একটা বিতর্কিত মৃত্যুর ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। লিবি জিওন আঠারো বছরের এক তরুণী, ভারমন্টের বেনিংটন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মানসিক অবসাদে ভোগার জন্য কিছু ওষুধপত্র খাওয়া শুরু করেছিল। কয়েকদিন সর্দিজ্বরে ভোগার পরে নিউ ইয়র্ক স্টেট হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাকে দেখতে যায় দুজন ডাক্তার। ডা ওয়েন্সটিন স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ট্রেইনি এবং ডা স্টোন দ্বিতীয়বর্ষের। লিবির খিঁচুনি শুরু হয়। দুই ডাক্তার লিবিকে পরীক্ষা করে খিঁচুনি কমানোর জন্য পেথিডিন ইনজেকশন দেয়। অবস্থার অবনতি হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত কার্ডিয়াক এরেস্টে লিবি মারা যায়। ৫ই মার্চ ১৯৮৪ সাল।
লিবির বাবা সিডনি, তাঁর মেয়ের এই অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেন নি। রাগে দুঃখে ডাক্তার পেটাই করেন নি, হাসপাতালে ভাঙচুর করেন নি, কেবল একটি মামলা করেন। ফৌজদারি ও দেওয়ানি, দুটি আদালতেই মামলা চলে। অভিযুক্ত চিকিৎসকরা শাস্তির মুখোমুখি হলেও আদালতের শেষ বিচারে শাস্তি মকুব হয়ে যায় কারণ আদালত এটিকে ইচ্ছাকৃত অবহেলা বলে মেনে নেয় নি। গল্পটি পাঠক হিসেবে হয়তো অনেকরই পরিচিত লাগতে পারে। কিন্তু গল্পটি এখানেই শেষ নয়।
লিবির বাবা সিডনি ছিলেন প্রখ্যাত সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর একজন লেখক। মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে না পড়ে তিনি প্রায় একাই একটি ক্যাম্পেন বা প্রচার অভিযান চালিয়ে যান সুবিচারের আশায়। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে একটানা ছত্রিশ ঘন্টা ডিউটি দিয়ে ক্লান্ত ওই দুই জুনিয়র ডাক্তারের বদলে কোনো সিনিয়ার ডাক্তার যদি তার মেয়েকে দেখতো তাহলে তাঁর মেয়ে বেঁচে যেত। এই অঘটন ঘটতো না। ক্যাম্পেনেরর কি ফল হল সেটা পরে বলছি।
আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারি না যে এমন একটা উড়োজাহাজে চেপে বসেছি যার পাইলট একটানা ৩৬ ঘন্টা জেগে আছেন। তাঁর হাতে কিছুতেই সুরক্ষিত থাকতে পারে না আমার জীবন। তাই আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় “পেশেন্ট সেফটি” রুগীর সুরক্ষা।
মেডিক্যাল নেগলিজেন্স বা চিকিৎসার ইচ্ছাকৃত অবহেলা একটি সম্পুর্ণ আলাদা বিষয়। দুটোকে এক করে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। তেমনি ভাবে আনথিক্যাল প্র্যাকটিস বা অনৈতিক কাজকর্ম আরো একটি আলাদা বিষয়। প্রথমোক্তটিতে অর্থাৎ মেডিক্যাল নেগলিজেন্সে মানুষ প্রাণে মারা যায়, আর শেষোক্তটিতে ধনে।
রুগীর সুরক্ষা নামক একটি সমস্যা তুলে ধরার অৰ্থ এই নয় যে আলোচনা সেখানে শেষ হয়ে গেল। আমরা সবাই সমাধান চাই। সেই সমাধান খুঁজতে গেলে, এলোপাতাড়ি মন্তব্যই যথেষ্ট নয়। সমস্যাটির আকার, আয়তন, প্রকার – এইগুলি জানাবোঝা এবং দায় ও দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রগুলিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা একান্ত প্রয়োজন। সবাই মিলে সদর্থকভাবে চেষ্টা করে দেখা যাক।
প্রথমে দু একটি তথ্য পরিবেশন করা যাক। এটি আলোচনার পটভূমিকা হিসেবে কাজ করবে।
রুগী সুরক্ষা একটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য সমস্যা। উড়োজাহাজে সফর করলে এক মিলিয়ন একজনের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে গিয়ে ওই ক্ষতির সম্ভাবনা প্রতি তিনশো রুগীতে একজন। বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত বিমান যাতায়াত শিল্প বা পারমানবিক শক্তি শিল্পতে স্বাস্থ্য পরিষেবা শিল্পের চেয়ে সুরক্ষা বিষয়ক রেকর্ড অনেকে ভালো।
গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিস বা বিশ্বব্যাপী রোগভারের কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, ১৪তম স্থানে আছে রুগীসুরক্ষার সমস্যা। এটি পরিচিত দুটি রোগ, যক্ষা ও ম্যালেরিয়া জনিত সমস্যার দায়ভারের আয়তনের সাথে তুলনীয়। বিশ্বব্যাপী ৪২১ মিলিয়ন হাসপাতালে ভর্তির মধ্যে মোটামুটি ৪২.৭ মিলিয়ন রুগীর ক্ষেত্রে এই অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে।
উচ্চ আয় সম্পন্ন দেশগুলিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রুগীদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে এক জন এইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই অঘটন (এডভার্স ইভেন্ট)গুলি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে সেগুলির মধ্যে প্রায় ৫০% এর বেশি নিবারণযোগ্য।
২৬ টি স্বল্প ও মাঝারি আয় সম্পন্ন দেশগুলিতে গবেষণায় দেখা গেছে যে ওই অঘটনের হার ৮ শতাংশ এবং যার মধ্যে ৮৩% নিবারণযোগ্য ছিল। ওই দুর্ঘটনার ফলে প্রায় ৩০% এর পরিণতি হয়েছে মৃত্যু। সারা পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ ঘটনাগুলি ঘটেছে ওই স্বল্প ও মাঝারি আয় এর দেশগুলিতে।
অসুরক্ষিত ওষুধ-ব্যবহার বা আনসেফ মেডিকেশনের জন্য বছরে কয়েক মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং এর ফলে প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার অর্থ অপব্যয় হচ্ছে। এই টাকার অঙ্কটা স্বাস্থ্যখাতে মোট ব্যয়ের প্রায় এক শতাংশ।
ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভুলত্রুটিগুলি ঘটে যখন ওষুধ ব্যবহারের ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক উপদানগুলি যেমন কর্মীবাহিনীর একটানা কাজের ফলে ক্লান্তি, কাজকর্মের ধারার মধ্যে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ ও ছন্দপতন, ও কর্মীস্বল্পতার সংকট এই বিষয়গুলি একসাথে যুক্ত হয়ে ওষুধ নিদান দেওয়া, লেখা, বিলি করা, নজরদারি ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে ফেলে। এর ফলে উৎপন্ন হয় গুরুতর ক্ষতি, বিকলাঙ্গতা এমন কী মৃত্যু।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতি ১০০ জন রুগী পিছু ১৪ জন হসপিটাল ইনফেকশন বা ‘হাসপাতাল-জনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। ইউরোপ ইউনিয়নের দেশগুলিতে প্রতিবছর প্রায় ৩.২ মিলিয়ন রুগী এই সংক্রমণের শিকার হয় এবং তাদের মধ্যে সরাসরি এই কায়ণের জন্য ৩৭ হাজার মৃত্যু হয়।
সহজ, সরল ও সস্তা কতগুলি ব্যবস্হা যেমন উপযুক্ত হস্ত স্বাস্থ্যবিধান বা হ্যান্ড হাইজিন, এইসব গ্রহণ করলে এই ধরণের হাসপাতাল-জনিত সংক্রমণের হার অন্ততঃ ৫০% কমিয়ে আনা সম্ভব।
প্রতি বছর প্রায় সাত মিলিয়ন রুগী অস্ত্রোপচার জনিত প্রবল সমস্যায় ভোগার অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যান এবং তাঁদের মধ্যে এক মিলিয়ন শেষ পর্যন্ত মারা যান। যদিও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে অস্ত্রোপচার জনিত সংকটের পরিমাণ গত পঞ্চাশ বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, তবুও স্বল্প আয়ের দেশগুলিতে এই ধরণের জটিলতার পরিমাণ উচ্চ আয়ের দেশগুলির তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি।
তথ্যের কচকচি ছেড়ে এবার কিছু কাজের কথায় আসা যাক।
