গরমের দাবদাহের পরেই আসে বর্ষাকাল। এতদিনের অপেক্ষা শেষ হয়, সিজনের প্রথম দিনের বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে পড়লে এক স্বর্গীয় অনুভুতি হয়, মনে হয় যেন তাপিত প্রাণ শীতল হয়।
কিন্তু এর সাথে আসে নানান রোগ-ভোগ। বর্ষা শুরু হলেই বায়ুর হিমিউডিটি বেড়ে যায়, যা ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের বাড়-বাড়ন্তের অনুকুল পরিবেশ তৈরি করে। আসে মশা, মাছি- একা আসে না, আসে নানা রোগের জীবাণু বহন করে।
এই আলোচনায় আমরা এই বর্ষাকালে আমাদের বাংলায় বা ভারতে যে সকল রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে, তাই নিয়ে আলোচনা করব।
ঠান্ডা লাগা, সর্দি যদিও খুব বেশি হয়, তবুও আরও অনেক রোগ আছে, যা মারাত্মক ও প্রাণঘাতী হতে পারে। তেমন নয়টি রোগের কথা সংক্ষেপে বলব। আজ আলোচনা করব টাইফয়েড নিয়ে।
টাইফয়েড
মশার কামড়ে নয়, অপরিস্কার জল এবং খাবারের মাধ্যমে টাইফয়েডের জীবাণূ সালমোনেলা টাইফি শরীরে বা অন্ত্রে প্রবেশ করে এবং টাইফয়েড রোগ সৃষ্টি করে।
উপসর্গঃ
১। জ্বর এবং মাথায় যন্ত্রণা বা মাথা ধরা। জ্বর অনেক হতে পারে, এমনকি ১০৪ ডিগ্রি হয়ে যেতে পারে। জ্বর সাধারণতঃ বিকালে বা সন্ধ্যার দিকে বাড়ে।
২। ডায়রিয়া এবং পাতলা পায়খানা
৩। ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
৪। গা, হাত-পা ব্যাথা, পেটে ব্যাথা
৫। ক্ষুধা কমে যাওয়া, বমি ভাব
৬। অনেক সময়ে গায়ে র্যাস হয়ে যায়।
চিকিৎসা না করলে রোগ মারাত্মক হতে পারে। এক সময় টাইফয়েড মানুষের মৃত্যুর অন্যতম কারণ ছিল।
রোগ নির্ণয়ঃ
মল ও রক্ত পরীক্ষা করলে সহজেই টাইফয়েড রোগ ধরা পড়ে। তবে ৫ দিনের আগে রক্ত পরীক্ষা করলে ধরা পড়ে না।
চিকিৎসাঃ
ডাক্তার দেখিয়ে উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করলে টাইফয়েড সেরে যায়। তার সাথে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
কি করলে রোগ হবে না?
- পরিস্কার খাবার এবং জীবাণুমুক্ত পরিস্কার জল খেতে হবে।
- খাবার আগে ভাল করে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে।
- আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে রোগ ছড়ায়। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকেও সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। হাত ধুতে হবে।
বর্তমানে টাইফয়েডের টিকা পাওয়া যায়। সঠিক বয়সে শিশুদের টিকা দিলে আর এই রোগ হবে না।
ভালো লাগলো।