সাধারণত কাউকে আমার পোস্টে ট্যাগ বা মেনসন করি না। আজ করলাম। স্বাতীর Swati Bhattacharjee এর দেয়ালটা পারলে একবার ঘুরে আসবেন। চমৎকার সিরিজ দেখতে পাবেন বিভিন্ন পোষ্টারের। আজকের পোস্টারের বিষয় নিয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি, পারিবারিক জীবন নয়, কাজের জীবনের অভিজ্ঞতা।
১৯৯৪ সালে চালু হওয়ার পর পালস পোলিওতে অংশ নিয়েছি একশবারের বেশি, উত্তরবঙ্গের চা বাগান থেকে দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবন। বিধাননগরের ঝাঁ চকচকে পোলিও বুথ থেকে সামসেরগঞ্জের মলিন বুথ। সর্বত্র একটাই কমন ছবি। ছোট বাচ্চাদের যাঁরা ওই দিন বুথে নিয়ে আসছেন তাঁদের নব্বই শতাংশের বেশি হচ্ছে ওই বাচ্চাটির মা। এমনিতে রুটিন ইমিউনাইজেশনের দিনগুলোতে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওই মায়েরাই নিয়ে আসেন। বাবা’রা হয়তো কাজে থাকেন। তবে পোলিও দিবস তো রবিবারেই হয়। রোববার বাবা’রা আসেন না কেন। সারা সপ্তাহ খাটাখাটুনির পর তাদের বোধ হয় একদিন ছুটি লাগে। মায়েদের ছুটি লাগে না কারণ তারা বোধহয় খাটেন না, পায়ের ওপর পা তুলে দিন কাটান। আসলে বিষয়টা হচ্ছে যে এই “বাচ্চাদের দেখে রাখা” এটা স্বতঃসিদ্ধ ভাবে মেয়েদের কাজ বলে চিহ্নিত হয়ে গেছে। কাকা বা বড় ভাই এর হাত ধরে ছোট বাচ্চা বুথে এসেছে এমন দু’একবার দেখেছি। তাঁরাও বড় হয়ে বাবা হয়ে গেলে আর বোধহয় বুথে আসবেন না। ওটা আর তার কাজ থাকবে না। কার কোনটা কাজ এটা যারা ঠিক করে দিলেন, তারা কা’রা? আপনি যদি বলেন, আপনি তাদের চেনেন না, সে কথা মেনে নেয়া যাবে না সুধী পাঠক/পাঠিকা। কারণ সেই লোকগুলো তো আমি আর আপনি। পোস্টারের বর্ণিত সমস্যা শুধু কর্মরত মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য নয়, যাঁরা “কিছু ই করেন না” কেবল ঘর সামলান, সেই মেয়েদেরও সমস্যা। এই চাপিয়ে দেয়া ছাঁচে ফেলে দেওয়া মেয়েদের ভূমিকাকে চ্যালেঞ্জ জানাই আসুন। কোনো কিছুই স্বতঃসিদ্ধ নয় মানব সভ্যতা এগিয়েছে প্রতিটা স্বতঃসিদ্ধ বয়ানকে চ্যালেঞ্জ করেই।
মায়েরাও তো ছাড়েন না তাদের বাচ্চাদের কে অন্য কারুর হাতে সেটাও তো দেখতে হবে।
আর বাবারা পুরো ফ্রিডম ফাইটার সেইদিন টায়।
রোববার বাবুদের বার।
কোন্ টা কার কাজ এসব ঠিক করে দিতে হয় না।
অলিখিত এক দীর্ঘ অবহেলা কাজের প্রতি পাশের মানুষটির প্রতি অমানবিকতা এগুলো করিয়ে নেয়।
খুব ভাল লাগলো লেখাটা।
সুখ দুখের কথা আমার নিজের জীবনেও বড়ো মিল যে।মেয়েরা বাচ্চাটিকে পেয়ে যেন তাদের একাকীত্ব ভুলতে চায়।আর তাদের দিয়ে বাচ্চার সব খাটনি খাটিয়ে তাদের বাৎসল্য মাতৃস্নেহ ব্যবহার করে বাবারা বা সমস্ত পুরুষ শাসিত সমাজটা আরও যেন স্ট্যাম্পটেড করে দিয়ে মেয়েদের এইভাবে চাবুক শানায়। নিজেদের ভূস্বামীত্ব বজায় রাখতে।