ইউক্রেন: দুই বৃহৎ শক্তির মাঝে অবস্থিত বাফার রাষ্ট্র গুলির বাঁচার একমাত্র রাস্তা ভারসাম্য রাখার দক্ষতা। উদাহরণ, ভুটান। ইউক্রেন ছিল খনিজ, শিল্প, কৃষি, শক্তি, ক্রীড়া, মানবসম্পদ, পারমাণবিক সম্পদ, পর্যটন, বন্দর প্রভৃতিতে বলীয়ান, সারা বছর ব্যবহার্য উষ্ণ সাগর বেষ্টিত, ইউরোপে অবস্থিত, সোভিয়েত রাশিয়ার স্বর্ণডিম্ব প্রসবকারী অঙ্গ রাজ্য। ১৯৯১ এ সোভিয়েত পতনের পর সমস্ত অঙ্গরাজ্যগুলি স্বাধীন হয়, ইউক্রেনও হয়। তারপর ‘ কমলা বিল্পব ‘ সহ নানা রাজনৈতিক টানা পোড়েন চললেও সে স্বাধীনই ছিল। কিন্তু কৌতুক অভিনেতা পরিবর্তিত রাজনীতিক জেলেনস্কি ক্ষমতায় এসে সরাসরি মার্কিন ক্যাম্পে নিজেকে সঁপে দেওয়ায় এবং ‘ ন্যাটো ‘ র লেজুড় হয়ে যাওয়ায় ইউক্রেন ও ইউক্রেনবাসীর উপর এই ভয়ানক বিপর্যয় নেমে আসে। এরপর রাশিয়া কয়েকবার আলোচনা ও যুদ্ধ বিরতির ইঙ্গিত দিলেও পেন্টাগনের চাপে জেলেনস্কি প্রশাসন আরও বেশি করে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে আরও ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনে।
গাজা, ওয়েস্ট ব্যাংক, প্যালেসটাইন: প্যালেসটাইন এর জন্য সবচাইতে সংগঠিত আন্দোলন শুরু হয় ১৯৬৪ থেকে যখন ফাতা, PFLF, DFLP, PPP, PLF, ALF ইত্যাদি গোষ্ঠী গুলি একত্রিত হয়ে Palestine Liberation Organisation (PLO) তৈরি করে। PLO এর আদর্শ ছিল বাথিজম ও মার্কসইজম। নেতা ছিলেন জর্জ হাবাস, নায়েফ হায়াতমের মত বামপন্থী। পথ ছিল সশস্ত্র সংগ্রাম।
২৪ বছর ধরে বহু সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের পর নিজেদের জীবন থেকে ইয়েসের আরাফত ও মাহমুদ আব্বাসের মত নেতারা বুঝলেন কেবলমাত্র সশস্ত্র সংগ্রাম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – ইজরায়েল এর মত বড় সামরিক শক্তির সঙ্গে পেড়ে ওঠা সম্ভব নয়। তারপর আলোচনা চালিয়ে গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংক নিয়ে তৈরি হল প্যালেসটাইন রাষ্ট্র।
ইজরায়েলের অত্যাচার, ইনতিফিদা সহ নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়েও পাশাপাশি দুটি দেশ ক্রমশ সহনশীল হয়ে উঠেছিল। সৌদি, জর্ডন, ইজিপ্ট, প্যালেসটাইন, ইজরায়েলকে নিয়ে একটি সহযোগিতা বলয় সৃষ্টির কথাবার্তা শুরু হয়েছিল। এরমধ্যে গাজার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা কট্টরপন্থী ইসলামি হামাস তার সশস্ত্র বাহিনী আল – কাশেম বিগ্রেডকে দিয়ে ৭ অক্টোবর ২০২৩ ইজরায়েল আক্রমণ করল। তখন আমাদের রাজ্যের বামপন্থী কয়েকজন বন্ধু আনন্দে খুব উদ্বেলিত হলেন। তাঁদের একটাই মন্তব্য করেছিলাম এর ফল হবে সাংঘাতিক। আমেরিকা ও ইজরায়েল গাজাকে ধ্বংস করে দেবে।
গাজা ও গাজার মানুষের কি অপরিসীম ক্ষতি হয়েছে ও হয়ে চলেছে আর নতুন করে বলে বোঝাতে হবেনা। আমার ধারণা মাটির তলায় তৈরি করা বোমা নিরোধক কংক্রিট টানেলে ইজরায়েলি নাগরিকদের বন্দী করে না রাখলে বাইডেনের আমেরিকা ও নেতানিয়াহুর ইজরায়েল আরও বেশি আক্রমণ চালাত। এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের অভিঘাতে শুধু গাজায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি নয়, হামাস ও হিজবোল্লাহ তার সমস্ত প্রথম সারির নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব হারিয়েছে। লেবানন ও ওয়েস্ট ব্যাংক অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়া থেকে ৫০ বছরের রাশিয়া ও ইরান সমর্থক আসাদ রাজত্বের অবসান হয়েছে। ইরান তার প্রেসিডেন্ট, বহু