অস্থিসন্ধি এবং মেরুদন্ড ছাড়াও লম্বা হাড়ের মাঝামাঝিও ব্যথা হতে পারে। এই মাঝহাড়ে ব্যথা শিশু,যুবা, বৃদ্ধ সকল বয়সেই হতে পারে। এই ধরণের ব্যথারও নানান কারণ থাকে। তবে কারণগুলো অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টের ব্যথার থেকে কিছুটা ভিন্ন।
চোট
হাড়ে চোট লেগে হাড় ভাঙলে প্রচন্ড ব্যথা হয়। তারপর ভাঙা হাড় জুড়ে গেলেও বেশ কিছুদিন ব্যথা থাকতে পারে। হাড় জুড়তে যদি দেরী হয় অথবা না জোড়ে- তাহলেও হাড়ে ব্যথা থাকতে পারে।
মেটাবলিক ডিজিজ
হাড়ের ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ কমে গেলে হাড় দূর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। আবার বাড়ন্ত বয়েসে হাড়ের সঠিক খনিজকরণ না হলে এবং ক্যালসিয়াম না জমলে হাড় নরম ও বেঁকে যেতে পারে। ব্যথাও হয়।
অষ্টিওপোরোসিস
বেশী বয়সে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুবন্ধ হওয়ার পরে হরমোনের অভাবে হাড়ের ঘনত্ব কমে গিয়ে অষ্টিওপোরোসিস হয়। অর্থ্যাৎ সারা শরীরের হাড়গুলো কমবেশী ঝাঁঝরা হয়ে দূর্বল হয়ে যায়। এতে হাড়ে ব্যথা হয়। এই দূর্বল হাড়গুলো খুব সামান্য চোটে ভেঙে যেতে পারে। মেরুদন্ডের হাড়, উরুসন্ধির হাড়, কব্জির হাড় ও কাঁধের হাড় এই ভাবে ভেঙে যেতে পারে। মেরুদন্ডের হাড় বারবার এভাবে ভেঙে ব্যথার সাথে সাথে মেরুদন্ড বেঁকেও যেতে পারে।
প্রদাহ বা ইনফেকশন
হাড়ের ভেতর প্রদাহ হয়ে পুঁজ জমে হাড়ে ব্যথা হয়। যক্ষ্মা অর্থ্যাৎ টিবি অথবা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া হাড়ে ইনফেকশন করে। এতে হাড় খেয়ে, গর্ত করে দূর্বল করে ফেলে। ব্যথা হয়। অনেক ক্ষেত্রে হাড় বেঁকে যায়। কমবয়সে হাড়ে ইনফেকশন হলে হাড়ের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে হাত-পা ছোটবড় হয়ে যেতে পারে। মেরুদন্ডের হাড়ে এরকম ইনফেকশন বিশেষতঃ যক্ষ্মা হলে পিঠে, ঘাড়ে, কোমরে ব্যথা হয়, মেরুদন্ড বেঁকে যায়, প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত হতে পারে।
অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস
শরীরের কোনো কোনো হাড়ের রক্তসঞ্চালন বেশ ক্ষীণ ও গোলমেলে থাকে। যেমন- ফিমোরাল হেড। কোনো কারণে এই ক্ষীণ রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে সেই হাড়ে খুব ব্যথা হয়।
হাড়ের টিউমার এবং ক্যান্সার
হাড়ের ভেতর সিষ্ট বা টিউমার হলে ব্যথা হতে পারে। তা থেকে হাড় দূর্বল হয়ে ভেঙে যেতে পারে (প্যাথোলজিক্যাল ফ্র্যাকচার)।
এছাড়া রক্তের এবং মজ্জার ক্যান্সার- লিউকেমিয়া বা লিম্ফোমা, মেটাস্ট্যাসিস অর্থ্যাৎ শরীরে অন্য কোথাও হওয়া ক্যান্সার রক্তনালীপথ বেয়ে হাড়ে এসে আশ্রয় নেয় এবং হাড় দূর্বল করে দেয়। সারা শরীর জুড়ে হাড়ে ব্যথা হতে পারে।