এই অঘটনগুলিকে বন্ধ করা বা কমিয়ে নিয়ে আসার লক্ষে যে কৌশলগত ব্যবস্থা বা স্ট্র্যাটেজিক মেজার নিতে হবে তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল একটি শক্তিশালী তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। “সেন্টিনেল ইভেন্ট সার্ভালেন্স” বলে একটা বিষয় আছে। তাতে হাসপাতালে ঘটে যাওয়া কতগুলি গুরুতর দুর্ঘটনার নজরদারি করার কথা। যেমন: (১) রুগী বেড থেকে পড়ে যাওয়া, (২) ভুল ইঞ্জেকশন বা ওষুধ খাইয়ে দেওয়া, (৩) ভুল ব্লাড গ্রূপের রক্ত চালানো, (৪) ভুল অঙ্গে অপারেশন করা, (৫) একজনের রক্ত বা অন্য নমুনা আরেকজনের ল্যাব পরীক্ষার রিপোর্ট অদল বদল করা, (৬) ভুল রুগীকে অপারেশন করা, (৭) অপরিশোধিত সূঁচ ব্যবহারের মাধ্যমে সংক্রমণ; (৮) শিরায় তরল যেমন স্যালাইন ইত্যাদি চালানোর পরে শিরার প্রদাহ; (৯) ক্যাথেটার ব্যবহারের পরে মূত্রনালীতে সংক্রমণ; (১০) দীর্ঘদিন বিছানায় শুয়ে থাকার পরে শয্যা-ক্ষত বা বেডসোর; (১১) এক্স রে, রেডিও থেরাপি ইত্যাদি থেকে নিঃসৃত আওনাইনজিং বিকিরণের জন্য ক্ষতি ইত্যাদি।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রুগীর সম্বন্ধে ঘটে যাওয়া অন্যান্য অঘটনগুলি যেমন (১) শিশুচুরি বা অদলবদল; (২) রুগীর ওপর ঘটে যাওয়া যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণ, (৩) অগ্নিদগ্ধ হওয়া; (৪) পোকামাকড়, মশামাছি, জীবজন্তুর দংশন; (৫) হাসপাতালে ভর্তি রুগীর পালিয়ে যাওয়া; (৬) ভর্তি থাকা রুগীর আত্মহত্যা বা আত্নহত্যার চেষ্টা
ইত্যাদি বিষয়গুলি ও ব্যাপক অর্থে ওই সেন্টিনেল ইভেন্ট হিসেবে গণ্য হওয়ার যোগ্য যদিও সরাসরিভাবে এগুলি চিকিৎসা-পরিষেবা হিসেবে গণ্য নয়। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে এগুলির আলাদা গুরুত্ব আছে।
এই অঘটনগুলি লিপিবদ্ধ করা হল প্রাথমিক কাজ। তারপরে কি কারণে ওই গাফিলতি হল সেটা বিশ্লেষণ করা ও সব শেষে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া – এই গুলি হল এই নজরদারি ব্যবস্থার ধাপ। খাতায় কলমে থাকলেও এই নজরদারী ব্যবস্থা এখনো আমাদের দেশে খুবই দুর্বল।
এখানে মনে রাখা প্রয়োজন যে দুর্ঘটনা (এমন কি পথ দুর্ঘটনাও) এমনি এমনি হয় না। লাক বা চান্স বলে কিছু নেই। প্রত্যেকটা দুর্ঘটনা ঘটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। এটি জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানের শাখা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাইজিনের অন্তর্ভুক্ত। প্রসঙ্গত শিল্প দুর্ঘটনা ও কু স্বাস্থ্য ও মৃত্যুর বড় কারণ আমাদের দেশে। এগুলি প্রতিরোধযোগ্য বা নিবারণযোগ্য ব্যাধি বা মৃত্যু। এই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই দেখতে হবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রুগীর সুরক্ষার বিষয়টিকে।
ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটি অঘটন সম্পর্কে কিছু জরুরী তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করার একটি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা সবাই অনুভব করতে পারেন। এর বিভিন্ন মডেলের মধ্যে একটি সুপরিচিত মডেলের নাম হল “মিনিমাল ইনফরমেশন মডেল ফর পেশেন্ট সেফটি” বা সংক্ষেপে এমআইএম- পিএস। এই মডেল অনুযায়ী নূন্যতম যে তথ্যগুলি সংগ্রহ করা হয় সেগুলি হল: (১) রুগী সংক্রান্ত তথ্য- বয়েস, লিঙ্গ (নাম গোপন রাখা হবে); (২) অঘটনের সময়; (৩)অঘটনের স্থান বা অকুস্থল; (৪) অঘটনের কারণ; (৫) যে উপাদানগুলি অঘটন ঘটতে সাহায্য করেছে; (৬) যে উপাদানগুলি অঘটন ঘটা আটকাতে পারতো; (৭) কি ধরণের অঘটন; (৮) অঘটনের ফলাফল; (৯) অঘটন ঘটার ফলে যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হল; (১০) এই প্রতিবেদনের প্রতিবেদকের ভূমিকা।
