Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

পকসো, বালিকাবিবাহ এবং বাল্যমাতৃত্ব – সরকারী সংবাদ এবং মেঠো বাস্তব।

Oplus_16908288
Dr. Partha Bhattacharya

Dr. Partha Bhattacharya

Gynaecologist
My Other Posts
  • March 31, 2025
  • 8:30 am
  • No Comments

সত্যি বলতে কি কিছু লিখিনা বহুদিন। আমি ফেবুতে কিছু না লিখলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কিস্যু আসে যায় না যদিও। কেন লিখিনা, তার কারণ ফেসবুকের প্রোফাইল পিক দেখলে আশা করি, বুঝতে পারবেন – সত্যি বলতে কি যতদিন বেঁচে থাকব, এই কথাটি বিশ্বাস করে যাব যে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক প্রশ্রয়ে একটি নারকীয় অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কেউ কিচ্ছু করতে পারে নি।

তাও সাম্প্রতিক একটি খবর দেখে এতো এতো বাস্তব অভিজ্ঞতা মনে পড়ে গেল, ভাবলাম, চালু ভাষায় যাকে ‘শেয়ার’ করা বলে, তাই করে রাখি। লেখাটি একটু দীর্ঘ, কিঞ্চিৎ আইনের কচকচিও আছে- মানে আমার লেখা যেমন প্যাঁচালমার্কা হয় আর কি। ক্ষমাঘেন্না করে দেবেন যদি আদৌ পড়েন।
********************************************

পকসো, বালিকাবিবাহ এবং বাল্যমাতৃত্ব – সরকারী সংবাদ এবং মেঠো বাস্তব।

পনেরো বছর বয়সী আনখশির আবৃত গৃহবধূ। শাশুড়ী আর দিদিশাশুড়ি বগলদাবা করে নিয়ে এসেছেন গাইনো ডাক্তারের চেম্বারে। দিদিশাশুড়ী ই মুখ খুললেন। “ডাক্তারবাবু, দেড় বচ্ছর হল নাতির বে দিলাম পুতির মুখ দেখব বলে, তো কোথায় কি, এ মেয়ের তো গা ই শুকনো হয় না। একটু ওষুধপালা দেন – যাতে ছেলে মেয়ে এইবারে যা হোক কিছু একটা হয়ে যায়।”

রুটিনমাফিক ‘হিস্ট্রি’ নিয়ে, পরীক্ষানিরীক্ষা করে ডাক্তারবাবু বুঝলেন, খুব সম্ভবত মারাত্মক কিছু সমস্যা নেই। অর্বাচীন ডাক্তার, শুধু Gynec নন, এককালে Preventive and Social Medicine এর CA ছিলেন – তো সেই সোশ্যাল মেডিসিন এর পরিপ্রেক্ষিত থেকেই বোঝানোর চেষ্টা করলেন – বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন, আর তো কিছু করার নেই, বাচ্চাকাচ্চা এক্ষুণি না হলে ক্ষতি কি? এই বয়সে সন্তানধারণ করার ঝুঁকি ত কিছু কম নয় ইত্যাদি। বলা বাহুল্য, এইসব বেকার কথাবার্তা অভিভাবকদের মনঃপূত হলনা। কড়কড়ে একশো টাকা ভিজিট দিয়ে তাঁরা পেটে বাচ্চা আনার ওষুধ-বড়ি নিতে এসেছেন, উপদেশ নিতে তো আসেন নি। তাঁদের সমাজ তো আর শউরে সায়েবদের মত নয় – হায়া লজ্জা আছে, পরকালে জবাব দেওয়ার ব্যপার আছে। ডাক্তারবাবু সবিনয়ে ভিজিট ফেরত দিয়ে বলেছিলেন – বন্ধ্যাত্বর চিকিৎসা তিনি জানেননা – ওঁরা যেন অন্য কোনও ‘বড় ডাক্তার’ দেখিয়ে নেন।

