তো ঠিক না!…পাবজিও ব্যানড… কি যে করা যায়!”

আড়চোখে বাবা মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে খুব চাপা গলায় বলে উঠলো সে, “কেন ওয়েব সিরিজ আছে তো! কাউকে বলবেন না কিন্তু…ডার্ক সিজন থ্রী টা শেষ করলাম কাল রাতে। আসলে এসব এখন ট্রেন্ড…নাহলে সবাই ব্যাকডেটেড বলবে!”
___________________________

‘স্যাকরার ঠুকঠাক’ -এ যতই ধৈর্য, অধ্যবসায়, শৈল্পিক নৈপুণ্য থাকুক না কেনো, আমরা ‘কামারের এক ঘা’-তেই বিশ্বাসী, এবং ওটা হলেই শুধু আমাদের ডাক্তারের কথা মনে পড়ে!

কি একটু বুঝিয়ে বলা দরকার? তাহলে তো আপনাকে জানতেই হবে ‘কিউম্যুলেটিভ ট্রমা ডিসঅর্ডার’ (সি.টি.ডি.) বা ‘রিপিটিটিভ স্ট্রেইন ইনজুরি’ বা ‘ওভারইউজ ইনজুরি সিনড্রোম’ সম্পর্কে। যেটা আপনার দীর্ঘ বা স্বল্প মেয়াদী ব্যথার পিছনে একটা বড় কারণ। পরিসংখ্যান বলছে পেশাগত ইনজুরির ৫৬-৬৫% হয় কিউম্যুলেটিভ ট্রমার জন্য। রিপিটিটিভ ওয়ার্ক (যেমন: টাইপ করা, কাপড় কাচা, রান্না করা ইত্যাদি) বা একটানা দীর্ঘক্ষণ ধরে করা কাজ, অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রমের কাজ, কম্পন মেশিনের কাজ, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অস্বাভাবিক অবস্থানে অনেকক্ষণ রাখা, মানসিক সমস্যা… এসব ক্ষেত্রে এই রোগ দেখা যায়।

ঘাড় ব্যথা, কোমরে ব্যথা থেকে শুরু করে কাঁধ, কনুই, কব্জি, তালু কিছুই বাদ যায় না এই রোগে। কাঁধে যেমন ‘রোটেটর কাফ টেণ্ডিনোপ্যাথি, বাইসিপিটাল টেণ্ডিনাইটিস, ইম্পিঞ্জমেন্ট সিনড্রোম’ হতে পারে; সেরকম কনুইয়ে ‘টেনিস বা গলফার্স এলবো’ এবং কব্জি/হাতের তালু তে ‘ডি-ক্যুয়েরভ্যানস টেনোসাইনোভাইটিস, ট্রিগার ফিঙ্গার, হ্যান্ড-আর্ম ভাইব্রেশন সিনড্রোম’ হতে পারে। আবার ‘এন্ট্রাপমেন্ট নিউরোপ্যাথি’ বা স্নায়ু পথে চাপ সৃষ্টিকারী রোগ যেমন ‘কারপাল টানেল সিনড্রোম, কিউবিটাল টানেল সিনড্রোম, থোরাসিক আউটলেট সিনড্রোম’ …এগুলির জন্যও _সি.টি.ডি_ অনেকাংশে দায়ী।

এর জন্য যদি সত্যি কাউকে দায়ী করতে হয়, তাহলে বলবো দোষ দিন আপনার ব্যস্ততাময় জীবন থেকে ‘বস্তাপচা’ সাম্যবাদী সত্বাকে ছেঁটে ফেলার ভ্রান্ত সিদ্ধান্তকে… কিংবা কষ্টকর, দমবন্ধ করা কাজের পরিবেশকে মুখ বুজে মেনে নেওয়ার ‘ভীরু’ মানসিকতাকে। কারণ ‘বিদ্রোহ’, ‘কর্মবিরতি’ এগুলোর প্রথম ধাপ এভাবেই শুরু হয়!