জেনারেল এবং ইরান থেকে ভূমধ্যসাগর অবধি শিয়া বলয় হারিয়েছে। হুথির বেশ কিছু ঘাঁটি গুড়িয়ে গেছে। রাশিয়াকে পশ্চিম এশিয়ার ঘাঁটিগুলি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। ইজরায়েলে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র (বেশিরভাগ মাঝ আকাশে আমেরিকা নিষ্ক্রিয় করে দেয়) ছোড়ার প্রত্যাঘাতে তেহরানের পার্শ্ববর্তী সেনাঘাটিতে বিনা বাধায় কিছু নমুনা ক্ষেপণাস্ত্র ফেলে মার্কিন ও ইজরায়েল ইরানকে সতর্ক করে দিয়েছে যে মার্কিন উপগ্রহ এবং ইজরায়েলি বিমানবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্রর কাছে তারা কতটা অসহায়। আর এখন ট্রাম্প সাংবাদিক বৈঠক করে গাজা কে ইজরায়েলের হাতে তুলে দেবেন বলেছেন।
উত্তর পূর্ব ভারত: আলফা স্বাধীন সহ কয়েকটি গোষ্ঠী ছাড়া, যারা দেশে গণভিত্তি হারিয়ে ফেলে চিন ও মায়ানমারের বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির আশ্রয়ে থাকতে হচ্ছে, বাকিরা সাত দশকের অভিজ্ঞতায় পুষ্ট হয়ে অস্ত্র ছেড়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। বিগত অসম ভ্রমণের ফাঁকে নাগাল্যান্ডে ঢুকে দেখে এলাম এন.এস.সি.এন. (আই – এম) এর মত বড় ও শক্তিশালী জঙ্গি সংগঠন কিভাবে শান্তিপূর্ণ সহবস্থান করছে। মনিপুরে সরকার এবং মেইতি ও কুকি উগ্রপন্থাকেও বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি ও ঘটে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতির পুনরাবৃত্তির অবসানে হিংসা বর্জন করে আলোচনার টেবিলে বসার দিকেই এগোতে হচ্ছে।
দণ্ডকারণ্য: যতই আবেগ ও আত্মত্যাগ থাক ৭০ দশকের নকশাল আন্দোলন এবং ২০০০ এর প্রথম দশকের মাওবাদী আন্দোলন বহু ছাত্র – যুব – গরীব আদিবাসীর মৃত্যু ছাড়া কোন আর্থ – সামাজিক পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। কোনটাতেই কোন বড় মাপের ব্যবসায়ী, নেতা, সমাজবিরোধী, পুলিশ অফিসারের কোন ক্ষতি হয়নি। দণ্ডকারণ্য ব্যতিক্রম।
তাঁদের শক্ত ঘাঁটি দণ্ডকারণ্যের বিস্তৃত পাহাড় অরণ্যে এখনও মাওবাদীরা সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ আছেন। প্রথমে কংগ্রেস ও তারপর বিজেপি সরকার ধারাবাহিক সামরিক আক্রমণ চালিয়ে তাঁদের সক্রিয়তা আবুঝমারের চারপাশের একটি বৃত্তে নিয়ে এসেছে। চলপতির মত নেতাদের একে একে হত্যা করা হচ্ছে। সুতরাং এর ভবিষ্যত খুব একটা সুখকর নয়। প্রতিনিয়ত গরীব নিরপরাধ আদিবাসীদের মৃত্যু তো হচ্ছেই। তার সঙ্গে চলছে উচ্ছেদ, যাবতীয় মানবাধিকার হরণ। কোন গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড সরকার ও মাওবাদীরা সেখানে বরদাস্ত করে না। হিমাংশু কুমার, সোনি সোরি, ডা. বিনায়ক সেনদের সেখানে কাজ করার কোন জায়গা দেওয়া হয় না।
মাওবাদীদের বুঝতে হবে বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির যুগে (উপগ্রহ, ড্রোন, সার্ভিলেন্স এয়ারক্রাফট, টেলিকম, অন্তর্জাল, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস …) ভারতীয় সামরিক বাহিনীর মত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও চতুর্থ শক্তিশালী বাহিনীর সঙ্গে শুধুমাত্র যুদ্ধ করে ইতস্তত কিছু গেরিলা সাফল্য মিললেও অন্তিমে পরাজয় অবধারিত। অথচ অন্ধ্রপ্রদেশে দেখে এসেছি সীতারামাইয়ার নেতৃত্বাধীন পি.ডব্লিউ.জি এবং চন্দ্র পুল্লা রেড্ডির নেতৃত্বাধীন সিপিআই এমএল এর কৃষক – জনজাতি গেরিলা কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ছাত্র, জনজাতি, সাংস্কৃতিক, মানবাধিকার সংগঠনগুলি কত শক্তিশালী ছিল এবং তাঁদের প্রচুর গণ উদ্যোগ ও গণভিত্তি ছিল শহর ও গ্রামে। সেগুলি হারিয়ে ফেলা হয়েছে। তাই বর্তমান চক্রব্যূহ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে সংসদীয় সিপিআই দল কর্তৃক তাঁদের শতবর্ষ উদযাপনে মাওবাদীদের
দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে মাওবাদীদের আলোচনার প্রস্তাব একটি সদর্থক পদক্ষেপ।
এবং বাংলাদেশঃ মধ্য যুগে বোগদাদ – ইস্পাহান – দামাস্কাস – কায়রো – কর্ডোবা (স্পেন) কে কেন্দ্র করে যে ইসলাম গ্রিসের প্রজ্ঞাকে বাঁচিয়ে রেখে সারা বিশ্বকে জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোকে উদ্ভাসিত করেছিল তা আজ তেলের টাকায় ধনী হওয়া সৌদি, কাতার, ইরানের পশ্চাদপদ মৌলবাদী অশিক্ষিত অত্যাচারী পিতৃতান্ত্রিক আমির ও কট্টর ধর্মীয় নেতাদের প্রশ্রয়ে সারা বিশ্বে ধর্মান্ধ মৌলবাদী সন্ত্রাসের বংশ বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে বিশেষত আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের গরীব অনুন্নত অশিক্ষিত দেশগুলিতে।
বাংলাদেশে হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসান প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অসাধারণ মানবিক, আর্থিক, স্বাস্থ্য, শিল্প ও অন্যান্য জাতীয় অর্জনগুলি ঘটেছিল সেগুলি এবং স্বাধীনতা ও বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে ধ্বংস করে গুঁড়িয়ে দিয়ে দেশকে পেছিয়ে বর্বর মধ্যযুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া ভয়ঙ্কর মূর্খামি ও অপরাধ। তার উপর উগ্রধর্মান্ধ মৌলবাদী ইসলামি জিহাদি, সন্ত্রাসী, তালেবান, রাজাকার, জামাত, হেফাজতে, তৌহিদি ইত্যাদিদের দ্বারা, ইউনুস সরকারের সক্রিয় সহযোগিতায় এবং চিন, পাকিস্তান, সৌদি, কাতারি, তুর্কি, মার্কিন প্রশ্রয়ে বিরোধী, প্রতিবাদী, সাংবাদিক, হিন্দু, বৌদ্ধ, জনজাতি, খ্রিস্টান, বাউল, ফকির, আহমদিয়া, সুফিদের এবং নারীর উপর অত্যাচার, খুন, ধর্ষণ এক ভয়ানক সামাজিক বিপর্যয়ের জন্ম দিয়েছে। তাঁর নেতিবাচক দিকগুলি সত্ত্বেও হাসিনা দীর্ঘসময় ধরে যে সুস্থিতি ধরে রাখতে পেরেছিলেন সেটি নষ্ট করে এক চূড়ান্ত অস্থিরতা, নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, লুঠ, জল্লাদ ও ধর্ষকদের দের উল্লাসক্ষেত্র এবং ভারতবিরোধী শক্তির সক্রিয়তা কেন্দ্র হয়ে উঠেছে আজকের ইউনুস ও তথাকথিত ‘ ছাত্র জনতার ‘ বাংলাদেশ। এদের স্থূল বুদ্ধি ও সংকীর্ণতা একটি সম্ভাব্য এই অঞ্চলে আবার একটি যুদ্ধক্ষেত্র ও বিদেশি বৃহৎ শক্তির চারণভূমি হয়ে ওঠার পূর্বশর্ত তৈরি করছে। সেটি যেমন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং এর ফলে ভারত বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরামের মত সীমান্ত রাজ্যগুলির বিশেষ করে অবারিত সীমান্ত, আইন শৃঙ্খলার অবনতি সম্বলিত এবং এক তৃতীয়াংশের বেশি মুসলমান জনসংখ্যার পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে পরিস্থিতি আগামীদিনে খুবই ক্ষতিকর হয়ে উঠবে।
অবিলম্বে ভারত সরকারের উচিত নীরব দর্শক অথবা ট্রাম্প নির্ভর না থেকে আন্তর্জাতিক সংগঠন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের জন্য সক্রিয় চেষ্টা করা। প্রয়োজনে সেখানে শান্তিবাহিনী পাঠিয়ে দুর্বৃত্তদের নিরস্ত্র করা এবং সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তি ও স্থিতিশীলতার আবহ সৃষ্টি করে এক অন্তর্বতী সর্বদলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত করা। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ও সরকারেরও উচিত এই বিষয়ে সক্রিয়তা দেখিয়ে ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। শরণার্থীদের প্রতি মানবিক হওয়া।