এই কাহিনী কুড়ি বছর আগের কথা। ছেলে-মেয়েদের বিয়ের বয়সের একটা সরকারী নিয়মকানুন, Child Marriage Act 1978, তখনও ছিল বটে, যেমন ব্রিটিশ আমলের ১৯২৯ থেকেই আছে, তবে সেসব ওই আর পাঁচটা আইনের মতই – দিল্লির গোলবাড়িতে বসে কিছু মোড়ল আইন বানিয়ে ঢাক বাজিয়ে জানান দেয় আমরা বেঁচে আছি। দেশ ও সমাজ তার মত চলতে থাকে। মাঝখান থেকে ফায়দা তোলে আইনের দেখভাল যাদের দায়িত্ব তারা। আর যাঁরা কোনও এক মরুভূমির আইন মেনে চলেন, তাঁদের তো দূর থেকে ভয়ে ভয়ে সালাম ঠুকে পালিয়ে আসা ছাড়া আর পথ থাকেনা। গর্দানার দায় বড় দায়।

যাইহোক, কুড়ি বছর পার করে গঙ্গা দিয়ে কত জল গড়াল, কত সরকার গেল-এল। সমাজটাও কেমন বদলে গেল অতি দ্রুত। নিত্যনূতন শিশু নির্যা#তনের খবর – আজ এই রাজ্যের এই শহরে তো কাল ওই রাজ্যের ওই গ্রামে। এই পটভূমিতে দু হাজার বারো তে এল POCSO আইন – শিশুর প্রতি যৌ&ন নির্যা%তনে অপরাধীর জন্য ভয়াল-ভয়ঙ্কর এক ব্যবস্থা। নিঃসন্দেহে সাধু এবং মানবিক উদ্যোগ, যদিও সে আইনের বিস্তারিত আলোচনা এখানে অপ্রাসঙ্গিক।

যে কারণে এক গাইনি ডাক্তারের অকিঞ্চিৎকর লেখায় এই আইনের উল্লেখ – তা হল, শিশুদের যৌ%ন নির্যা#তন এর সাথে জুতে দেওয়া হল বাল্যবিবাহ। আর বাল্যবিবাহ মানেই বাল্য মাতৃত্ব। কান টানলে যেমন মাথা, নারী-পুরুষের বিবাহ মানেই চিত্রনাট্যের অন্তত একটি-দুটি সিনে গাইনির ডাক্তারের উদয়। হয় বাচ্চা হবে, নাহয় বাচ্চা কেন হচ্ছে না, নিদেনপক্ষে বাচ্চা না নেওয়ার ব্যবস্থা- এই তুচ্ছ গাইনোর ডাক একবার অন্তত পড়েই থাকে। সুতরাং একেবারে ধান ভানতে শিবের গীত নয়।

এইবারে, এই পকসো অনুযায়ী যেটা দাঁড়াল, আঠারো বছরের নীচে বালিকার সাথে যেকোন, মানে যেকোন যৌ#নসংসর্গ, এমনকি তার তথাকথিত সম্মতিতে হলেও তা অপরাধ। এমনকি বৈবাহিক মিলনেও সে সম্মতি অবৈধ, অতএব মেয়েটির বয়স আঠারোর নীচে হলে স্বামী-স্ত্রীর মিলনও শিশু#কন্যা ধর্ষ√ণের এর সমতুল্য, অতএব বালিকা&বিবাহের শাস্তি বা%লিকা-ধর্ষ#ণের শাস্তির সমান। স্বামী মূল ধ#র্ষ#ক এবং ওই বিয়েতে জড়িত বাকীরা, মূলত দুই পক্ষের বাবা-মায়েরা, ওই অপরাধের মূল চক্রী। পকসো আইনের নিদানে বিবাহটি Voidable (Void নয় কিন্ত) অর্থাৎ বাতিলযোগ্য, স্বামী এবং অভিভাবকদের গন্তব্য শ্রীঘর এবং মেয়েটির সরকারী হোম।

এই অবধি চমৎকার। শিশু নির্যা#তনও প্রতিরোধ হল, বালিকা*বিবাহেরও কড়া দাওয়াই মিলল। এইবারে আয়, কেমন কচি মেয়ের বিয়ে দিবি! আবারও বলি, উদ্যোগটি কিন্তু সাধু।

আপাতত পকসো আইনের বারো বছর পার। সংশোধন ও হয়েছে সময়ের দাবী মেনে – যেমন সব আইনেই হয়ে থাকে। 42A ধারায় বলা হল অন্য ধারার সাথে সংঘাত হলে প্রাধান্য পাবে POCSO। কিরকম? একটি উদাহরণ দিই। চলতি ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ১৫ বছরের উপরে স্ত্রীর সাথে বলপূর্বক সহবাস ধ#র্ষ#ণ নয়, অতএব ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার যোগ্য। কিন্তু পকসো মতে এই পবিত্র কাজটি ধ#র্ষ#ণ ই, কারণ ১৮ র নীচে বিবাহটিই অবৈধ – এবং এইক্ষেত্রে পকসোর নিদান ই প্রাধান্য পাবে। সত্যিই বজ্র আঁটুনি। পালাবি কোথায়?

