মায়াবী। বাবা ভালবেসে নাম রেখেছিল। কিন্তু মেয়ের মায়া কাটিয়ে উনি একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন। তারপর ছোট বয়সেই মায়াবী স্বামীর সংসারে চলে গেল। সংসার চলছিল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
তারপর এল করোনা। লকডাউনে স্বামীর কাজ গেল। তারপর আমফান। ঝড়ে গাছ পরে ঘর ভেঙে গেল। মায়াবীকে কাজে বেরতে হল। এখন সে কলকাতায় কাজ করে। মায়াবী থেকে সে মাসি।
মায়াবীর বউদি অনুরাধা, আধুনিকা। স্বামী বড় কাজ করে। সময় কাটে না বলে তিনি এনজিওর সঙ্গে যুক্ত। মেয়েদের স্বাধীনতা, পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করেন। মেয়েদের মনকে সব সংস্কার থেকে মুক্ত করতে চান। অনুরাধার পিরিয়ড হলে বাড়ির ঠাকুরের পুজো মায়াবীর হাতে ছেড়ে দেন। মায়াবী আজ লক্ষ্মী পুজোর সময় লক্ষ্মী ঠাকুর ছাড়াও ক্রিসমাস ট্রি-র তলায়ও ছোট থালায় নকুলদানা আর ফুল দিয়েছিল। ভেবেছিল এটা সাহেবদের তুলসিগাছের মতো কিছু হবে, এত যখন সাজিয়েছে। মনে মনে গাছের কাছে প্রার্থনা করল স্বামী, সন্তান যেন সুস্থ থাকে। এই নিয়ে বাড়িতে চলল খুব হাসাহাসি। মায়াবী লেখাপড়া না শেখা মেয়ে। কিছুতেই বুঝতে পারে না তার কোথায় ভুল হল।
সব গাছই কল্পতরু, তারাই ঘর ভাঙ্গে, তারাই ঘর গড়ে।