Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

মজুমদার দাদুর পুরিয়া ও ছেলেবেলার অসুখ

WhatsApp Image 2024-08-06 at 9.21.38 PM
Somnath Mukhopadhyay

Somnath Mukhopadhyay

Retired school teacher, Writer
My Other Posts
  • August 8, 2024
  • 7:36 am
  • 8 Comments

এ কাহিনি আজ থেকে কমবেশি ছয় দশক আগের। কয়েকদিন ধরেই থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে করে গরমের ভাবটা খানিকটা কমেছে বটে, কিন্তু বাতাসের ভেজা ভেজা ভাবটা ডেকে এনেছে নতুন সব শরীরী বিপদ। ঘরে ঘরে এখন অনাহুত অতিথির মতো এসে হাজির হয়েছে জ্বর সর্দি কাশি। আমাদের বাড়ির ঠিক সামনেই ছিল এক পেল্লায় পুকুর। গরমের ছুটির এই সময়টাতেই সাঁতার শিখে নিতে হবে। মা অবশ্য অফিসে যাবার আগে প‌ইপ‌ই করে বলে গিয়েছিলেন – “খবরদার বৃষ্টিতে ভিজবিনা । চারিদিকে এখন রোগব্যাধি বাড়ন্ত। আর পুকুরে যাবিনা। বর্ষার নোংরা জলে শরীর খারাপ হবে। আমি কিন্তু এবার ডাক্তার দাদুর কাছে নিয়ে যাবনা। নিজেরাই কষ্ট পাবি।” মা দুগ্গা, দুগ্গা করে র‌ওনা হয়ে যান । এই বিরতির সময়ে তাঁর বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হিসেবে সব কিছুর ওপর নজরদারি করবে আমাদের ভগিনী। দুই ভাইয়ের কার্যবিধির ওপর অনুপুঙ্খ বিবরণী তৈরি করে সে মায়ের কাছে রিপোর্ট জমা করবে সন্ধেবেলায়, মা বাড়িতে ফিরে এলে।

বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই মার চোখে পড়ে দুই শয্যাশায়ী রোগী , চাদর মুড়ি দিয়ে বিছানায় লাট মারছি। রিপোর্টার ভগিনী শুরু করে দিল ধারাবিবরণী।কিছুই বাদ গেলনা। কখন পুকুরে নেমেছি, কতক্ষণ জলের মধ্যে হাত পা ছুঁড়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি। সামনেই ছিল তালপাতার পাখা। নিজেকে সামলাতে না পেরে তা  দিয়েই মা দুজনের পিঠে কষে দু ঘা বসিয়ে দিলেন। আমরা জানতাম, এরপর তিনিই আবার ছুটবেন মজুমদার দাদুর বাড়িতে, ওষুধ আনতে।

সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ দুজনকে বগলদাবা করে মা চললেন দাদু ডাক্তারের কাছে। আমাদের দেখেই দাদু একপ্রস্থ রাগারাগি করলেন, তারপর বললেন এরপর যদি এমন সমস্যা নিয়ে যাই তাহলে তিনি বেঁধে রাখবেন। আমরা গিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়াতেই শুরু হলো পরীক্ষা নিরীক্ষা –

 

– মুখ খুলে হা কর। আরও বড়ো করে। নাহলে আমি দেখবো কী করে? উঁহু, জিভটা বের করে রাখ। জিভটাতো দুজনের‌ই অপরিস্কার। দেখি চোখ দুটো। গলার কোথায় ব্যথা? এখানে, এখানে? খাবার গিলতে কষ্ট হচ্ছে?দেখি হাত দাও। বাঁ হাত। জ্বর কখন এসেছে? জোরেজোরে শ্বাস নাও। আরেকটু। ঘাড়টা শক্ত শক্ত লাগছে ? জ্বর কখন এসেছে? পুকুরে নেমেছিলে ? কানে ব্যথা লাগছে?

আমাদের তখন বশীভূত রোবটের অবস্থা। ডাক্তারদাদুর সব প্রশ্নের উত্তরে আমরা সমানে ঘাড় কাত করে যাচ্ছি। প্রশ্নের বহর যত বাড়ছে ততই উদ্বেগ বাড়ছে মার। মনে মনে আমি ভাবছি, দেবেন তো কয়েক পুরিয়া সাদা পোস্ত দানা। তারজন্য এতো প্রশ্ন? মা প্রশ্ন করেন – মেসোমশাই,ভয়ের কিছু নেই তো? উত্তরে ডাক্তারদাদু বলেন – সাবধানে থাকতে হবে। বিশ্রাম নিতে হবে। বছরের এই সময়টাতে ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসরা খুব সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে আমাদের গলার টনসিল নামক গ্ল্যান্ডদুটো আক্রান্ত হয়।যাইহোক ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরি, সঙ্গে আরও কয়েকটা জরুরি পরামর্শ নিয়ে।

