১৯ মার্চ ২০২৫ ভারতীয় সময় রাত তিনটে সাতাশ মিনিটে মার্কিন সরকারি মহাকাশ সংস্থা NASA এবং ইলন মাস্কের মালিকাধীন মার্কিন বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা Space X এর সম্মিলিত উদ্যোগে পূর্বঘোষিত সময়ক্ষণ মিলিয়ে যে নিখুঁত ও নিরাপদভাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) আট দিনের জায়গায় নয় মাস আটকে থাকা ভারতীয় ও স্লোভেনিয়া বংশোদ্ভুত মার্কিন নভঃশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস ও মার্কিন নভঃশ্চর বুচ উইলমোরকে মার্কিন ও রুশ নভঃশ্চর নিক হগ ও আলেকজান্দর গুরবুনভের সহায়তায় মহাকাশ থেকে মর্ত্যে নিয়ে এল তা এককথায় অনবদ্য এবং অসাধারণ দক্ষতা ও সাফল্যের পরিচয়।
তাক লাগানো ঘটনা: এর আগেও মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ইউরি গ্যগারিনকে ১৯৬১ তে মহাকাশে পাঠিয়ে, ১৯৬৯ এ নীল আর্মস্ট্রং কে চাঁদে পাঠিয়ে, ১৯৭৬ এ ভাইকিং১ মহাকাশ যানকে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে, ১৯৭৮ এ NASA (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), ROSCOSMOS (রাশিয়া), ESA (ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন), JAX (জাপান), CSA (কানাডা) এর সম্মিলিতে প্রচেষ্টায় মহাকাশের নিম্ন কক্ষপথে ISS স্থাপন করে আমাদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
এবার সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা থাকায় আমরা অবাক চোখে দেখতে পেলাম Space X নির্মিত Crew Dragon Spacecraft এর ISS এর পোর্টে ডকিং। নিকলে মান (নারী এবং প্রথম আমেরিকান ইন্ডিয়ান নভঃশ্চর), জোস কাসাডা (মার্কিন নভঃশ্চর) , কৈচি ওয়াকাতা (জাপানি নভঃশ্চর) ও আন্না কিকিনা (রুশ নারী নভঃশ্চর) দের ISS এ অবতরণ এবং মহাকাশ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার লক্ষ্যে আগামী ছয় মাসের জন্য সেখানে থেকে যাওয়া। সুনীতা, বুচদের Crew Dragon এ চড়া। তারপর আন – ডকিং। তারপর Advanced navigation, Real time data analysis, Computed programming ইত্যাদির সাহায্যে Crew Dragon এর পৃথিবীকে দ্রুত প্রদক্ষিণ করতে করতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে নিচের ট্রাংক অংশকে ছেড়ে heat shield বের করে প্রবল তাপমাত্রা থেকে নিজেকে বাঁচানো। তারপর গতি নিয়ন্ত্রণ করতে করতে শ্লথ হয়ে চারটি প্যারাসুটের সাহায্যে মেক্সিকো উপসাগরে নির্দিষ্ট জায়গায় জলের মধ্যে সফল Splash landing। তাদের ঘিরে কৌতূহলী শুশুকদের অভ্যর্থনা। US Marine, NASA ও Space X দলের স্পিড বোট ও জাহাজে উদ্ধার। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হেলিকপ্টারে করে হিউস্টন, টেক্সাসের কেনেডি স্পেস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জয়জয়কার: ২০০৩ এ কলম্বিয়া মহাকাশযানের দুর্ঘটনায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নভঃশ্চর কল্পনা চাওলা সমেত সাত জন নভঃশ্চরের মৃত্যুর পর বোয়িং এর পতন ও স্পেস এক্সের উত্থান, নাসার পশ্চাদপসরণ এবং মহাকাশ অভিযানের উদ্গাতা রুশদের আর্থ রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থার মধ্যেও মহাকাশে চর্চার ধারাবাহিকতা রক্ষা। ইলন মাস্কের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিধনী কর্পোরেটদের ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন, ক্ষমতার