পূর্বপ্রকাশিতের পর
বুড়ো ডাক্তার সামনে আর পিছে চলে বাপ ব্যাটা। একটু এগিয়েই রবির দোকান। বড় গামলায় চা হচ্ছে আর থরে থরে সিগারেটের প্যাকেট। ডাক্তার বসলেন গ্যাঁট হয়ে। সামনে দুজন উৎসুক শ্রোতা।
“নারী পুরুষের ভেদ কি জিনিস ডাক্তার বাবু?”
ডাক্তার সবাইকে চা পরিবেশন করে ধূমায়িত সিগারেটের আগুনে শুদ্ধ হয়ে শুরু করলেন
“যেই মুহূর্তে শরীরে যৌন হরমোন বেরোতে শুরু করে তক্ষুনি প্রাথমিক এবং ইয়ে সেকেন্ডারি। প্রাথমিক মানে জন্মগত যৌনাঙ্গগুলোর বড়ো এবং ম্যাচিওর্ড হওয়া। এছাড়া সেকেন্ডারি মানে ছেলেদের ক্ষেত্রে বদমেজাজি রাগী হওয়া। কপালের দুপাশে একটু চুল কম হয়ে যাওয়া। কাঁধ চওড়া হওয়া। গোঁফ, দাড়ি, যৌনকেশ এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ভল্লুকের মতো লোম গজানো। মেয়েদের ক্ষেত্রে বুকের দুগ্ধগ্রন্থি বড়ো হওয়া, অক্সিটোসিন, ইস্ট্রোজেন এবং অন্যান্য হর্মোন দিয়ে মাতৃভাব হওয়া – এমনকি প্রসবকালীন সুবিধার জন্য চওড়া কোমর। এবং সবচেয়ে বড়ো কথা মাসে একটা করে ডিম্বাণু পরিণত হয় এবং আশ্চর্য ব্যাপার হলো যদি ডিমটা পুরুষ বীর্যের সাহায্যে ভ্রূণে পরিণত হয় তাহলে অনাগত সন্তানের পুষ্টির জন্যে জরায়ুর ভেতরে প্ল্যাসেন্টার মতো একটা জিনিস তৈরি হয়। প্রকৃতি কি মজার তাই না? বাচ্চা হবে কি হবে না তার ঠিক নেই অথচ প্রতিটি মাসে একবার করে অনাগত সন্তানের জন্য গোটা নারী শরীরটা বদলে যায়।”
ঘটকর্পর প্রশ্ন করে, “আচ্ছা ঐ যেটা প্রতি মাসে তৈরি হয় সেটা….তারপর সেটার কি হয়?”
ডাক্তার কিছুক্ষণ গোলগোল চোখে চেয়ে থাকেন,
“চমৎকার প্রশ্ন। এটা হবে উইপিং অভ দ্য ইউটেরাস ফর দ্য আনফার্টিলাইজড ওভাম– না তৈরি হওয়া সন্তানের জন্যে জরায়ুর কান্না।”
“তার মানে?”
“অর্থাৎ পিরিয়ড মেনস্ট্রুয়েশন বা মাসিক।”
“এটাই মাসিক? রক্ত… ঐ যে লোকে বলে এটা… অপবিত্র নোংরা?”
“হ্যাঁ হে ছোকরা, এটা হলো অনাগত সন্তানের জন্য জরায়ুর কান্না– আবার প্রস্তুতি চলবে পরবর্তী চক্রের জন্যে। নতুন করে জরায়ুকে সাজিয়ে তোলা প্রতি ঋতুচক্রের সময়।”
ঘটকর্পর অনেক ভেবেচিন্তে প্রশ্ন করে “আমার যে কখনও কখনও রাতে ঘুমের মধ্যে ইয়ে মানে ইয়ে হয়ে যায়– সেটা কি?”
ডাক্তার হাসেন, “স্বপ্নদোষ? প্রতি মুহূর্তে আমাদের মানে পুরুষের শরীরে বীর্য তৈরি হচ্ছে। সেটা একটা থলির মধ্যে জমা হয়ে থাকে। যখন থলিটা ভর্তি হয়ে যায় তখন ওটা উপচে বেরিয়ে আসে। এটা ভীষণ স্বাভাবিক একটা ঘটনা– এটাই স্বপ্নদোষ। মজার ব্যাপারটা জানো?”
ঘটকর্পরের বাবা অনেকক্ষণ পর প্রশ্ন করেন,
“এর মধ্যে মজার ব্যাপার আবার কি?”
“মজা হলো যে সাধারণতঃ যে পুরুষের কোনোদিন স্বপ্নদোষ হবে না তার পুরুষত্ব নিয়ে একটা প্রশ্ন উঠে আসে। এবং এই অতিরিক্ত বীর্য বা যৌন চাহিদা মেটাতে অবিবাহিতদের মধ্যে মানে নারী পুরুষ নির্বিশেষে হস্তমৈথুন খুব স্বাভাবিক ঘটনা।”
ঘটকর্পরের প্রশ্ন–“তাহলে আমি নিশ্চিন্তে ওটা ইয়ে করতে কোনও…..”
ডাক্তার উঠে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে থাকা লাইটার দিয়ে ফ্লেকের মুখে অগ্নিসংযোগ করে বললেন,
“ঋত্বিক ঘটকের নাম শুনেছো? দারুণ প্রতিভাবান চিত্র পরিচালক যিনি নিজেকে ভাঙ্গা বুদ্ধিজীবী বলতেন?”
বাপ ব্যাটা দুজনেই জানায়– হ্যাঁ জানে।
“বলেছিলেন আর্ট ফর আর্টস সেক ইজ লাইক মাস্টারবেশন। অন্য কাউকে সুখ দেওয়ার নেই– কোনও ফল নেই– স্রেফ নিজের সুখ। তাই নিয়মিত ঘন ঘন আত্মরতি অনেক সময় বিবাহিত জীবনে ঝামেলা পাকায়। কেন না সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে সন্তুষ্ট করার ইচ্ছে আস্তে আস্তে কমে আসে। কেন না এই পদ্ধতিতে সহজেই নিজের শারীরিক সুখ হয়ে যাচ্ছে।”
ঘটকর্পরের বাবা বললেন “বাবা ঘটু, অনেক ইয়ে হয়েছে, এবার চলো একটু পড়তে বসে আমায় ধন্য করো।”
আধবুড়ো ডাক্তারও বিস্কুট কিনে কুকুরছানাকে খাওয়াতে চললেন।
অথ যৌনবিদ্যা সর্গস্য পরিসমাপ্তি ।