নানা সংগঠন ও মঞ্চের তরফ থেকে স্বাস্থ্যভবনে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল, স্বাস্থ্য ভবনের অধীনে কর্মরত মেয়েটি অত্যাচারিত হয়ে মারা যাওয়ার পর স্বাস্থ্যভবনেরই অধীনে কর্মরত আরও কিছু ব্যক্তিকে যে ক্রাইম সিনে দেখা গেল, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনের পদক্ষেপ কী? আরো কিছু প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। সেই ডেপুটেশনে আমিও ছিলাম। গতকাল ছিল ফলো আপ-এ যাওয়ার দিন।
গতকাল আমার হরিণঘাটা কলেজে সেমিনারে বক্তব্য রাখতে যাওয়ার ছিল। আমাদের আরেকজন সদস্য মহাশ্বেতা সমাজদারও বর্ধমানে গেছিলেন৷ তাই আমাদের রাতদখল ঐক্যমঞ্চের অন্য দুটি মেয়েকে আমরা পাঠিয়েছিলাম।
ওরা পৌঁছে দেখে ওই জায়গায় জমায়েত হওয়া ব্যক্তির থেকে পুলিসের সংখ্যা অনেক বেশি৷ ওদের পুলিস বলে, চলে না গেলে ডিটেইন করা হবে। অন্যদের ডিটেইন করা শুরু হয়েছিল। ওরা চলে আসছিল। এবিপি আনন্দ ও আকাশ আট ওদের ঘিরে ধরে ও বাইট চায়। সেসময় পুলিস এসে (যাতে বাইট দিতে না পারে, তাই রিস্ক না নিয়ে সম্ভবত) গাড়িতে উঠতে বলে।
আমি কলেজে বক্তৃতা সেরে থানায় যাই। রাংতা মুন্সিকে ফোন করি, কারণ তিনি উকিল। তিনি ও এপিডিআর-এর কিছু লোকজনও থানায় যান। আরও দুজন উকিলকে ফোন করি আমরা। আমি ও আমাদের মঞ্চের আরও কয়েকজন মেয়ে পৌঁছন থানায়। ওদের সেল্ফ বন্ডে সই করিয়ে, ছাড়া হয়। ঠিক কেন যে ওদের আটকানো হয়েছিল, তা জানা যায় না। পুলিসের আচরণ ভদ্র ছিল এবং আটক হওয়া মেয়েদের মুখে শোনা গেল বেচারা ব্যক্তি পুলিসদের কেউ কেউ নাকি বলাবলি করছিলেন ‘পরিবার না থাকলে চাকরি ছেড়ে দিতাম।’ পুরো ঘটনা থেকেই বোঝা যাচ্ছিল কোনো কারণ ছাড়া স্রেফ সর্বোচ্চ মহলের চাপে ওদের ধরপাকড় করতে হয়েছে। যাইহোক, মেয়েরা বাড়ি পৌঁছনোর পর বা তাদের পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
প্রশ্ন হল, সরকার ঠিক কী চাইছেন? গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকারের সঙ্গে কথা বলবে না নাগরিক? সরকারের সঙ্গে বা সরকারের আধিকারিকের সঙ্গে বার্তালাপ করতে গেলেই ধরে নিয়ে যাবেন? সরকার কি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের রাস্তা বন্ধ করে নিজেই অগণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ত্বরাণ্বিত করছেন না? সরকার নিজে অগণতান্ত্রিক, তাই কি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি সহ্য হচ্ছে না, ইয়ের পেটে ইয়ে সহ্য হয় না যেমন?