শীর্ষে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন, ট্রাম্প – পুতিনের নতুন সমীকরণ ইত্যাদি ঘটমান আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলির ভূমিকা থাকলেও সুনীতাদের প্রত্যাবর্তন নিয়ে এই সুপরিকল্পিত ও সুসংঘটিত অভিযান নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিরাট সাফল্য। অন্যদিকে চারিপাশে হিংসা, হানাহানি, যুদ্ধ, সংকটের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দের পরিবেশ।
এই সফল অভিযানের প্রভাব: নির্দিষ্টভাবে পরবর্তী মহাকাশযাত্রাগুলির ক্ষেত্রে এই অভিযান উৎসাহের সঙ্গে তথ্য, অভিজ্ঞতা ও বৈজ্ঞানিক আহরণগুলি যুক্ত করবে। সেরকমই আরোপিত রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও ব্যবসায়িক আবহের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ পুনরায় প্রমাণ করল।
মিশ্র জাতি ভারতীয়রা বুদ্ধিমান ও দক্ষ। কিন্তু লুটেরা বিদেশী কর্পোরেট ও দেশীয় পারিবারিক পুঁজি, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যবসায়ী এবং অপরাধী দালাল ও মাফিয়া চক্রের জাঁতাকলে থাকা ভারতবাসী একদিকে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অন্ধবিশ্বাস, ধর্ম, কুসংস্কার, নিয়তিবাদ, অন্যদিকে জাত জাতি ও সম্প্রদায়িক হিংসা, ধর্মীয় বুজরুকি, কুম্ভ, হজ, বলিউড, আইপিএল, নেশা, জুয়া, মোবাইলে সহজলভ্য পর্নো ইত্যাদিতে মজে রয়েছেন। সচেতন মানুষদের বোঝাতে হবে এরকম চলতে থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান প্রভৃতি প্রথম বিশ্ব এবং উদীয়মান বৃহৎ শক্তি চিনের সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে বিশাল ফারাকগুলি থেকেই যাবে শুধু নয়, আরও পেছিয়ে পড়তে হবে তাদের থেকে, তাদের উপর সব দিক দিয়ে আরও নির্ভরশীল গ্রহীতা ও দাস হয়ে থাকতে হবে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা: ” সবই ব্যাদে আছে ” (বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার অমর উক্তি) জাতীয় ধর্মীয় অবৈজ্ঞানিক গোঁড়ামি ও পরিবেশ, অতি সামান্য আর্থিক বাজেট বরাদ্দ, দুর্বল পরিকাঠামো, বিদেশী নির্ভরতা, ঔপনিবেশিক ও আর্যসমাজী পরম্পরা সত্ত্বেও গড়ে ওঠা শক্তিশালী শিক্ষাব্যবস্থাকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে ধ্বংস করে দেওয়া, অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত নেতা মন্ত্রীদের প্রতিনিয়ত হস্তক্ষেপ ও কৃতিত্ব দাবি ইত্যাদি হাজারো সমস্যা ও বাধার মধ্যেও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO, তার সহযোগী সংস্থাগুলি এবং ভারতীয় বিজ্ঞানীদের রয়েছে দুর্দান্ত সাফল্য।
ভারতীয় নভঃশ্চর রাকেশ শর্মার ১৯৮৪ তে রুশ মহাকাশযান সয়ুজে করে মহাকাশ যাত্রা থেকে শুরু করে চন্দ্রায়ন ১ (২০০৮), চন্দ্রায়ন ২ (২০১৯), চন্দ্রায়ন ৩ (২০২৩), মঙ্গলায়ন (২০১৪), আদিত্য এল ১ (২০২৩) অভিযান এবং INSAT series, IRS, PSLV, GSLV ইত্যাদি কৃত্রিম উপগ্রহ ও রকেট স্থাপন অনন্য কীর্তি। এর সঙ্গে চলছে চন্দ্রায়ন ৪ (২০২৭ – ২৮), গগনায়ন ইত্যাদি অভিযান এবং BAS, NISAR ইত্যাদি স্থাপনের প্রস্তুতি।
