- করোনা ভাইরাস সকাল সকাল অনেক বইখাতা, কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর নিয়ে মন দিয়ে লেখাপড়া করছে। তার সামনে ক্যালেন্ডার, বেনীমাধব শীলের ফুলপজ্ঞিকা এসবও আছে।
ইতিমধ্যে সেখানে ডেঙ্গু-র প্রবেশ।
ডেঙ্গু: কিরে ছোঁড়া, খুব তো সারাদিন ভেসে বেড়াস। আজ ঘরে বসে কি ব্যাপার?
করোনা: ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছি।
ডেঙ্গু: মানে?
করোনা: আজ তো সাপ্তাহিক লকডাউন। তাই বাড়ি থেকেই কাজ করছি।
ডেঙ্গু: তা পঞ্জিকা, ক্যালেন্ডার, ক্যালকুলেটর এসব কেন? ল্যাপটপ কোথায়?
করোনা: ল্যাপটপ আই টি-দের লাগে। ওরা ঘর ঝাঁট দিতে দিতে জুম করে। আমার ওসব নেই।
ডেঙ্গু: তুই কিভাবে কাজ করছিস?
করোনা: থিয়োরি অফ রিলেটিভিটির সাথে ব্রাউনিয়ান মোশান আর কোয়ান্টাম থিয়োরি পাঞ্চ করে সাপ্তাহিক লকডাউনের শিডিউলটা বোঝার চেষ্টা করছি।
ডেঙ্গু: পঞ্জিকা, ক্যালকুলেটর কেন? স্মার্টফোনেই তো সব আছে!
করোনা: আমি স্মার্টফোন ব্যবহার করি না।
ডেঙ্গু: কেন করিস না, সেটাই তো জিজ্ঞেস করছি।
করোনা: ফোন নিয়ে মরি আর কি! একে আমার গায়ে একটু চীনে গন্ধ আছে। তারপর স্মার্টফোন দেখলেই তাতে চীনে অ্যাপ আছে কি না খুঁজে দেখবে। তারপর আরোগ্যসেতু গুঁজে দেবে। ওতে পাঁচশ মিটারের মধ্যে করোনা আছে কি না দেখায়। আমার তো পাঁচ সেন্টিমিটার দেখাবে! তারপর ওই আরোগ্যসেতু পার হয়ে সোজা সগ্যে।
ইবোলা ঘরের কোনায় গুটিশুঁটি মেরে বসে ছিল।
ইবোলা: লকডাউন জেনে তুই কি করবি?
করোনা: প্ল্যান করতে হবে না! তোমার মত খাঁই খাঁই করলে হবে! তুমি তো সবাইকে খেতে গিয়ে আফ্রিকা থেকেই ঝেঁটিয়ে সোজা এখানে। কোনোক্রমে বেঁচে আছো। বেশীদিন ক্রিজে টিঁকে থাকতে গেলে ঠিকঠাক প্ল্যান করতে হবে। তাই এই লকডাউন খেলাটা বোঝার চেষ্টা করছি।
ডেঙ্গু: এটাতো সোজা। এক শিশি অণুপ্রেরণার সাথে দু ফোঁটা লিভার টনিক আর এক ফোঁটা রেশনের চাল ধোয়া জল গুলে খেলেই দিব্যি ব্যাপারটা বোঝা যায়।
করোনা: তোমার মাথা! বিষয়টা অত সোজা নয়। ক্যানেস্তারা পিটানো, বাতি জ্বালানো, রাফালের ককপিটের মাপ, মায় আগেকার নিকারাগুয়ায় মারকিন আগ্রাসন, ভেনেজুয়েলায় তেলের দাম অবধি বুঝি। কিন্তু লকডাউনের এই হিসেব আমাকে পুরো কাবু করে দিয়েছে।
ডেঙ্গু: মাথা চুলকে বোঝার চেষ্টা কর। আমার বাহন এডিস এসে গেছে। আমি চলি।
করোনা: লকডাউন পারমিট আছে তো? পুলিশ কিন্তু খুব কেস দিচ্ছে আজকাল।
ইবোলা: আমিও পালাই। মিনিটখানেক-এর সাংবাদিকরা দেখতে পেয়ে গেলে ছবি তুলে ‘করোনার মধ্যেই ইবোলার আতঙ্ক’ বলে প্রচার করে দেবে।