প্রঃ – ২০১৯ নভেল করোনা ভাইরাস কি ?
উঃ – ২০১৯ নভেল করােনা ভাইরাস বা ২০১৯ এনকভ একটি নতুন ভাইরাস যা চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম চিহ্নিত করা গেছে। এটিকে নভেল বলা হচ্ছে কারণ এটি পূর্বে দেখা যায় নি।
প্রঃ -২০১৯ নভেল করোনা ভাইরাসের উৎস কি?
উঃ – ২০১৯ নভেল করােনা ভাইরাস সংক্রমণের সঠিক উৎস চিহ্নিত করা যায়নি। করােনা ভাইরাস একটি বড় ভাইরাস পরিবারের অংশ, যা কিছু মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটায় এবং বাকি কিছু জীবদেহে ছডিয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে চীনের উহানে এই রােগের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সামুদ্রিক খাদ্য এবং পশুবাজারের নিবিড় সংযােগ আছে, এর থেকে ভাবা হচ্ছে জীবজগত থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
প্রঃ নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গ গুলি কি?
উঃ ২০১৯ এনকভের বর্তমান উপসর্গগুলি হল তীব্র জ্বর, সর্দি-কাশি এবং স্বাসকষ্ট।
প্রঃ ভারতে কারোর কি সংক্রমণ দেখা গেছে?
উঃ না, এখনও পর্যন্ত ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় সুনিশ্চিত ভাবে কোন রােগসংক্রমণের খবর নেই। নজরদারির মাধ্যমে সন্দেহভাজন রােগীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
নভেল করোনা ভাইরাস
চীন থেকে আগত পর্যটকদের জন্য নির্দেশিকা
নিজেকে এবং পরিবারকে বাঁচাতে আপনার অবশ্যই জানা উচিত
চীনে করােনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিযেছে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। করােনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে জটিল উপসর্গ যেমন মিডিল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (মার্স) -কভ এবং সিভিয়্র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স-কভ)ও থাকতে পারে।
রােগের সাধারণ উপসর্গগুলি কি কি?
১. কাশি
২. জ্বর
৩. শ্বাসকষ্ট
নিজেকে এবং অন্যদেবও কিভাবে বােগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবেন?
যদি আপনি গত ১৪ দিনের মধ্যে চীনে গিয়ে থাকেন বা কোনও এনকভ রােগীর সংস্পর্শে এসে থাকেন তাহলে নিম্নলিখিত নির্দেশগুলি মেনে চলুন
• দেশে ফেরার পর ১৪ দিন গৃহবন্দী থাকুন।
• আলাদা ঘরে ঘুমান।
• পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সীমিত যােগাযােগে থাকুন এবং বাইরের লােক এড়িয়ে চলুন।
• হাঁচি-কাশির সময় নাক ও মুখ ঢাকুন।
• কারাের সর্দি-কাশি বা ফ্লুয়ের মত উপসর্গ থাকলে তাকে এড়িয়ে চলুন। (কমপক্ষে একমিটার দূরত্ব বজায় রাখুন।)
নভেল করোনা ভাইরাস
যে প্রশ্নগুলি প্রায়শঃ উঠে আসে
প্রঃ – চীনের ওহান বা অন্য দেশ যেখানে এই রােগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে সেখানে ভ্রমণে যাওয়া কি নিরাপদ?
উঃ – অপ্রয়ােজনে চীনে যাবেন না, যদি যেতেই হয় নিচের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
• ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।
• নিজের শরীরের দিকে নজর রাখুন।
• অসুস্থ হলে শীঘ্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
• বিমানে ভ্রমণকালে অসুস্থ বােধ করলে বিমানকর্মীদের আপনার অসুস্থতায় বিষয়ে জানান এবং তাদের থেকে মাস্ক চেয়ে নিন।
• বিশদে জানতে ভ্রমণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ওযেবসাইট দেখুন।
প্রঃ এর চিকিৎসা কি?