এইবারে এক্কেবারে বাস্তব কয়েকটি গল্প। স্থান মূলত উত্তর চব্বিশ পরগণা। কাল – মেরে#কেটে বছরখানেক।

১) পঁচিশ বছরের ননদ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ষোলো বছরের ভাই এবং তের বছরের গর্ভবতী ভাইয়ের বউকে নিয়ে। হিসাব করে দেখা গেল, গর্ভাবস্থা ঠিকঠাক চললে চোদ্দ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সে মা হবে। জিজ্ঞাসা করলাম, বিয়ে তো দিলেন, প্রেগন্যান্সিটা ঠেকাতে পারলেন না? অসহায় ননদিনীর উত্তর – কি করব স্যর, ভাই একেবারে প্রেগন্যান্ট করে সিঁদুর পরিয়ে বাড়ি নিয়ে এসেছে। উদ্ধত ভাই তখন মোবাইলের স্ক্রিন স্ক্রোল করছেন।

২) উনিশ বছরের মেয়ের দ্বিতীয় গর্ভ। প্রথমটি সিজার – মেয়ে, দুই বছর বয়স। পনেরোয় বিয়ে, সতেরোয় প্রথম সন্তান, উনিশে দ্বিতীয় আসতে চলেছে। এটিও মেয়ে হলে হয়ত আসছে বছর আবার হবে!

৩) সতেরো বছরের গর্ভবতী মা – প্রথম দুটি Miscarriage বা গর্ভপাত হয়ে গেছে। তৃতীয়টি চলছে। অপুষ্টিতে দীর্ণ খর্বকায় শরীর, ৩৪ কিলো ওজন। টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন দেখে বহুজাতিকের, মা*র হ*লি*স্ খাওয়াচ্ছেন বাড়ির লোক। ওতেই সব ঠিক হবে- কারণ টিবিতে দেখায় যে।

৪) ষোলো বছরের হবু মা। চোদ্দয় বিয়ে। ডাক্তারবাবু স্বভাবত বললেন – আর দুটো বছর অপেক্ষা করতে পারলি না মা? ‘মা’র শাশুড়ীমায়ের উত্তর – “কেন ডাক্তারবাবু, আমরা, আমাদের মা-ঠাকুমারা মা হইনি চোদ্দ-পনেরোয়?” ডাক্তারবাবু হেসে বললেন – হ্যাঁ, হয়েছেন – কিন্তু কতজন মরে গেছেন – সে খবর কেউ রাখত? স্রেফ একটা পোস্টকার্ড যেত বাপের বাড়ি – ‘আপনার কন্যা গতকল্য সন্তানের জন্ম দিতে গিয়া ইহলোক ত্যাগ করিয়াছে। তাহার সন্তানটিও বাঁচিয়া নাই’। দু ফোঁটা চোখের জল ফেলে বাপ-মা নিজেদের কাজে মন দিতেন – আহা, মেয়েমানুষের জন্মই তো এই। উত্তর এল – “তাহলে আর আম্নাকে দেকাচ্চি কেন ডাক্তারবাবু? আম্নার হাতেই তো তুলে দিয়েছি বউমাকে”। কেবল ডাক্তারবাবুই জানেন – এ তুলে দেওয়া হল হাতে একটা আস্ত বোমা তুলে দেওয়া। ঠিকমতো সামলাতে না পারলে নিজের হাতেই ফাটবে।

৫) ষোলোর আরেক হবু মা। বাবা অনুরোধ করলেন – স্যর সামনে টেস্ট পরীক্ষা। একটা সাট্টুফিট দিতে হবে টাইফয়েড বলে – তাহলে টেস্ট না দিলেও মাধ্যমিকে বসতে পারবে। হেড দিদিমণিই এরম বলে দিয়েছেন। ডাক্তারের চোখ কপালে – “তুই স্কুলেও যাস!”
“না স্যর, শুধু নাম লেখানো আছে। কন্যাশ্রীটা পায় কিনা, হেঁ হেঁ। মাধ্যমিকটা কোনওভাবে পাস করে গেলে আঠারো অবধি টাকাটা পাবে। তার আগে তো রূপশ্রীটা পাব না – আঠারো হলে কার্ড ছাপিয়ে জমা দিলেই হবে। গরীবের সংসার – সবসুদ্ধ সাতটা পেট, বোঝেনই তো সার্।” বুঝলাম – এরকম নির্লজ্জ “গরীব” জনগণের ভিতর থেকেই তো নির্লজ্জতম চো#রগুলি শাসক হিসাবে নির্বাচিত হয়।