না না.. কোনো রাজনীতির কথা না, এগুলো একান্তই আপনার শরীরের ভাষা! অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সব পেশীর মধ্যে সাম্যাবস্থা বজায় না রাখলে ব্যথামুক্তি কোনোভাবেই সম্ভব না। আর এই ‘সাম্যবাদ’ -এর পাঠ নিতে গেলে আপনাকে জানতেই হবে ‘আর্গনোমিকস’। এটি হল বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে কাজের পরিবেশ এবং কাজে ব্যবহৃত বস্তু সমুহের গঠন এবং সেই সাথে ব্যবহারকারীর অঙ্গভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আপনার কর্মক্ষেত্র যেন আপনার শরীরের ক্ষতির কারণ না হয় তার জন্য কি করা দরকার সে সম্পর্কে এখানে বর্ণনা থাকে।

এত ‘তত্ত্বকথা’ বলেও যদি আপনি প্রতিকারের ‘দিশা’ দেখাতে না পারেন, তাহলে আশাহত হয়ে ‘মানুষ’ একদিন আপনার পাশ থেকে সরে যাবেই, মানে সেই চিকিৎসকের কাছে রোগী আর যাবেন না, কারণ দিনের শেষে সবারই তো লক্ষ্য থাকে ‘যন্ত্রণামুক্ত জীবন’! আর এই প্রতিকারের জন্য ফিজিয়াট্রিস্ট বা পেইন ফিজিশিয়ানরা ওষুধ ইনজেকশন, ব্যায়াম-এর পাশাপাশি আর্গনোমিক ইন্টারভেনশনের ওপরও জোর দেন। এক্ষেত্রে রোগী বা রোগীর বাড়ির লোকের সচেতনতা খুবই জরুরী।

ঘরে রান্নার কাজ থেকে পার্লারে রূপচর্চার কাজ, নর্দমার জঞ্জাল সাফ থেকে দেশের দুর্নীতি সাফ, কিংবা পরীক্ষার হলে পাতার পর পাতা লেখা থেকে শুরু করে অফিসে কাজের ফাঁকে ভাতঘুম…সব কাজেই আপনাকে কিছু নিযমকানুন মেনে চলতেই হবে। প্রথমে, যাঁদের বসে কাজ করতে হয় তাঁদের দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে না থেকে মাঝে মধ্যে স্ট্রেচিং বা হাঁটাচলা করতে হবে। কনুই অত্যধিক ভাঁজ করে বা কব্জি অত্যধিক ফ্লেকশন বা এক্সটেনশন করে, কিংবা ফোরার্ম দীর্ঘক্ষণ সুপাইনেটেড বা প্রোনেটেড করে রাখা একদমই ঠিক না। রিপিটিটিভ ওয়ার্ক যাঁদের করতে হয়, তাঁদের হাত দেহের পাশে রিল্যাক্সড অবস্থায় রাখা উচিত এবং কনুই ৭০-৯০ ডিগ্রীর মধ্যে ভাঁজ করে রেখে কাজ করা উচিত। কব্জি বারবার রেডিয়াল বা আলনার দিকে বিচ্যুত করা যেমন ঠিক নয়, তেমনি কনুই দীর্ঘক্ষণ বা বারবার মাথার ওপরে তোলাও উচিত নয়। দীর্ঘক্ষণ একভাবে মুঠো করে রাখা বা দুই আঙ্গুলের ফাঁকে কিছু ধরে রাখার কাজ এড়িয়ে চলাই ভালো।

