আইসিসিইউ। কনকনে ঠাণ্ডা ঘর। সাদা বিছানা। বুক অবধি সাদা চাদরে ঢাকা। ডাক্তার, নার্সদের চাপা স্বরে কথা বলা। সারি সারি বিছানার। মাঝে সাদা পর্দা। কারও হাতে স্যালাইনের টিউব, কারও ক্যাথিটার, কারও মুখে অক্সিজেন মাস্ক কেউ বা ভেন্টিলেশনে। শুধু মেশিনের বিপ বিপ শব্দ। মনিটরে সবুজ আলোর কিছু সংখ্যা। ইসিজি গ্রাফ উঠছে নামছে। কখনো সেটা স্ট্রেট লাইন হয়ে যাচ্ছে।। তখন সাদা চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির লোকের ভিতরে ঢোকার অনুমতি নেই। ভিতরে অনিশ্চয়তা। বাইরে উৎকণ্ঠা। কারোর কোনও পরিচয় নেই। কেউ কারও বাবা, মা, ছেলে বা মেয়ে নয়। সবাই এক একটা বেড নম্বর। এরা কেউ ভোট দিতে যাবে না। কে জিতলো, কে হারলো কেউ জানে না।
ভিতরে যদিও একটা লড়াই চলতে থাকে। নিজের জন্য নয়, অন্যের জন্য। কীভাবে একজন রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায় সেই লড়াই।
ব্রাজিলে দিনে প্রায় চার থেকে ছয় হাজার মৃত্যু। ওয়ার্ড ভর্তি। সবাই চায় একটু আপনজনের স্পর্শ, ভরসা। তাই ওয়ার্ডের নার্সরা সঙ্গীবিহীন করোনা রোগীকে হাতে দুটো জলভরা গ্লাভস ওপর নীচে রেখে দিয়েছেন। এই কঠিন নিঃসঙ্গ সময় এইটুকু স্পর্শই রোগীদের স্বস্তি। ভাবছেন, এটা মানবিক ছবি? তাহলে বাইরের সেই অমানবিক ছবির কথা ভাবুন, যাঁদের দায়িত্বহীন কাজকর্ম এতগুলো মানুষকে এই জীবনমরণের যুদ্ধে ঠেলে দিয়েছে। ভোট বড় বালাই। আরও বড় বালাই কাছের লোকেদের নিয়ে সুস্থভাবে হাতে হাত রেখে বেঁচে থাকা। ভয় পান। নিজের জন্য না হলেও পরিবারের জন্য।