৬) শেষ গল্প। পনেরো বছরের প্রথম গর্ভ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিদিমণিরা মিষ্টি করে পকসো-পুলিশের ভয় দেখিয়ে ভাগিয়ে দিয়েছেন। প্রাইভেটের ডাক্তারবাবুও ঘাড় থেকে বিপদ এড়ানোর চেষ্টা করলেন। পায়ে ধরে কেঁদে পড়লেন মা – “সব জায়গায় ঘুরছি ডাক্তারবাবু। এ পোয়াতি মেয়ে নিয়ে কোথায় যাব এখন? পোলিও সেন্টারে বলেছে কার্ড বানালে মা-বাচ্চা সমেত হোমে নিয়ে যাবে। একটু দেখেন গরীবরে।” ডাক্তারবাবু প্রেসক্রিপশনের মাথা ছিঁড়ে হিজিবিজি সই করে চিকিৎসা করেন। আইনত মুমূর্ষু না হলে যেকোন রোগী প্রত্যাখ্যান করা যায়, কিন্তু মূঢ় কিশোরী মা আর তার অনাগত শিশুকে প্রত্যাখ্যান করতে বিবেক সাড়া দেয় না (বুদ্ধিমান পাঠক অবশ্য বলবেন – সব টাকার লোভ)। ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রেগন্যান্সির কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষা, যেমন Anomaly Scan করতে চায় না – ফোন করে বলে, স্যর পকসোয় ফেঁসে যাব, আপনিও ফাঁসবেন।

এইবারে শেষ কথা। চিকিৎসক তো বটেই, মোটামুটি সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন সকলেই জানেন – কিশোরীমাতৃত্ব বা teenage pregnancy চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিক থেকে একটি high risk pregnancy শুধুমাত্র বয়সের কারণেই। তা এরকম অন্যান্য অতিঝুঁকির গর্ভবতীর চিকিৎসা তো তাঁদের অহরহ করতেই হয় – সেটা তো medical profession এর অঙ্গ। তাহলে এইক্ষেত্রে এতো ভয় কেন? এড়ানোর চেষ্টা কেন? কিসে ফাঁসতে হতে পারে?

এইখানেই সুমহান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের খেলা, স্যর/মেডাম। পার্লামেন্টে বিল এল, আইন পাশ হল, রাষ্ট্রনায়করা সুশীল সমাজের বাহবা পেলেন। সব দায়িত্বও সেইখানেই শেষ হল। মন্ত্রী, প্রশাসক, সারাদিন গায়ে লেপ্টে থাকা পরজীবি নেতারা, পুলিশ কেউ দায়িত্ব নেবেন না বালিকাবিবাহ ঠেকাতে – অন্তত খাতায় কলমে তাঁদের কোনও দায় নেই৷ অস্বীকার করা যাবে না- দু চারটে ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে – তাতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ-নেতারা বাহবা পান, কাগজে নামও বেরোয়, চ্যানেলের টিআরপি বাড়ে। এইসব দিয়ে সাধারণ প্রবণতা মাপতে যাওয়া আর গায়ত্রী চক্রবর্ত্তী স্পিভাক ‘নোবেল’ পেয়েছেন বলে ‘পচ্চিমবঙ্গের সিক্ষা বেবোস্থার হেব্বি উন্নয়ন’ হয়েছে বলে দাবী করা একই রকম বেহেড মাতলামি বা চটিবাজি।

তাহলে দায় চাপানো যায় কার ঘাড়ে? কেন – ওই ডাক্তারগুলান আছে তো। রাষ্ট্র পারলনা, দেশনেতা থেকে শুরু করে চুনো নেতা পারলনা, প্রশাসন-পুলিশ পারলনা বালিকাবিবাহ আটকাতে। ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার ডাক্তারবাবুর উপরে সরকার দায় চাপিয়ে দিলেন। কিশোরী মাতৃত্বর কেস (মানেই কিশোরীর সাথে যৌ*ন সংস#র্গ হয়েছে) পাওয়া মাত্রই গাইনিকলজিস্ট, রেডিওলজিস্ট বা অন্য যেকোন চিকিৎসক বা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান – পুলিশকে জানাতে বাধ্য। হ্যাঁ, আইনত বাধ্য – অন্যথায় কড়া শাস্তি – জেল, জরিমানা। আর পুলিশকে জানাতে গেলে, বা এরকম বাচ্চা মা’কে দেখতে না চাইলে?

