করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই অনেক তথ্য আপনারা জেনে গেছেন। কাকে বলে SARS-COVID19 এবং সেই সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য। আমার কাজ মূলত করোনা রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা এবং routine peripheral blood দেখা। এত বড় অসুখ তার এত এত গবেষণা পত্র। কবে ভ্যাকসিন বেরোবে, কি বা এর প্রতিকার তা খুঁজে চলেছেন একদল মানুষ দিনরাত এক করে। সেখানে মামুলি সেই চেনা TC DC ESR র গল্প শোনালে সুখপাঠ্য হয় মশাই? দুবেলা আমারও এই একঘেয়ে নিউট্রোফিল আর লিম্ফোসাইট গুনতে একদম ভালো লাগে না। তাই আমিও একটু এদিক ওদিক চোখ রাখলাম।
যে কোন ভাইরাল সংক্রমণের বিরূদ্ধে একদম দেশের সীমানার জওয়ানদের মতো দাঁড়িয়ে থাকে স্বাভাবিক অনাক্রম্যতা। আর স্বাভাবিক অনাক্রম্যতার অনুগত সৈনিক হল NK Cells বা Natural Killer Cell এবং তারপর আসে CD8 Lymphocytes। এরা অর্ডার পেলেই শত্রু নিকাশ করে। আর ফ্রন্ট লাইন সৈনিকদের মধ্যে আছে নিউট্রোফিল। কিন্তু আগের দুজনের বুদ্ধি একটু বেশি। বাছাই করে যেসব কোষে ভাইরাস ঢুকে পড়ে তাদের টার্গেট করে নিকেশ করা কাজ। অন্যদিকে নিউট্রোফিল একবার আক্রমণে নামলে আপন পর জ্ঞান থাকে না। COVID-19 করছে কি তিনটি যৌগের মাত্রা ( Cytokine) বাড়িয়ে তুলছে। তাদের নাম Interleukin 6, Interleukin 8, Interleukin 10। এই তিনজন করছে কি একটু কম বুদ্ধি সম্পন্ন নিউট্রোফিলকে সক্রিয় করছে। অন্যদিকে NK Cell এবং CD8 T Cell কে নিস্ক্রিয় করে তুলছে এবং তাদের মৃত্যু ত্বরান্বিত করছে। তাদের এই নিষ্ক্রিয় হয়ে ওঠায় আবার কাজ করছে ঘর শত্রু বিভীষণ NKG2A receptor। ফলে অতিসক্রিয় নিউট্রোফিল ফুসফুস, রক্তজালক সব জায়গাতে হানা চালাচ্ছে। সেই হামলার পারিপার্শ্বিক ক্ষতি হিসেবে শরীরের কোষই আক্রান্ত হচ্ছে। ফুসফুসে নিউমোনিয়া হচ্ছে। রক্তজালক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফলে রক্ত তঞ্চন প্রবণতা বাড়ছে। ফুসফুসে থাকা অন্য সব সুযোগ সন্ধানী অনুজীবানুও আক্রমণ করেছে। আমরাও হাত ধুয়ে বসে নেই বিভীষণকে আটকানোর এক ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। NKG2A কে আটকাতে পারে এমন একটি ওষুধ হল Monalizumab। সময় বলবে এর কার্যকারিতা।
যা বলতে এত কথা বললাম। এই যে এত কান্ড এর ফলে হচ্ছে কি রক্তে লিম্ফোসাইটের সংখ্যা কমে যাচ্ছে আর নিউট্রোফিলের সংখ্যা বাড়ছে। Total WBC count আর সাথে Neutrophilia অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ। অন্যদিকে লিম্ফোসাইটের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশী থাকছে যাদের তারা লক্ষণহীন থাকছে।
চিরাচরিত TC DC ESR তাই এত এত বড় বড় টেস্টের মাঝে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না। বরং রিপোর্টের সাথে রোগের লক্ষণ মিলিয়ে আপাতভাবে সুস্থ কোন কোন রোগীর একটু বিশেষ খেয়াল দরকার তাও বোঝা সম্ভব হবে এই একটি অতি সাধারণ পরীক্ষা থেকেই। তবে এই বিষয়ে আরো গবেষণা দরকার।
LDH, Procalcitonin, Ferritin level এর কি ধরণের change expected in COVID-19:, Deterioration হলে parameter গুলোর কি পরিবর্তন হয়??