করোনা ভাইরাস লাগেজ গুছোচ্ছিল।
আমি দেখতে পেয়ে বললাম, ‘টিকিট কাটা হয়ে গেছে?’
‘নাঃ, এবারে আর আগে থেকে টিকিট কাটি নি। গত বছর পনেরই আগষ্ট ফেরত যাবার টিকিট কেটে টাকাপয়সা সব নষ্ট হয়েছিল। এবার আর ও পথে হাঁটছি না।’
‘কেন, পনেরই আগষ্ট আবার কি হয়েছিল?’
‘মনে নেই? লালকেল্লা থেকে ভ্যাকসিনের ঘোষণা হবে শুনে তড়িঘড়ি পগার পার হওয়ার প্ল্যান করেও আবার থেকে যেতে হয়েছিল।’
‘ও আচ্ছা! তা এবারে যাচ্ছ কোথায় ?’
‘দেখি, যেদিকে দুচোখ যায়……দিকশূন্যপুর বা আলফা সেন্টাউরি, কোথাও একটা যাব……. ভ্যাকসিন তো এসেই গেল। যেতে তো হবেই। তবে এবার আর আগে থেকে টিকিট কাটছি না । কিচ্ছু বিশ্বাস নেই!’
‘ভ্যাকসিন নিয়ে তো বেশ ঘাপলা হবে মনে হচ্ছে। অন্ততঃ ইন্ডিয়াতে। কেউ বলছে ১১০%, কেউ ২০০%। কি করে যে ১০০-র মধ্যে ১১০% হয়, বুঝতেই পারছি না!’
‘বুঝলে না? বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচি।’
‘মানে ?’
‘বুঝিয়ে বলছি শোনো। এক ছাত্র অঙ্কে খুব ভালো। একবার পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলে দেখা গেল, সে অঙ্কে ১০০ তে ১১৫ পেয়েছে। খুব ভালো পরীক্ষা দিয়েছিল ঠিক। কিন্তু এতটাও সে আশা করে নি। তারপর তো ১০০ তে ১১৫ নিয়ে চারদিকে হইচই। শেষে তদন্তে দেখা গেল, প্রশ্নপত্রে পাঁচটার মধ্যে চারটে অঙ্ক কষতে বলা হয়েছিল। পরীক্ষার্থী সেটা না দেখে পাঁচটা অঙ্কই করে দিয়ে এসেছে। কমন পড়ে গেলে যা হয় আর কি! তাড়াহুড়োতে পরীক্ষকও সেটা নজর করেন নি। তাইতেই এরকম অবাস্তব নম্বর এসেছে। কিচ্ছু করা গেল না, পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেল। সেই ছাত্র পরের বার পেল মাত্র সত্তর।’
‘হুঁ, বুঝলাম। ভালই করেছ টিকিটটা না কেটে।’
‘কিচ্ছু ভরসা নেই।’
‘যাকগে। তো, যাওয়ার আগে তোমার শেষ ইচ্ছে কি? মানে, কোই আখরি খোয়াইশ?’
‘যদি একটা স্যাম্পল নিয়ে যেতে পারতাম!…. ছোট করে, বনসাই-এর মত।’
‘কিসের স্যাম্পল?’
‘তোমাদের রাজনৈতিক নেতাদের। এরকম চীজ এই মহাবিশ্বে আর কোথাও পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না!’