প্রশ্নটা চয়েসের। পছন্দের। ইচ্ছের। যার চয়েস, পছন্দ ইচ্ছে – ঘরে বন্দী না থেকে পুজোর আগে নতুন জুতো কেনার জন্য বিখ্যাত বিপনীতে পাগলের মতো ভিড় জমাবেন, পুজোর দিনগুলোতে আগের মতোই প্যান্ডেল হপিং করবেন, এক বিখ্যাত মণ্ডপ থেকে আরেক বিখ্যাত মণ্ডপের ভিড় ঠেলে এগোবেন, মাস্ক খুলে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া করবেন, চুটিয়ে আড্ডা দেবেন – সেটা তাঁদের চয়েস, পছন্দ, ইচ্ছে। লাখ লাখ মানুষের চয়েস, পছন্দ, ইচ্ছেতে বাধ সেধে ভোট হারানোর ক্ষমতা কারুর নেই।
পুজোর পরে, আনন্দের পরে, ফুর্তির পরে যখন হাজার হাজার মানুষ উপসর্গ নিয়ে টেস্ট করার জন্য লাইন লাগাবেন তখন যে ল্যাব টেকনোলজিস্টরা সমস্ত বিশ্রাম বাতিল করে ডবল ডিউটি করতে বাধ্য হবেন, তাঁদেরই কোনো চয়েস নেই। যে ডাক্তার-সিস্টার সমস্ত ছুটি বাতিল করে ডিউটিতে যাবেন, ওভারটাইম কাজের ক্লান্তিতে দিনের শেষে মাটিতে লুটিয়ে পড়বেন তাঁদেরই কেবল চয়েস নেই। একদল মানুষের চয়েসকে সম্মান জানাতে আরেকদল মানুষ তাঁদের নিজেদের ও পরিবারের চয়েস, পছন্দ, ইচ্ছেকে গলা টিপে মারবেন।
পরিষেবা পেতে গিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষায় জনতা অধৈর্য হবে, পরিকাঠামোর অভাবে ভর্তি হতে না পেরে জনতা অশান্ত হবে। সেই অধৈর্য, অশান্ত জনতার ক্ষোভ আছড়ে পড়বে ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরে। তাঁদের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মার খেতে হবে, খেতে হবে ওই সদ্য কেনা জুতো চপ্পলের বাড়ি, তাঁদের কোনো চয়েস নেই।
অতএব আসুন সবাই মিলে জুতোর দোকানে ভিড় জমাই, বড় ভালো দোকান, ন্যায্য দামে জুতো কেনার কতরকম চয়েস। জীবনের শেষ জুতো বলে কথা !! এপিটাফে স্মৃতিস্তম্ভে লেখা থাকবে, “ইনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে করোনা কোভিভ মহামারী চলাকালীন একজোড়া জুতা কিনতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। অমর শহীদ, তোমায় আমরা ভুলিনি, ভুলবো না।”