আবার দুটি অভিজ্ঞতা যাকে বলে ‘শেয়ার’ করা যাক-
১) পনেরো বছরের হবু মা কে চিকিৎসার অপারগতা জানাতে প্রথমে বাড়ির তিন চারজন মহিলা দাপটে ঢুকে পড়লেন চেম্বারে – ‘দেখবেন না মানে, থানার ওসি আর পঞ্চায়েত পোধান নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে এ বিয়ে দিয়েছেন। অ্যাই, মোবাইল থেকে ছবি বার কর’। ডাক্তারবাবু অনড়। কারণ, পাশের এলাকায় এক নার্সিংহোমে একজন কিশোরী মায়ের খবর জানাজানি হওয়াতে পকসো না মানার অপরাধে আদর্শবাদী জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মানে CMOH, সেই নার্সিং হোম বন্ধ করে দিয়েছেন। তার সাথে মামলা মোকদ্দমা ত আছেই। তিনি নিজেকে এবং নার্সিং হোম মালিককে বিপদে ফেলতে চান না। পরের রোগী দেখতে দেখতেই অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন এল – “ডাক্তারবাবু, আমি Soভাধিপতির পিয়ে বলছি। কেসটা নিয়ে নিন, আপনি ডাক্তার মানুষ ডাক্তারি করুন, আইন টাইন আমরা বুঝে নেব। আর হ্যাঁ, মেয়েটি আমাদের **** দাদার ভাগ্নি হয়।”

২) একজন নবীনা চিকিৎসক পুলিশে জানিয়েছিলেন নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে। হোয়াটসঅ্যাপ এ কল এল সেকেন্ড অফিসারের কাছ থেকে “ম্যাডাম, আপনি করেছেন কি! এই একটা সামান্য কারণে পুরো ফ্যামিলিশুদ্ধু জেলে যাবে, বরটা ৩৭৫ খাবে, মেয়ে আর বাচ্চা হোমে ঢুকবে। লোকাল পাবলিক এসব সহ্য করবে না কিন্তু। আপনার সিকিউরিটির দায় তো আমরা নিতে পারব না ম্যাম।”

অতএব, চিকিৎসকদের অবস্থা স-সে-মি-রা। নিয়মমাফিক জানাতে গেলে নেতা-পুলিশ, যাঁদের কাজ এগুলো গোড়ায় আটকানো, তাঁদের প্রচ্ছন্ন হুমকি – কারণ তাঁরা ‘দাঁড়িয়ে থেকে’ বিয়ে দেন। অন্যদিক, জানাজানি হয়ে কোর্ট অবধি পৌঁছালে হোস্টেলর ভাষায়, যাকে বলে – হাতে হ্যারিকেন।

বিশ্বাস করুন, এই তো, বছরখানেক আগে, এক কনফারেন্সের একটি আলোচনাচক্র, মানে Panel Discussion এর বিষয়বস্তুই ছিল স্ত্রীরোগ চিকিৎসার আইনি পরিপ্রেক্ষিত, পকসো বাদ দিয়ে যে আলোচনা সম্পূর্ণ হয় না। আমার মত ডাক্তাররা ছাড়াও সেই প্যানেলে একজন আইপিএস অফিসার ছিলেন, ছিলেন একজন জাঁদরেল ক্রিমিনাল লইয়ার এবং একজন স্বনামধন্য বিচারক। আইনের তুল্যমূল্য বিচার চলল, আইনসভার মহান উদ্দেশ্যের প্রতি পুষ্পবর্ষণ হল। আলোচনা শেষে কফি হাতে বিখ্যাত আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করলাম – বাস্তব পরিস্থিতিতে কি হয়। তিনি হাসতে হাসতে বললেন – ‘ডাক্তারবাবু, একটা বিয়ে হয়ে গেছে, সন্তান এসে গেছে- সত্যিই কি খুব কড়া কিছু করা যায়? এগুলো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হয়, আদালতও সচরাচর সেভাবেই দেখেন।’ বলে সুচতুর ব্যবহারজীবি কথা ঘোরালেন – ‘আপনি তো মশায় অল্পবয়সে টলিউডে গেলে’… ইত্যাদি ইত্যাদি। পাশে অফিসারের মুখে মুচকি হাসি।