উঃ 2019 নভেল করােনা ভাইরাস সংক্রমণের কোন অ্যান্টিভাইরাল (ভাইরাসপ্রতিরােধী) চিকিৎসা এখনও নেই, উপসর্গগুলির উপশমে পরিষেবা দিতে হবে ।
প্রঃ কি কবে এই ভাইরাস ছড়ায়?
উঃ যেহেতু এই ভাইরাসটি নতুন, ঠিক কিভাবে এই ভাইরাস ছড়ায় তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। সম্ভবত এই ভাইরাসের উৎস কোনাে প্রাণী। কিন্তু বর্তমানে তা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে। এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি, ২০১৯ নভেল করােনা ভাইরাস কিভাবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে অর্থাৎ যেভাবে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা অন্যান্য সংক্রমণের ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়া ছড়ায় সেইভাবে এই ভাইরাস ছড়ায়।
প্রঃ ২০১৯ নভেল করােনা ভাইরাসের প্রতিবােধে ভারত সরকার কি করছে?
উঃ নিউ দিল্লীর এন. সি. ডি. সি. (NCDC) তে ভারত সরকার ২৪ x৭ হেল্পলাইন চালু করেছে। ভারত সরকার পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজর রাখছে এবং দেশের সবকটি রাজ্য যাতে এই ভাইরাস মােকাবিলায় সদাপ্রস্তুত থাকে তা নিশ্চিত করেছে । যেহেতু এটি একটি আপদকালীন এবং পরিবর্তনশীল অবস্থা, ভারত সরকার এই সংক্রান্ত সাম্প্রতিক তথ্য জানাতে থাকবে।
প্রঃ ২০১৯ নভেল করোনা ভাইরাসের কোনাে ভ্যাকসিন আছে?
উঃ বর্তমানে নভেল করােনা ভাইরাসের কোনাে ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক নেই।
প্রঃ কেমনভাবে আমি নিজেকে রক্ষা করব?
উঃ যেহেতু, ২০১৯ নভেল করােনা ভাইরাসের কোনাে প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন নেই, এই ভাইরাস প্রতিরােধের সবচেয়ে ভাল উপায় হল ভাইরাসটির সংযােগে না আসা।
• একান্ত প্রয়োজন না হলে চীন বা অন্যান্য সংক্রমণ-প্রবণ দেশগুলােতে যাত্রা করা এড়িয়ে চলতে হবে।
• ব্যক্তিগত সুস্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
• বারেবারে সাবান দিয়ে হাতধােওয়া অভ্যেস করুন।
• হাঁচি ও কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখুন।
ডব্লু এইচ ও (WHO)-এর ওয়েবসাইটে (www.who.int) সংক্রামিত দেশগুলির তালিকা পাওয়া যাচ্ছে এবং এটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপডেট করা হবে।
প্রঃ যদি আমি ২০১৯ নভেল করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোনাে ব্যক্তির সংস্পর্শে আসি তাহলে আমার কি করণীয়?
উঃ সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার আঠাশদিন পর্যন্ত নিজের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখুন। নীচের লক্ষণগুলি দেখা যাচ্ছে কিনা সেদিকে বিশেষভাবে নজর রাখুন।
জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট
যদি ওপরের কোনাে লক্ষণ আপনার দেখা দেয় তাহলে সত্বর নিকটবর্তী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পরামর্শ ও চিকিৎসার জন্য যােগাযােগ করুন। স্বাস্থ্যকর্মীকে আপনার সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার সম্পর্কে বিশদে জানান।
প্রঃ আমার কি ২০১৯ নভেল করােনা ভাইরাসের পরীক্ষার প্রয়ােজন?
উঃ যদি তীব্র শ্বাসকষ্ট ও জ্বর আসে, কাশি ও শ্বাসকষ্ট থাকে, তাহলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানে যােগাযােগ করুন এবং ডাক্তারবাবুই আপনার চীনে বা এই রােগের প্রাদুর্ভাবযুক্ত দেশে ভ্রমণ বা পরীক্ষায় প্রমাণিত সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে সংযােগের নিরিখে ঠিক করবেন আপনার এই অসুখের পরীক্ষার প্রয়ােজন আছে কিনা।