এবার আসা যাক যাঁরা কম্পিউটার নিয়ে কাজ করেন তাঁদের ওয়ার্কস্টেশনের কথায়। ওয়ার্কস্টেশনের উচ্চতা কিন্তু এখানে খুব গুরত্বপূর্ণ। কারণ সামান্য পরিবর্তনের জন্য ঘাড়, কাঁধ, কনুই, কব্জির স্বাভাবিক অবস্থানের ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। উচ্চতা খুব বেশি হলে যেমন কাজ করার সময় কাঁধ বা দুই বাহু ওপরে তুলে রাখতে হয় ও কব্জি বেশি বেঁকিয়ে রাখতে হয়, তেমনি উচ্চতা কম হলে ঘাড় বা মাথা নিচু করতে হয় এবং শিরদাঁড়া অনায়াসেই সামনের দিকে বেঁকে যায়। যার প্রভাব ওই অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পড়ে এবং ব্যথাসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।

তাই কম্পিউটার মনিটরের ওপরের লেভেল এবং চোখের লেভেল যাতে একই থাকে সেটার ব্যবস্থা করতে বলা হয়, এতে চোখ, ঘাড় বা কাঁধের ওপর চাপ পড়ে না। মনিটর থেকে শরীরের দূরত্ব দেড় থেকে দুই ফুটের মধ্যে হতে হবে (২০-৪০ ইঞ্চি আদর্শ), এর থেকে কম হলে যেমন চোখের ওপর চাপ পড়বে তেমনি দূরত্ব বেশি হলে মাথা ও শিরদাঁড়া সামনের দিকে এগিয়ে আনতে হবে ফলে শিরদাঁড়ার ওপর স্ট্রেইন পড়বে।

কিবোর্ড ও মাউসের উচ্চতা এমন রাখতে হবে যাতে কনুই ৯০ ডিগ্রী ভাঁজ হবে এবং ফোরার্ম মেঝের সমান্তরালে থাকবে।

চেয়ারের ব্যাক রেস্ট এমন হওয়া উচিত যাতে সেটা শিরদাঁড়ার লাম্বার কার্ভকে (লোয়ার ব্যাক) সাপোর্ট দেবে, নতুবা পাতলা তোয়ালে রোল করে কোমরের পিছনে রাখতে হবে।

বসার সময় পায়ের পাতা মেঝের উপর বা ফুটরেস্টে এমনভাবে রাখতে হবে যাতে হাঁটু ৯০-১০৫ ডিগ্রী ভাঁজ করা অবস্থায় থাকতে পারে।

চেয়ারের সিটের সাইজ এমন হওয়া উচিত, যাতে হাঁটুর পিছনের খাঁজ থেকে সিটের সামনের অংশের দূরত্ব ১-৪ ইঞ্চির মধ্যে থাকে। এই মধ্যবর্তী দূরত্ব বেশি হলে যেমন পায়ের উপরাংশের পেশীতে ব্যথা হতে পারে, তেমনি কম হলে পায়ে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

এর সাথে যাঁদের ফোনে কথাও বলতে হয় অনেকসময় ধরে, তাঁদের অবশ্যই হেডফোন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী।

দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করেন যাঁরা তাঁদের চোখের সমস্যাও হয়, যার পোশাকি নাম ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ । এক্ষেত্রে ঘাড়, কাঁধ, মাথা ও চোখে ব্যথার পাশাপাশি ঝাপসা দৃষ্টি, চোখ শুকিয়ে গিয়ে জ্বালা করার সমস্যাও দেখা যায়। এরজন্য মনিটরের উচ্চতা ও দূরত্ব সংশোধনের পাশাপাশি আরো কয়েকটা জিনিস খেয়াল রাখতে হয়। যেমন মনিটরের ঠিক ওপরে কোনো তীব্র লাইট বা লাইটসোর্স (যেমন: জানালা) যেন না থাকে, প্রয়োজনে অ্যান্টিগ্লেয়ার স্ক্রীন ব্যবহার করতে হতে পারে। রেফারেল মেটেরিয়াল কিবোর্ডের ওপরে ও মনিটরের নিচে রাখতে হবে, অথবা মনিটরের পাশে ডকুমেন্ট হোল্ডার রাখতে হবে। টানা দুঘন্টা কাজ করার পর পনেরো মিনিট চোখ কে রেস্ট দিতে হবে অথবা প্রত্যেক ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ড ধরে দূরে তাকিয়ে থাকতে হবে। চোখ যাতে শুকিয়ে না যায় তার জন্য বারবার চোখের পলক ফেলতে হবে। তবে এর পাশাপাশি চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নিতে হতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রণার সাথে দিনযাপন করছেন যাঁরা বা যাঁদের জীবনে ব্যথা ঘুরে ফিরে আসে, তাঁরা সত্যিই কি এই চারপাশের ‘ছোটোখাটো’ ত্রুটি-বিচ্যুতির ওপর মনোযোগী? তাঁরা কি এই ত্রুটিগুলি সংশোধনের তাগিদ সত্যিই অনুভব করেন? ব্যথার উপশমের জন্য এক্ষেত্রে একজন ফিজিয়াট্রিস্টের থেকেও বাড়ির লোকের দায়িত্ব কি অনেক বেশি নয়?

