



সুন্দরবন অঞ্চলে সমাজভিত্তিক বনসৃজনের উদাহরণ হিসেবে আজ মালতী দেবী ও তাঁর সহযোগী মহিলাদের এই উদ্যোগ নতুন দিশা দেখাতে শুরু করেছে। একেবারে গোড়ার দিকে নিছকই একটি কল্যাণমূলক সামাজিক প্রকল্প হিসেবে গণ্য করা হলেও আজ তা একটি অর্থকরী প্রচেষ্টায় পরিণত হয়েছে। এখানকার নার্সারিতে তৈরি চারাগাছ বিক্রি করে বেশ খানিকটা অর্থ রোজগার করছেন তাঁরা। “আমাদের উত্তর প্রজন্মের নাগরিকদের জন্য এই সুন্দরবনকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে।” – মালতী দেবীর কথায় প্রত্যয় ঝরে পড়ে। মালতী দেবী জানেন গাছের হাত ধরেই মিলেছে নতুন স্বীকৃতি । তাই ম্যানগ্রোভ অরণ্যের গাছেরা হয়ে উঠেছে তাঁদের স্বনির্ভরতার প্রতীক।
সাতের বছরের সৌম্যদীপ ভুঁইঞার স্মৃতিতে ২০০৯ সালের ভয়ঙ্কর আয়লা ঝড়ের কথা তেমন উজ্জ্বল নয় বটে, তবে সেই ঝড় তাদের গ্রামের আনাচে কানাচে যে ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়ে গেছে তা থেকেই সে আন্দাজ করতে পারে ঝড়ের ভয়াবহতা। সৌম্যদীপ আজ সবুজ সেনানী। গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে সে এবং তার বন্ধুরা প্রচার করে চলেছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা।
সৌম্যদীপ একা নয়। কাজলা জনকল্যাণ সমিতির সহায়তায় আজ প্রায় ৩০০ জন সদস্যের তরুণ প্রজন্মের সবুজ সেনানী জঙ্গল বাঁচাতে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। শুরু হয়েছে পরিবেশ পরিচর্যার বিশেষ প্রশিক্ষণ।খালি আবেগ দিয়ে নয়, সবুজ সেনানীরা সুন্দরবনকে বাঁচাতে চায় আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও ধারনার ওপর ভর করেই। গাছ বাঁচানোর পাশাপাশি প্রচার চলছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও প্লাস্টিক দূষণের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও।এক নবজাগরণের পর্ব শুরু হয়েছে সুন্দরবনের এই অঞ্চলকে ঘিরে।
জলে ঢিল ছুড়লে যেমন চারিদিকে ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে ঠিক তেমনি পাথরপ্রতিমার মানুষদের ভিন্ পথে হাঁটার খবরটা ঢেউয়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনের অন্যান্য অঞ্চলে। মগরাহাটেও CRY এর সহযোগিতায় শুরু হয়েছে নতুন এক কর্মযজ্ঞ। মগরাহাটের ঋজু নায়েক, পল্লবী নস্কররা স্বপ্ন দেখছে নতুন ভোরের। গ্রামে এখন বসেছে সোলার প্যানেল।সেখান থেকেই মিলছে বিদ্যুৎ। নতুন আলোকে সাক্ষী রেখে এখন সেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ। ১২০ জন নবীন শিক্ষার্থী শিখছে পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখার নানান কৃৎ কৌশল। স্কুলের বাঁধা রুটিনের বাইরে বেরিয়ে এসে এই জীবন শিক্ষায় একটু করে সচেতন হয়ে উঠেছে তারা। এখানকার প্রশিক্ষকদের দৃঢ় বিশ্বাস যে আগামী দিনে এই নতুন ভাবনার ভরপুর শিক্ষার্থীদের হাত ধরেই সত্যি সত্যিই বাদাবনের ব্রাত্যভূম নতুনভাবে জেগে উঠবে। ওদের সাথে আমরাও আশাভরা চোখে তাকিয়ে থাকবো ওদের জাগর গান শোনার জন্য।
কৃতজ্ঞতাঃ ডাউন টু আর্থ পত্রিকা।
জুন ০৬ . ২০২৫.











দুর্দান্ত খবর! অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ! এবার এরকম উদ্যোগ নেওয়ার দরকার ছোটো বড়ো শহরগুলোতেও। জীবনযাত্রার মান ক্রমশই খারাপ হচ্ছে। সুন্দরবনে মানুষের জীবন তছনছ হয়ে যায় আকস্মিক ঝড়ে। আর শহরে সেটা হচ্ছে তিলে তিলে।
সুদূর প্রবাস থেকে নিজের ভালোলাগার কথা তুলে ধরার জন্য খুব ভালো লাগলো। এও এক আন্দোলন । মাটির কাছাকাছি থেকে মাকে জড়িয়ে, তাঁকে বাঁচানোর লড়াই। সুন্দরবনের বনরাজির আত্মত্যাগের বিনিময়ে ঝড়ের দাপট প্রশমিত হয়। এমন প্রয়াস সকলের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক।
আশাজাগানো কাজ। জল-জঙ্গল-জমির উপর কর্পোরেট আগ্রাসনের বিপরীতে এক সুন্দর নজির।
রাহুল বাবুকে ধন্যবাদ জানাই। পাঠকের সুচিন্তিত মতামত গোটা আয়োজনকেই মহিমান্বিত করে। গ্রামের মহিলাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যদি ঐ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা সুস্থিত হয় তাহলে তার থেকে বড়ো আনন্দের আর কিছুই হয় না। সাবাসি জানাই এই প্রকল্পের রূপকারদের।
মন ভালো করা খবর।বড় বড় কথায় কাজ নেই।এভাবে মাটির মানুষদের হাতেই সূচনা হোক নব প্রভাতের।
খবরটা প্রথম পড়ার সময়ই মনটা বেশ চনমনিয়ে উঠেছিল। তখনই মনে মনে ঠিক করেছিলাম এই ভালোলাগার খবরটা সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবো। সুকুর ভাইয়ের কথায় যে সত্যতা আছে তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। এভাবে একটু একটু করে সবাই মিলে কাজ শুরু করলে পৃথিবীর চেহারা বদলে যাবে। কাজের সুফল ধরে রাখতে হবে।
ধন্যবাদ মতামত জানাবার জন্য।
❤️
Oshadharon udyog ! Aajker diney otyonto prashongik. Erokom udyog aro baruk Sunderbans e, eii kamona kori. E chhada banchar ar path nei !
সুন্দরবন এলাকায় বেশ কিছু গ্রামীণ উদ্যোগ জারি আছে। মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষের কাজে লাগবে এমন উন্নয়ন দীর্ঘস্থায়ী হয়।