সন ১৯৭৯। আমরা এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষা পাশ করলাম।
ভয়ঙ্কর এক স্বপ্ন দেখলাম অ্যাদ্দিন বাদে। স্বপ্নে দেখলাম সুদূর অতীতের সেই পরীক্ষায় ঢালাও দুর্নীতি হয়েছে। কোর্টে কেস করেছে যারা পাশ করেনি তারা। সেই কেস ভায়া হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টে চলে গেছে।( সে আমলে এই জাতীয় দুর্নীতি হত না।)। তারপর দীর্ঘ এত কবছর পর সুপ্রিম কোর্ট বলছে, সেই পরীক্ষা বাতিল। সবাইকে নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে ডিগ্রি নিতে হবে। ঘুমের মধ্যে এই শীতেও ঘেমে উঠলাম।
কেন এই স্বপ্নটার কথা বলছি, বুঝিয়ে বলি।
ইদানীং প্রশ্ন এটাই, শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হলে, সবারই কি বাতিল হবে? যোগ্য অযোগ্য(মানে টাকা দেওয়া ছাড়াও সতেরো রকমের উপায়ে দুর্নীতি করে যাতা চাকরি পেয়েছে) সবার চাকরি চলে যাবে?
কিন্তু অন্য দিক দিয়ে ভাবলে সুপার নিউমারারি পোস্ট তৈরি করে যে চোর মন্ত্রীসভা অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাঁচাতে চেয়েছিল, সেই অযোগ্যদের সত্যিই বেছে নেওয়া সম্ভব? যখন নিখুঁত ভাবে প্রমাণ মোছা হয়েছে।
প্রমাণ লোপের এই কাজটা মুখ্য সমেত এই চোরগুলো খুব ভালো পারে। পেরেওছে।
আরজিকরে আমার মেয়েকে মেরে প্রমাণলোপের কাজটা এই চোর খুনিরা আবারও প্রায় নিখুঁত ভাবে করেছে। সবাই জানে।
সে ক্ষেত্রে, কোনওই প্রমাণ না থাকলে, সমস্ত শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকে না।
প্রথমে যে স্বপ্নের কথা বলে শুরু করেছিলাম সেখানে ফিরি। এই এতদিন বাদে নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করা সম্ভব আমার পক্ষে? পরিষ্কার উত্তর হচ্ছে, ‘না’।
একজন নতুন পরীক্ষার্থী যা জানে আমি নিশ্চয়ই তা সবটা জানি না। অবশ্য আমিও অভিজ্ঞতা দিয়ে এমন অনেক কিছু জানি যা তারা জানে না।
কিন্তু নতুন করে অ্যানাটমি ফিজিওলজি থেকে শুরু করে সব সাবজেক্ট পরীক্ষা দিয়ে এমবিবিএস পাশ করা আমার পক্ষে অসম্ভব।
আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না, চাকরি বাতিল হওয়া (যদি হয়) মানুষগুলোর কী হবে!
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, এই প্রমাণ লোপ করা সুপারনিমারারি কায়দার প্রবক্তা চোর মন্ত্রীসভাটা মুখ্য সমেত ঘাড়ধাক্কা খেয়ে বাতিল হবে না কেন?