(২)

চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে টনসিল হলো আমাদের শরীরী ব্যবস্থার স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণের প্রথম দরজা। শারীরবিদ্যার পরিভাষায় আমাদের শরীরের যে প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তা পরিচালিত হয় লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমের অন্তর্গত লিম্ফয়েড অঙ্গগুলোর মাধ্যমে। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রতিরোধী ব্যবস্থা বা ইমিউনোলজিকাল ফাংশন ঠিকঠাক পরিচালনায় লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমের অন্তর্গত লিম্ফয়েড অঙ্গগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীরের টনসিল হল লিম্ফয়েড অঙ্গগুলোর একটি সেট। মুখ হাঁ করলেই আমাদের শ্বাস নালি ও খাদ্য নালির দেখা মিলবে। টনসিল এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুই শরীরী গহ্বরের দিকে মুখ করে থাকে। বাইরের কোনো প্যাথোজেন মুখ গহ্বর দিয়ে শরীরের ভেতরে ঢুকতে গেলেই টনসিল খবরদার বলে রুখে দাঁড়ায়। শরীরের ভেতর বহিঃশত্রুর আক্রমণের আশঙ্কা আছে এই খবর শরীরের অন্যান্য অংশে পাঠিয়ে দেয় দ্রুততার সঙ্গে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই সম্পূর্ণ ব্যবস্থার নাম দিয়েছেন ওয়াল্ডেয়ারের টনসিলার রিং। এই প্রতিরক্ষা বৃত্তটি গড়ে উঠেছে অ্যাডিনয়েড টনসিল বা ফ্যারিঞ্জিয়াল টনসিল, দুটি টিউবাল টনসিল,দুটি প্যালাটাইন টনসিল এবং লিঙ্গুয়াল টনসিল নিয়ে।

টনসিল সংক্রমিত হলে তাকে বলা হয় টনসিলাইটিস যদিও চিকিৎসকরা টনসিলের এভাবে আক্রান্ত হবার সমস্যাকে “টনসিলোফ্যারেঞ্জাইটিস ( tonsillophyaryngitis )” বলে থাকেন , তবে সাধারণভাবে এই সমস্যাটি গলার ঘা বলেই আমরা সবাই জানি। বায়ুমণ্ডল তথা আমাদের প্রাণ পরিবেশে থাকে এমন অগণিত অণুজীবী ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের কারণেই টনসিলাইটিসের সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগ তিন বছরের বেশি বয়সের শিশু ও বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোর কিশোরীদের মধ্যে বেশি দেখা যায় , তবে যেকোনো মানুষ, যেকোনো বয়সেই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে একবারও এই টনসিলোফ্যারেঞ্জাইটিসের দ্বারা আক্রান্ত হননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া সত্যিই বোধহয় মুশকিল।

(৩)

 আপনার এই গুরুত্বপূর্ণ শরীর যন্ত্রটি অণুজীবের প্রভাবে সংক্রমিত হয়েছে তা কীভাবে বুঝবেন? চিকিৎসকদের মতে এই রোগের লক্ষণ চিহ্ন হলো –

  • গলার ভেতরে ঘা হ‌ওয়া। একদম প্রথমাবস্থায় অতটা ব্যাপক না হলেও খুব দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে।
  • গলায় ঘা হলে খাবার গিলতে কষ্ট হয়। গলার ভেতরে ছোট ছোট ফুস্কুড়ি দেখা যায় ফলে গলায় ব্যথা বাড়ে। আয়না সামনে রেখে হা করলে টনসিলের ওপর সাদা, হলুদ অথবা ধূসর রঙের আবরণী দেখা যাবে।

  • গলার সংক্রমণ স্বরযন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে, ফলে গলার আওয়াজ খসখসে হয়ে যায়। ঘায়ের জন্য স্বাভাবিক ভাবে কথোপকথনে সমস্যা দেখা দেয়।
  • নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
  • সংক্রমণের একদম গোড়া থেকেই শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করলে ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রা লক্ষ করা যায়।
  • কানের নিচে থাকা লিম্ফ নোডগুলো লাল হয়ে যায়।
  • ছোটদের মধ্যে বমি করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। 

তবে গলায় ঘা হলো টনসিলাইটিসের প্রাথমিক সিম্পটম। হঠাৎ করে গলার ভেতরে ঘা হলে টনসিলের ওপর নজর দিতে হবে যে তারা লাল হয়ে ফুলে গেছে কিনা? এমন হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

(৪)