অতএব: সুতরাং দেখা যাচ্ছে যুদ্ধ, হিংসা, হানাহানি, ধর্মীয় মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য কোন সুষ্ঠ সমাধান আনতে অক্ষম। এছাড়াও বর্তমান বৃহৎ পুঁজি নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তি ও সামরিকভাবে অত্যন্ত উন্নত সশস্ত্র আন্তর্জাতিক বাহিনীর সম্মুখে পশ্চাদপদ ভৌগোলিক অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন সশস্ত্র সংগ্রাম আর অতীতের চিন, ভিয়েতনাম, কিউবা, তেলেঙ্গানার মত কার্যকর নয়। যার প্রকৃত উদাহরণ দুনিয়ার সাম্প্রতিক দুটি শক্তিশালী সশস্ত্র আন্দোলন ফিলিপিন্সের ‘ নিও পিপলস লিবারেশন আর্মি ‘ ও পেরুর ‘ সাইনিং পাথ ‘ এর ব্যর্থতা। আমাদের দেশে মাওবাদী ও আলফা প্রভৃতির।
বিপরীতে মেক্সিকো সহ লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ প্রভৃতি জায়গায় গণতান্ত্রিক প্রতিরোধগুলির ভালোরকম সাফল্য দেখা গিয়েছে। এর সঙ্গে মেক্সিকোর চিয়াপাশা অঞ্চলের জাপাতিস্তা ও উত্তর সিরিয়ার রাষ্ট্রহীন কুর্দ অঞ্চলে রোজাভা গণ প্রতিরোধ আন্দোলনে ই.জেড.এল.এন., ওয়াই.পি.জে. প্রমুখ প্রতিরোধ বাহিনীর সঠিক ব্যবহার। প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কায় দু দুবার ব্যর্থ সশস্ত্র বিপ্লবের পর জে.ভি.পি.র গণ আন্দোলন ও গণ রায়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল। ব্রাজিল, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, নিকারাগুয়া আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়।
তাই আজ সাধারণ মানুষের মৌলিক দাবি, পরিবেশ রক্ষা, গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তা সে কাশ্মীর – লাদাখ – দণ্ডকারণ্য – মনিপুর হোক, পাঞ্জাব – বিহার – বিদর্ভ – তামিলনাড়ুর সমস্যাদীর্ণ কৃষিক্ষেত্র হোক, কেরল ও নিকোবর এর ঠাঁই হারানো মৎস্যজীবী বা আদিম জনজাতি বসতি কিংবা পশ্চিমবঙ্গের চাকরি বঞ্চিত শিক্ষক – শিক্ষিকা অথবা রাজনীতি – অপরাধী চক্র কর্তৃক সরকারি মেডিকেল কলেজে অত্যাচারিত, খুন ও ধর্ষিত হয়ে যাওয়া একমাত্র কন্যার বিচার প্রার্থী অসহায় পিতা – মাতা, সর্বত্র দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক ও সংবেদনশীল মানুষদের তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে। জনসমাজকে সংঘবদ্ধ করে এমন শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যাতে ক্ষমতার আসন টলে যায়। প্রচলিত প্রেসে মুখ দেখানো বা লোক দেখানো আন্দোলন নয়। মানুষকে নিয়ে সত্যিকারের জানকবুল আন্দোলন। আন্দোলন শক্তিশালী ও সফল হলে প্রেস এমনিতেই যাবে, মানুষও ঠিক জানবে। আন্দোলন এমন হওয়া উচিত নয় যাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়। তারপর দক্ষ আলোচনা চালিয়ে দাবি গুলি আদায় ও কার্যকর করতে হবে।
কিছু ক্ষেত্রে আইনি লড়াই চলবে কিন্তু সেটি হবে ন্যূনতম প্রয়োজনীয়। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের রাষ্ট্রীয় ফাঁদে পড়া চলবে না। অগ্রণী কিছু ক্ষেত্রে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু সেটিও থাকবে গণ অন্দোলনের নিয়ন্ত্রণে। এটাই সম্ভবত বর্তমান সময়ের পথ।
০৬.০২.২০২৫