কোভিডের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগেই। ইন্ডিয়া অলরেডি ব্রোঞ্জ পদকের দাবিদারও হয়ে গেছে ওয়ার্ল্ডের নিরিখে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে অক্টোবরে পিক এলে সেখানে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে এফেক্টেড হতে চলেছেন ১০-৪৬% মানুষ। তার মানে ঠিক কতজন? পশ্চিবঙ্গের জনসংখ্যা ১০ কোটি ধরলে অন্তত ১ কোটি মানুষ কোভিডে এফেক্টেড হতে চলেছেন আর কিছুদিনের মধ্যেই।
আচ্ছা এই ১ কোটি মানুষ পজিটিভ জানার জন্যে কতগুলো টেস্ট করতে হবে? পরিসংখ্যান বলছে প্রতি ২৫ জনে র্যান্ডামলি টেস্ট হলে ১ জন পজিটিভ আসবেন এখনকার পরিস্থিতিতে। তার মানে অক্টোবরের মধ্যে করতে হবে ২৫ কোটি টেস্ট! ( ১ঃ২৫ এই অনুপাত দিনে দিনে কমবে) মানে এখন থেকে প্রতি মাসে করতে হবে প্রায় ৬ কোটি টেস্ট,আইডিয়ালি। ধরে নিলাম প্রতি মাসে ১ কোটি টেস্ট করতে হল। তাহলে প্রতি দিন কটা করে টেস্ট করতে হবে? প্রায় ৩ লাখ!
এখন কত হচ্ছে? প্রতিদিন ১০-১২ হাজার!
তাহলে দরকার টেস্টের ট্রায়াজ। মানে সিম্পটম দেখে টেস্ট! র্যান্ডাম নয়। কিন্তু এখনকার মডেলে এই পরিমাণ পেশেন্ট বা সাসপেক্টেড সারা রাজ্য থেকে কোথায় আসছেন? মেডিকেল, বাঙুর, সাগর দত্ত!
সরকারের এক্সক্লুসিভ করার মোডেলে ঠিক কতটা ঘাটতি আশা করি বোঝা যাচ্ছে এবার কিছুটা। এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিনের মধ্যেই এই ২-৩ টে হাসপাতালে বেড শেষ হয়ে যাবে, তারপর? NRS, RG Kar, SSKM? একটার পর একটা টার্শিয়ারি সেন্টার নিতে থাকলে গোটা ব্যবস্থা ভেঙে পড়া শুধুই সময়ের অপেক্ষা!
কিন্তু যদি আমরা আশা কর্মীদের হাতে পালস অক্সিমিটার দিয়ে দিতে পারি একটা করে। ওই এলাকায় কার কার জ্বর, কাশি হয়েছে দেখে তাঁরা যদি স্যাচুরেশন দেখে মনিটর করেন রোজ। একটু খারাপ দেখলেই প্রাইমারি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যান পেশেন্টকে, তারপর সেখান থেকে যাদের অবস্থা ক্রিটিকাল তারাই যদি টার্শিয়ারি সেন্টারে আসেন? যে রেফারেল সিস্টেম এতোদিন ধরে সমস্ত রোগের ক্ষেত্রেই হয়ে আসছে একমাত্র সেটা করে কোভিড ম্যানেজ করা সম্ভব না হলে অচিরেই স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, একটার পর একটা টার্শিয়ারি সেন্টার এভাবে নিতে থাকলে নন কোভিড পেশেন্টরা চিকিৎসা পাবেন না, তাতেও আসলে বেড়ে যাবে কোভিডের মৃত্যু হার!
এই স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আমরা ভেঙে পড়তে দিতে পারি না, সরকারের কাছে আওয়াজ পৌঁছে দিতে হবে যে এক্সক্লুসিভ মডেল নয়, প্রিএক্সিস্টিং ডিসেন্ট্রালাইসড মডেলেই একমাত্র কোভিডের চিকিৎসা সম্ভব আর তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো বানানো সরকারের দায়িত্ব! না হলে আর ১ মাসের মধ্যে হয়তো এই মডেলে শেষ হয়ে যাবে NRS, RG Kar, SSKM বা ন্যাশনালের মত আর একটা প্রিমিয়ার ইন্সটিটিউট, নন কোভিড রোগীরা কোথাও পরিষেবা পাবেন না, ক্রিটিকাল কোভিড পেশেন্টকে শুনতে হবে বেড নেই।
এই পরিস্থিতি তৈরি যাতে না হয় তাই এই প্রতিরোধ। অবস্থান চলছে মেডিকেলে মানুষের স্বার্থে, স্বাস্থ্যব্যবস্থার স্বার্থে। পাশে দাঁড়ান এই আন্দোলনের, ভেসে যেতে দেবেন না এই ব্যবস্থাকে শুধু পলিটিক্যাল গিমিকের স্বার্থে!
শুধু ডাক্তার বা নার্স নয়, পাশে দাঁড়ান সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের অধিকারের জন্য। হাসপাতালের গ্রুপ ডি স্টাফ বা গ্রামের আশা কর্মীরাও এই লড়াই এ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মেডিক্যাল কলেজের এই আন্দোলন তাদের অধিকার নিয়েও।
লড়াই চলছে ✊
এটা সবাই শেয়ার করুন ।