গত ০৯.০৭.২০২০ তে মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের ফলে সরকারি নোটিশ নিয়ে মেডিকেল কলেজের একাংশ করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুলে দেওয়া হয়। আন্দোলনের প্রাথমিক দাবি মেনে নেওয়ার ফলে অবস্থান বিক্ষোভ থেকে উঠে আসি আমরা৷
কিন্তু মূল যে সমস্যার কথা আমরা বারবার বলছিলাম যে গোটা রাজ্যজুড়ে (রাজ্যের কথাই আপাতত বলছি, গোটা দেশের অবস্থা বিচার করলে তা আরো ভয়াবহ) স্বাস্থ্যনীতির মধ্যে যে গলদ রয়েছে, করোনা মোকাবিলার মডেলের ক্ষেত্রেই বহু ত্রুটি রয়েছে, এবং তা সামলাতে না পারলে ভয়াবহ সমস্যার মুখোমুখি হব আমরা, সেই কথা গুলো কার্যত চাপা পড়ে যায়।
কিন্তু আমরা অবস্থান তুলে নিলেও ক্রমাগত ডেপুটেশন, বার বার সুপার, প্রিন্সিপাল এর সাথে কথা বলা, প্রেস রিলিজ এর মাধ্যমে আমাদের প্রস্তাবিত মডেল প্রকাশ ইত্যাদির মাধ্যমে কোভিড ও তার পাশাপাশি অন্য রোগীদের চিকিৎসার জন্য কি কি অবিলম্বে করতে হবে তা সামনে রাখি।
আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি প্রতিটি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য আলাদা ‘কোভিড ব্লক’ বানানোর কথা, যাতে করোনা পজিটিভ বা সাসপেক্ট রোগী দের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে হয়রানি না হতে হয়৷ বলা বাহুল্য, সরকারের তরফে কোনো কথা ই কানে নেওয়া হয় নি। আমরা বারবার বলি অবিলম্বে ত্রিস্তরবিশিষ্ট স্বাস্থ্যব্যবস্থা কে কাজে লাগানো হোক, কোভিড উইং খোলা হোক প্রতিটি হাসপাতালে, প্রতিটি টার্সিয়ারি হাসপাতালের ‘কোভিড উইং’ এ ভেন্টিলেটর, CCU বেডের ব্যবস্থা করতে হবে নাহলে কিন্তু ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে চলেছে।
এবং আমাদের আশঙ্কা সত্যি করে গত তিন দিনে এমন বেশ কিছু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটা শুরু হয়েছে যা আমাদের প্রস্তাব মানলে খুব সহজেই হয়তো এড়ানো যেত।
৭ই মে ‘কোভিড এক্সক্লুসিভ’ হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণার পর থেকে মেডিকেল কলেজের ইমার্জেন্সি কে যে কার্যত অকেজো করে রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা বারবার আমরা বলি। সেখানে খারাপ রোগী আসলে কিভাবে তার চিকিৎসা হবে সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষের কোনো হেলদোল কিন্তু আমরা দেখতে পাই নি। ০৯.০৭.২০২০ তারিখে আমাদের আন্দোলনের ফলে নোটিশ দিয়ে আউটডোর ও ইনডোর এডমিশন এর ব্যবস্থা হলেও ইমার্জেন্সি নিয়ে অস্পষ্টতা রেখে দেওয়া হয়।
বলে নেওয়া ভালো, চারটে হাসপাতালে ১০ ঘন্টা ঘুরে এসে শুভ্রজিৎ যে ইনসুলিন, হাইড্রোকর্টিসোন, ফ্লুইড পায় মেডিকেল কলেজের ইমার্জেন্সি তে তা কেবল মাত্র ডিউটি রত জুনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিত বুদ্ধিতে ও তৎপড়তায়। তারা CPR রুমে নিয়ে গিয়ে অত্যন্ত দ্রুততায় সেই চিকিৎসা দেন যা তার পাওয়ার কথা ছিল ১০ ঘন্টা আগে প্রথম হাসপাতালেই এবং কেবল মাত্র প্রশাসনিক জটিলতা ও যথাযথ নির্দেশিকার অভাবে তা সে পায় নি।
গত দু দিনে আমরা বারবার যাই সুপার, প্রিন্সিপাল এর কাছে, ইমার্জেন্সি যাতে অবিলম্বে কার্যকর হয় সে নিয়ে ডেপুটেশন দিই। এবং সেই চাপে আজ নোটিশ দিয়ে একটি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে যারা ইমারজেন্সি তে সমস্ত খারাপ রোগীদের চিকিৎসা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেবে ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করবে। আমাদের এই ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার ফলে কোনো মেডিকেল কলেজের জেনারেল ইমার্জেন্সি কার্যত আবার ‘অফিসিয়ালি’ চালু হল। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত কেন অনেক আগেই নেওয়া গেল না, এসি রুমে বসে স্বাস্থ্যনীতি নির্ধারকেরা ঠিক কি জন্য এত দেরি করলেন তা সত্যিই আমাদের অজানা।
তবে, একটা কথা স্পষ্ট যে রোগীস্বার্থে এরকম বহু দাবি আমরা এর পরেও আমরা আদায় করব। যতই মিডিয়া- সরকারি আমলা রা ডাক্তারদের দিকে আক্রমণের অভিমুখ ঘোরাতে চাক, আমরা প্রমাণ করতে থাকব আসল ত্রুটি কোথায় এবং শুধু এক্সপোজ করাই নয় সমস্যার সমাধানে সর্বশক্তি দিয়ে লড়ব।
#MCKRDA
#DoctorsForPeople
শেয়ার করছি
মানুষের জন্য অবশ্যই আপনারা ভাববেন কমরেড।
ভিতরের কথা আমরা জানতে
পারি খুব কম অথচ ভুগতে হয় আমদের ই।এর দোষ তার
উপর চাপাই। শেয়ার করলাম।