কেবলমাত্র তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। আরো যে যেসব জরুরি কাজ করতে হবে সেগুলি হল: (২) তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গবেষণা; (৩) বিভিন্ন নির্দেশিকা ও গাইডলাইন– SOP, STG তৈরি; (৪) কর্মীবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিরন্তর প্ৰশিক্ষণ; (৫) অন্যান্য দপ্তরের সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা; (৬) স্বল্প ও দীর্ধমেয়াদি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান বা পরিকল্পনা তৈরি ইত্যাদি। সব শেষে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে তাদের উপযোগী একটি কোয়ালিটি এসিওরেন্স প্রোগ্রাম বা উৎকর্ষ সাধনের কর্মসূচি গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক ভাবে যেই কর্মসূচিতে রুগীর সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
এই কাজগুলি করার জন্য চিকিৎসকদের পাশাপাশি হাসপাতাল কেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানে প্রশিক্ষিত কর্মচারীদের অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। সামান্য ওয়ার্ড বয়কেও প্রশিক্ষিত হতে হবে হাসপাতালের পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে। একা কোন একজন বা একদল চিকিৎসক এই কাজ পারবেন না।
লিবি’র সেই বিতর্কিত গল্পটা তো শেষ হয় নি। গল্পটাতে ফেরা যাক। নিউ ইয়র্ক স্টেট হেলথ কমিশন ডাঃ বার্ট্রান্ড বেলের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে। জুনিয়র ডাক্তারদের ডিউটির সময়সীমা, তাদের একটানা ডিউটির ক্লান্তি, সিনিয়ার ডাক্তার দিয়ে যাদের কাজকর্মের তদারকি, ওষুধপত্র লেখার পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে ওই কমিটি একটি প্রতিবেদন পেশ করে।
প্রণয়ন করা হয় নতুন আইন যেখানে কঠোর ভাবে ওই কমিটির সুপারিশগুলি মেনে চলার কথা বলা হয়। আইনের কেতাবে ওই আইনটির পোশাকি নাম হল নিউ ইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ কোড সেকশন ৪০৫ আর ডাকনাম হল “লিবি জিওন ল”। আজ আর কোনো জুনিয়র ডাক্তারকে ওই দেশে একটানা ৩৬ ঘন্টা ডিউটি করতে হয় না।
আমাদের দেশে কত শত লিবি জিওন অকালে বিদায় নিচ্ছে। সবার বাবা তো আর নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর লেখক হয় না যে একা’র জোরে জনমত তৈরি করে ফেলবে। সব্বাইকে এগিয়ে আসতে হবে ভবিষ্যতের লিবিদের বাঁচাতে।
সজ্ঞানে কোনো চিকিৎসক চান না যে তাঁর রুগী বেড থেকে পড়ে গিয়ে কোমর ভেঙে ফেলুক বা তাকে ভুল ইনজেকশন দেওয়া হোক, বা তার ভুল অঙ্গে অস্ত্রোপচার করা হোক বা তার ক্যাথিটার থেকে ইনফেকশন হয়ে যাক। তাঁরা চান রুগী সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাক হাসপাতালের পরিবেশ থেকে।
তাই আমরা, চিকিৎসকরা আমাদের সীমিত ক্ষমতা নিয়ে আপনাদের পাশে আছি। আমরাও আর কোনো লিবিকে হারাতে চাই না। আমাদের আপনাদের যৌথ প্রয়াসে খুলে যাক রুগী সুরক্ষার নতুন দিগন্ত।
১৭ই সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড পেশেন্ট সেফটি দিবস
—————
সূত্র ১:: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এইচআইএস-এসডিএস ২০১৬.২২
সূত্র ২:: ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল, ২০১৩ (১০): এ কে ঝা,আই ল্যারজীগয়টিয়া, সি আউদেররা-লোপেজ ও সহযোগী, পৃষ্টা ৮০৯-১৫
সূত্র ৩:: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এইচআইএস-এসডিএস ২০১৭.১৫
সূত্র ৪:: রুট কজ এন্যালিসিস – পেশেন্ট সেফটি প্রাইমার – ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ এন্ড হিউম্যান সার্ভিস
সূত্র ৫:: এ কেস দ্যাট সুক মেডিসিন: ব্যারণ এইচ লার্নার: ওয়াশিংটন পোস্ট, নভেম্বর ১৮, ২০০৬