 আমাদের শরীরে টনসিলের ইনফেকশনের জন্য প্রধানত দায়ী হলো ভাইরাস। এই কারণেই টনসিলাইটিস ভাইরাল ইনফেকশন নামেই পরিচিত। তবে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবেও এমন সংক্রমণ ঘটতে পারে বলেই মনে করেন ই এন টি বিশেষজ্ঞরা । সংক্রমণের কারণের বিভিন্নতা অনুসারে টনসিলাইটিস হতে পারে –

  • ভাইরাল টনসিলাইটিস : যে সমস্ত সাধারণ ভাইরাসের কারণে আমরা সাধারণ ঠাণ্ডায় বা ফ্লু তে আক্রান্ত হয়ে থাকি ঠিক একই ধরনের ভাইরাস ৭০% টনসিল সংক্রমণের জন্য দায়ী। তবে দেখা গেছে যে ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যার তুলনায় ভাইরাল টনসিলাইটিসের তীব্রতা কম হয়।

  • ব্যাকটেরিয়াল টনসিলাইটিস বা Strep throat :

ব্যাকটেরিয়াল টনসিলাইটিস সংক্রমণের পেছনে মূলত দায়ী হলো Group A Streptococcus ব্যাকটেরিয়া। চিকিৎসকরা এই ধরনের ব্যাকটেরিয়াল টনসিলাইটিসকে Strep throat বলে থাকেন। এই প্রকার টনসিলাইটিসের তীব্রতা বেশি।

(৫)

টনসিলোফ্যারেঞ্জাইটিসের পেছনে দায়ী হলো দুই বহিরাগত আক্রমণকারী – ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। এদের স্বভাব বা প্রকৃতি হলো আগ্রাসী। ফলে একজন আক্রান্ত মানুষের থেকে অন্য অনেকের মধ্যে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে নানান উপায়ে। যেমন –

১. খুব ঘনিষ্ঠ মানুষের সঙ্গে চুম্বন বিনিময় করলে, আক্রান্ত  মানুষের সঙ্গে পানীয় ভাগ করে নিলে অথবা আক্রান্ত মানুষের ব্যবহৃত বাসন ব্যবহার করলে টনসিলের ইনফেকশন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

২. আক্রান্ত জনের সংস্পর্শে এলে এই রোগের সংক্রমণ বেড়ে যায়। এক‌ই পরিবারের একজন সদস্য টনসিলাইটিসে আক্রান্ত হলে অন্যদের মধ্যেও তা ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশেষ করে যদি অল্পবয়সিরা সংখ্যায় একাধিক থাকে।

৩. রোগীর দ্বারা সংক্রমিত কোনো বস্তু বা স্থানে অসতর্ক হয়ে হাত দিয়ে ফেললে সেই হাত নিজের নাক বা মুখে দিলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

৪. ধূলিকণা পরিপূর্ণ শ্বাস বায়ু গ্রহণে বাধ্য হলে।

টনসিলাইটিসে আক্রান্ত হবার এই প্রত্যক্ষ বিষয়গুলো ছাড়াও আরও দুটি ক্ষেত্রে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে –

  • ৫ বছরের শিশু থেকে ১৫ বছর বয়সি বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • যাঁদের প্রতিদিন বহু মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয় তাঁদের মধ্যেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক/ শিক্ষিকারাও এভাবে আক্রান্ত হতে পারেন।

(৬)

টনসিলাইটিসের সমস্যা নিয়ে সাধারণভাবে আমরা কখনোই খুব বেশি উদ্বিগ্ন হয়েছি বলে মনে হয় না। ছোটবেলার ফেলে আসা স্মৃতি হাতড়ে দেখতে গিয়ে দেখেছি সেখানেও খুব কঠিন স্মৃতিকথা জমা আছে বলে মনে হলোনা। ঘরোয়া কিছু টোটকা আর মজুমদার দাদুর অসাধারণ রোগ নির্ণয় ক্ষমতায় ভরসা করে দিব্বি উৎরে গিয়েছি আক্রান্ত কাল। এখন এই বুড়ো বয়সে নতুন করে রোগব্যাধি নিয়ে পড়তে বসে দেখছি টনসিলাইটিসকে অবহেলা করা ঠিক হবে না।

মনে রাখতে হবে যে এই রোগের পেছনে রয়েছে ভাইরাস আর ব্যাকটেরিয়ার মতো অদৃশ্য শত্রুর হাত। কোন্ ফাঁকে সে শরীর মন্দিরের সদর দরজার সামনে হত্যে দিয়ে পড়েছে তা আপনি টেরই পেলেন না, অথচ আপনার গলার ভেতরে সমস্যা বাসা বাঁধলো! এই সময়ের চিকিