এই নিয়ে দ্বিতীয় বার এলেন মহিলা। আগের দিনের মতই সংগে একটি বছর এগারোর মেয়ে আর বছর চারেকের ছেলে।
মহিলা চোখে দেখতে পান না ।
আমি চক্ষুবিশারদ নই তাই সঠিক কারণ জানি না। তবে অস্বচ্ছ চোখের মণি দেখে অনুমান করতে পারি, ভিটামিন এ অভাব-জনিত কেরাটোম্যালেসিয়াই হয়ত দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে শবনম বানোর।
-পাঁচ বচোর অবদি সব দেকতাম, ডাক্তারবাবু। তার পর সব আঁধার হয়ে গেল আস্তে আস্তে।
দেখা হয়ে যাওয়ার পর, জানতে চাইলাম -একাই এসেছেন? আমি আগের বারও ভেবেছিলাম নিশ্চয়ই পরিণত বয়স্ক কোন অভিভাবক আছেন বাইরে।
-নাঃ, এদের নিয়ে আসি তো!
শিশু দুটির দিকে তাকিয়ে বুঝলাম না কে কার ভরসা। দিদিটি ভারি স্মার্ট। প্রেসক্রিপশন টাকে যত্ন করে ভাঁজ করে ব্যাগে ঢোকালো। তার পর ব্যাগটাক খুব স্টাইল করে কাঁধ থেকে আড়াআড়ি ঝুলিয়ে উঠে দাঁড়ালো।
নজর পড়ল ব্যাগের ওপরে ছাপা লেখাটির দিকেঃ Cricket Tournament for Visually impaired। খুব ভালো লাগলো দেখে।
-বাঃ, কে খেলে রে ক্রিকেট, মা? হতেও তো পারে, কত আর বয়েস হবে শবনম বানোর? বড় জোর সাতাশ-আঠাশ!
-না, এটা বাবা র ব্যাগ! বাবা খেলে তো !
-ওদের বাবা আমার মত লয়, আমি তো তাও ঝাপসা আলো ঠাওর করতে পারি, ওদের বাবা জন্ম থেকেই আঁধার !
-আগে ডিশটিক খেলত,একোন টেটে। অভিমানের ছোঁয়া মাখানো একরাশ অনুযোগ শবনমের গলায়।
-কুনো দিন আমাকে নিয়ে ডাক্তারখানা যাবার ফুরসৎ হয় না তার! সারা দিন শুধু খেলা আর খেলা।
One Response
এমন মনোযোগ দিয়ে কেইবা দেখে। মন খারাপ হয়, ভীষণ মন খারাপ হয়। তখন ভাবি–
আমরা কতো ভালো আছি !!!