নারী প্রসঙ্গ: ভারতে যখন হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামি মৌলবাদ প্রভাবিত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য শাসকরা নারীকে পুনরায় ঘোমটা হিজাবে মুড়ে অন্তঃপুর বা হারেমে ঢোকাতে ব্যস্ত, নারীর উপর চলছে প্রতিনিয়ত পৈশাচিক আক্রমণ, সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য, রাজনৈতিক অপরাধীদের প্রশ্রয়ে উত্তর প্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ ধর্ষণের প্রতিযোগিতা, কলকাতার বুকে সরকারি মেডিকেল কলেজে অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ডা. তিলোত্তমাকে নৃশংস অত্যাচার করে হত্যা করা হচ্ছে এবং তাকে চাপা দিতে রাজ্য সরকার, সুপ্রিম কোর্ট, সিবিআই নেমে পড়ছে, যখন উপমহাদেশজুড়ে বর্বর মৌলবাদীদের নেতৃত্বে শরিয়ত ও খিলাফত শাসনের ধ্বংসযজ্ঞ (আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মাল দ্বীপ), বৌদ্ধ রাষ্ট্রের সন্ত্রাস (শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমার) এবং ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু রাষ্ট্রের হাতছানি (ভারত) দেখিয়ে সভ্যতাকে পেছন দিকে টানছে, তখন সমস্ত ভয়ংকর বিপদের মধ্যেও বারবার মহাকাশযাত্রা করে এবং পুরুষ নভঃশ্চরদের সঙ্গে সমানতালে ও দাপটের সঙ্গে মহাকাশ বিহার করে সুনীতা উইলিয়ামসরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন নারীর সঠিক অবস্থান। ১৯৬৩ তে রুশ নভঃশ্চর ও কমিউনিস্ট নেত্রী ভ্যালেন্টাইনা তেরেস্কোভা একাকী মহাকাশযানে বিশ্বকে ৪০ বার প্রদক্ষিণ করে যার সূচনা করেছিলেন, ISS গামী মহাকাশ অভিযানে ২৮০ জন নভঃশ্চরের মধ্যে ৭৫ জনের বেশি নারী নভঃশ্চরের উজ্জ্বল উপস্থিতি তাদের উৎকর্ষ জানান দিচ্ছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাতেও নারী বিজ্ঞানীদের অমূল্য অবদান।
আমাদের শিক্ষা: ভারত বিশ্বের সবচাইতে জনবহুল, সপ্তম বৃহত্তম, পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ, অন্যদিকে চরম বৈষম্যের দরিদ্র পশ্চাদপদ, মানব উন্নয়ন ও অন্যান্য উন্নয়ন সূচকে একদম পিছনের সারিতে থাকা একটি দেশ। এখানকার ১০% ধনী যাবতীয় সুখভোগ করেন, আর ০১% অতি ধনী প্রায় সমস্ত সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করেন। ইউক্রেন যুদ্ধের পর তারা রাশিয়ার থেকে অনেক সস্তায় অশোধিত তেল কিনে সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করে ও বিভিন্ন শোধনাগারে শোধন করে সমগ্র বিশ্বকে বিক্রি করে আরও ফুলে ফেঁপে উঠছেন।
এই বিশাল বৈচিত্র্যময় গণতান্ত্রিক দেশে নানারকম মতবাদ থাকবেই। কিন্তু সমাজের সচেতন শিক্ষিত অগ্রণী ও স্বাভাবিক নেতাদের (Natural leaders) (সচেতনভাবেই কলঙ্কিত মূল্যবোধহীন রাজনৈতিক নেতা, ধান্দাবাজ ক্ষতিকর ‘ বিদ্বজ্জন ‘ এবং অবাস্তব জগতে বিচরণ করা জনবিচ্ছিন্ন তথাকথিত ‘ বিপ্লবী ‘ দের বাদ দিলাম) উচিত যে যেখানে আছেন, যে দলে বা সংগঠনেই থাকুন না কেন, তার অঞ্চলের মানুষকে ধর্মীয় বুজরুকি ও নিয়তিবাদের বিপরীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পক্ষে সংগঠিত করা। পঞ্চায়েত থেকে রাজ্য সরকার হয়ে কেন্দ্র সরকার অবধি জনমতের চাপ সৃষ্টি করা। মন্দির – মসজিদ – মাদ্রাসা বা নিছক তাদেরই করের টাকায় দেওয়া খয়রাতি নয়, চাই সার্বিক আধুনিক শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য, পরিশ্রুত পানীয় জল, সঠিক পয়প্রণালী, বর্জ্য সংস্থাপন ব্যবস্থা, দূষণমুক্ত সুন্দর পরিবেশ, প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা, উপযুক্ত পরিকাঠামো ও গণ পরিবহন, পর্যাপ্ত বাসস্থান, প্রত্যেকের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, দুর্নীতি থেকে মুক্তি। নারী শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা, গবেষণার উপর জোর দেওয়া এবং এই খাতে যথেষ্ট বাজেট বৃদ্ধি করা। নচেৎ আমাদের দেশের প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষকে সমস্যায় রেখে, তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে, তাদের ধর্ম কুম্ভ হজ আইপিএল নেশা ইত্যাদিতে আচ্ছন্ন রেখে কিছু নেপো শুধুমাত্র দই মেরে যাবে।
ভুললে চলবেনা উন্নত গ্রীক সভ্যতার ধারক ইউরোপে মধ্য যুগে রোমান ক্যাথলিক চার্চের বর্বর অত্যাচারে ৯০০ বছর ধরে অন্ধকার যুগ চলেছে, লক্ষ লক্ষ যুক্তিবাদী, প্রতিবাদী, বিজ্ঞানী, পাগান সহ অন্য ধর্মের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সেই নরক যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করে ইউরোপকে রাহুমুক্ত করে ইতালির রেনেসাঁস, ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব আর ফ্রান্সের রাজনৈতিক বিপ্লব। গির্জাকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়, ধর্মকে ব্যক্তিগত স্তরে স্থান দেওয়া হয়, উত্থান হয় নিরীশ্বরবাদী নানাবিধ আধুনিক দর্শনের। তারপর থেকেই ইউরোপের এবং তাদের শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের যাবতীয় উন্নতি। অন্যদিকে মধ্যযুগে যখন ইউরোপ অন্ধকারাচ্ছন্ন তখন মানব সভ্যতার জ্ঞানের দীপশিখাকে প্রজ্জ্বলিত রাখেন বোগদাদকে কেন্দ্র করে ইস্পাহানি, দামাস্কাস, কায়রো প্রভৃতির আরব ইসলামি পণ্ডিতরা। মোতাজিলার মত উদারতাবাদী ইসলামি শাখা আধুনিক দর্শনকে শক্তিশালী করে। কিন্তু পরবর্তী মোঙ্গল আক্রমণ, মৌলবাদীদের ক্ষমতায়ন, অবিরত যুদ্ধ ও হিংসা মধ্য প্রাচ্যকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করে। বর্তমানে ইসলামের ভুবনে মার্কিন ও ইজরায়েল আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া, লেবানন, প্যালেস্টাইন কে দুরমুশ করছে আর সৌদি আরব ও কাতার মার্কিনের সঙ্গে থেকে এবং ইরান রাশিয়ার সঙ্গে থেকে তেলের টাকায় আফ্রিকা আর এশিয়ার গরীব দেশগুলিতে বিষাক্ত জিহাদ, নিষ্ঠুর হিংসা ও ভ্রাতৃঘাতী গৃহযুদ্ধ রপ্তানি করছে।
সর্বমান্য ভারতীয় রাজনীতিকদের মধ্যে সুভাষচন্দ্রের সবচাইতে ভালো বিদেশের অভিজ্ঞতা ছিল। ব্রিটিশের মান্দালয় জেল থেকে ফিরে অসুস্থতার জন্য তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে অনেকটা সময় ইউরোপে কাটান। দেশে ফেরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও ছিল। তিনি ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তুরস্কের মত কিছুদিন সামরিক কর্তৃত্ববাদের মাধ্যমে দেশ গঠনের কথা বলেছিলেন। কারণ তিনি কামাল আতাতুর্কের অসাধ্য সাধনগুলি দেখেছিলেন। খলিফা অনুগত ধর্মীয় পশ্চাদপদ দেশ থেকে ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করে, বাধ্যতামূলক বিনামূল্যে সার্বিক ও নারী শিক্ষা প্রবর্তন করে, নারীকে পর্দা ও অন্তঃপুর থেকে বের করে সমান মর্যাদা দিয়ে, আধুনিক শিক্ষা ও শিল্প প্রতিষ্ঠা করে তুরস্ককে তিনি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করেন। তাই আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও পথ হোক ধর্মের নয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির।
২০.০৩.২০২৫