মেসেজ সঠিক জায়গায় সঠিক ভাবে পৌঁছলেই তা সার্থকতা লাভ করে। আর তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার, নাহলে ব্যথার বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদেই মরবে!

PrevPreviousমারীর দেশের শত্রুশিবির
Nextআমার ডাক্তারি জীবনের ভুলত্রুটিNext

4 Responses

  1. জয়দেব মাহাত says:
    November 29, 2020 at 9:24 am

    খুব সুন্দর বাস্তবচিত্র সমন্বিত শিক্ষা ও সচেতনতামূলক লেখা।

    Reply
  2. SWARUP BAGCHI says:
    November 29, 2020 at 9:41 am

    আমি দেখতে চাই আপনাকে, যদি সাহায্য করেন।

    Reply
  3. দীপঙ্কর ঘোষ says:
    November 30, 2020 at 10:43 pm

    ভালো

    Reply
  4. Partha Das says:
    December 2, 2020 at 12:31 am

    দারুন দারুন। ব্যাখ্যা ও ভালো লাগলো। অবশ্যই পাঠকেরও দায়িত্ব থাকে।

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

করোনা এমন করো না

April 12, 2021 No Comments

করোনা এমন করো না এখন এ দেশে রাষ্ট্রের ভোট চলছে! করোনা এমন করো না বদ্যিরা ছাড়া তোমার কথা কে বলছে? করোনা এমন করো না সব

ধিক

April 12, 2021 No Comments

। ধিক!! আঠারোয় মেরে দিলে? ভোট বুঝি এমনই বালাই? যে ছেলেটা মরে গেলো আমারই রক্ত সে, পুত্র বা ভাই। বি জে পি করেই যদি, এ

দ্বিতীয় ঢেউ এর দিনগুলি ৭

April 12, 2021 No Comments

মহামারী বিষয়ে লোকজন এখনও ডিনায়াল পর্যায়ে রয়েছে। করোনা যে নিজের হতে পারে মেনে নিতে পারছে না। এক ভদ্রলোক চেম্বারে ঢুকে গুছিয়ে বসলেন, ‘ডাক্তারবাবু, একদম প্রথম

ভালো মন্দ

April 11, 2021 No Comments

দুই এক কুড়ি একুশ। এখন করোনাকাল- বাস ট্রেন সবই প্রায় বন্ধ। অথচ অফিস যেতেই হবে। আজও ফিরিঙ্গিবাজার মোড়ে কাকলি অপেক্ষা করছে। যদি কোনও রিজার্ভ অটো

বিষ

April 11, 2021 No Comments

আর্যতীর্থের কবিতা।

সাম্প্রতিক পোস্ট

করোনা এমন করো না

Smaran Mazumder April 12, 2021

ধিক

Arya Tirtha April 12, 2021

দ্বিতীয় ঢেউ এর দিনগুলি ৭

Dr. Aindril Bhowmik April 12, 2021

ভালো মন্দ

Dr. Dipankar Ghosh April 11, 2021

বিষ

Dr. Sumit Banerjee April 11, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

310824
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।