আচ্ছা ধরুন, এই যে এত এত বালিকা-মাতৃ্ত্ব, ধরা যাক – চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে ভয়ডরহীন হয়ে দেশের আইন মেনে নিয়মমাফিক রিপোর্টিং করলেন – তাতে কি কি হবে? কিছু জেল-হাজত হল, আর? ধরে নেওয়া যাক – সেই ভয়ে বালিকাবিবাহ কমে গেল (এই deterrent value র সম্ভাবনা শূন্য বলেই মনে হয়)। তা সত্তেও টাইম মেশিন অন করে মেয়েটিকে অনূঢ়া অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাবে? তার গর্ভাবস্থাকে নেই করে দেওয়া যাবে? চোদ্দ-পনেরতে প্রথম সন্তান বা উনিশে তৃতীয় সন্তানধারণের যে শারীরিক-মানসিক ঝুঁকি তাকে সম্পূর্ণ মোকাবিলা করা যাবে?

যাবে না। অতএব, ongoing teenage pregnancy গুলি এবং তার সম্ভাব্য জটিলতা চলতেই থাকবে – যতদিন বালিকা#বিবাহ হৈ হৈ করে চলবে। আর সেটা বন্ধ করার জন্য সরকার বাহাদুর আশা করি চিকিৎসকদেরই মাঠে নামাবেন না। নিজেরা যদি পারেন, কমিয়ে দেখান – চ্যালেঞ্জ রইল। কিছু কাজ করুন না। সাত হাজার পঁচাশিতে ৮৫ – সাফল্যের হার ১.১৯%। কি করেন মশাইরা? আর কত অপদার্থ হবেন বলুন তো?

PrevPreviousসময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে
Nextভল‍্যান্টিয়ারNext
5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

Memoirs of a Travel Fellow Chapter 3: Hills, Resistance and Hope: Odisha

July 8, 2025 No Comments

For me Odisha is a land of contradictions, and the story starts from a rainy day when I came to Bhawanipatna, Kalahandi, Odisha from Chattisgarh.My

গণতান্ত্রিক পথেই আমরা এতদিন স্বর তুলেছি, আগামী দিনেও তুলব, যতদিন না ন্যায়বিচার পাই

July 8, 2025 No Comments

৭ জুলাই, ২০২৫ ২০২৪ এর ৯ আগষ্ট, কলঙ্কজনক ইতিহাস রচিত হয় এই কলকাতায়,এই বাংলায়। মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পি জি

Memoirs of a Travel Fellow Chapter 2: Chhattisgarh: Where Red Dust Meets Red-Green Flags

July 7, 2025 No Comments

When I first scanned the list of centres offered through the travel fellowship, one name leapt out at me: Shaheed Hospital—a Martyrs’ Hospital. There was

অভয়া আন্দোলন: রাজপথ থেকে এবার ছড়িয়ে পড়ুক আল পথে

July 7, 2025 No Comments

৫ই জুলাই

July 7, 2025 No Comments

তেরো বছর আগে এইরকমই এক বর্ষাদিনে শত শত বাঙালির হাত একটি শবদেহ স্পর্শ করে শপথ নিয়েছিল — পশ্চিমবঙ্গকে নৈরাজ্যের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হওয়া থেকে প্রতিহত করতে

সাম্প্রতিক পোস্ট

Memoirs of a Travel Fellow Chapter 3: Hills, Resistance and Hope: Odisha

Dr. Avani Unni July 8, 2025

গণতান্ত্রিক পথেই আমরা এতদিন স্বর তুলেছি, আগামী দিনেও তুলব, যতদিন না ন্যায়বিচার পাই

Abhaya Mancha July 8, 2025

Memoirs of a Travel Fellow Chapter 2: Chhattisgarh: Where Red Dust Meets Red-Green Flags

Dr. Avani Unni July 7, 2025

অভয়া আন্দোলন: রাজপথ থেকে এবার ছড়িয়ে পড়ুক আল পথে

Abhaya Mancha July 7, 2025

৫ই জুলাই

Dr. Sukanya Bandopadhyay July 7, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

565777
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]