বন্ধু সাহেবুল হক ওর নিজের দেয়ালে এই পোস্ট টা দিয়েছিল, “রাজনীতির প্রয়োজনে দু’দিক থেকেই ঘৃণা ঘৃণা খেলা তো চলবেই৷ এর বাইরে সম্ভব হলে বাংলাদেশ নিয়ে ভালোলাগার জিনিসগুলো উল্লেখ করুন৷” ভেবেছিলাম যে কিছু লিখবো। কিছুক্ষণ বাদে যথারীতি দুই বাংলার ই বিষাক্ত কিছু এলিমেন্ট এসে ঐ থ্রেডে যে পরিমাণ বিষ ঢালতে শুরু করলো যে লেখার ইচ্ছেটাই চলে গেল। তাই আলাদা করেই লিখছি।
প্রথমটা ছেলেবেলার কাহিনী। তদ্দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। নজরুলকে নিয়ে ব্যাপক মাতামাতি। বাড়িতে গান বাজনা শোনার মধ্যে নজরুল তেমন ভাবে ছিলেন না যতটা ছিলেন রবীন্দ্র, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্র। এমন সময় হাতে এলো খুব সম্ভবত একটা ইপি রেকর্ড। অনুপ ঘোষালের গাওয়া। তাই মধ্যে একটা গান ছিল “শূন্য এ বুকে পাখি মোর আয়”। বিভোর হয়ে গেলাম। সেই সময় একটা মিথ ছিল যে নজরুল নিজের ছেলের মৃত্যু নিয়ে গানটা লিখেছিলেন। মাকে বললাম সে কথা। স্কুলের লাইব্রেরি থেকে মা এনে দিল, “জ্যৈষ্ঠের ঝড়”। অচিন্তকুমারের সেই অনবদ্য লেখা। পড়লে বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে। গরমের ছুটির বিকেলের আকাশগুলোতে মেঘ ঘনিয়ে আসত। কবির জীবনের দুঃখ কষ্ট সংগ্রামের কাহিনীর রেশ ধরে। হতে পারেন নজরুল পাশের দেশের জাতীয় কবি। কিন্তু তিনি কেবল পাশের দেশের সম্পত্তি নন। তিনি এপার ওপার দুইপারের বাঙালির।
দ্বিতীয় ঘটনা তুলনায় সাম্প্রতিক। সেবার বাড়ি গেছি। বছরে দুবার যাওয়ার চেষ্টা করি, বাবা আর মায়ের জন্মদিনে। সেবার বাবার জন্মদিন। সন্ধ্যে বেলায় বাবাকে বললাম এই গানটা একটু শুনে দেখ। রাতে খাওয়া সেরে শুতে যাচ্ছি। দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলাম, স্টাডি রুমে বাবা ডেস্কটপে চোখ রেখে। ভিডিওটা চলছে। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গলায় অসাধারণ অর্কেস্ট্রা সহ। “কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া”। রবীন্দ্রনাথ জীবন্ত হয়ে উঠছেন। কলকাতায় ফিরে আসার পরেই খবর পাই বাবার শরীরটা বেশ খারাপ হয়েছে। পেস মেকার বসাতে হবে। ছুটি পেলাম না। ভাই সব সামলে দিল। বসানোর দিন সন্ধ্যায় বাবা আই সি ইউ তে ভর্তি।।সন্ধ্যে বেলায় ভাইয়ের কাছ থেকে খবর নিলাম। বাবা ভালই আছে। তবুও মনটা খুব খারাপ হল। পাঁচশ কিলোমিটার দূরে রাতের বেলায় শুয়ে পরে দেখলাম ঘুম আসছে না। কেবলই সেই দৃশ্যটা মনে আসছে। ডেস্কটপের সামনে বাবা। নিজের ল্যাপটপ অন করে চালিয়ে দিলাম। রেজওয়ানা কি অনায়াস সাবলীল কণ্ঠে স্পষ্ট উচ্চারণে গেয়ে চলেছেন অথচ কি অদ্ভুত মায়া মমতা ঘেরা, “চরণে ধরিয়া তব”। রেজওয়ানা কেবল বাংলাদেশের হতে পারেন না। তিনি এপার ওপার দুই পারের বাঙালির।
আজকের মতো এইখানেই শেষ। কিন্তু এই বাংলার সাথে ঐ বাংলার ভালোলাগার ভালোবাসার কাহিনী কোনো দিন শেষ হতে পারে না। সাহেবুলকে ধন্যবাদ একান্ত ব্যক্তিগত এই কথা গুলো বলার একটা সুযোগ করে দেয়ায় জন্য।












কী জানি রে ভাই।
না পেলাম বাপ রে না ভাই না বোন।
আর না মা রেও সেও সে তিনি থেকেও নেই
এই সংগ্রামমুখর পৃথিবীর কোণে কোণে তিনিও আর আমার জন্য নাই।সবই ঐ পিছলে পিছলে যাওয়ার ভাগ্য এই অধমের “চরণ ধরিতে দিও গো আমারে,নিও না নিও না সরায়ে”স্পর্শ করতে যাওয়ার এমন সব সম্পর্ক সরিয়ে দ্যান দিয়েছেন ভাগ্যবিধাতা।
তাই আর এইসব ফিলিং সাফল্য এটিকেট শুধু ছবি।
লেখার মধ্যের এক ছবি ফুটে উঠা অধরাই।
দারুণ। ❤️🙏
সত্যিই শেষ হতে পারে না। আর তার প্রধান যোগসূত্র হলো ভাষা।বাংলা ভাষা বাঙাল ভাষা।এর মতো আপন আর কী!
এই যে বাঙাল ভাষার দরদর জড়ানোর মিছরির স্বাদ এইই তো জুড়ে রাখে ওপার বাংলা এ পার বাংলাকে মূলতঃ। রেজওয়ানা বন্যা বাবা আলী সাহেব আর রবি ঠাকুর। নজরুল দিয়ে সেখানে আলাদা করার সেন্টিমেন্ট কে পিষে দিয়ে।
সুন্দর অভিব্যাক্তি।💏✍️
কী ব্যাপার বলতো!!কতদিন লেখো না।
লেখালেখিটা বন্ধ করার কী হলো!
কিহ্ আবার দোষ করলাম!!!😢🙏❤️
তুমি লিখলে মনটা ভালো থাকে।
লেখা টেনে বার করে আনো যে….
কি আর আছে বলো জীবনে ।খুব কমের মধ্যে চালাই
সহজ সরলে দিন কাটাই।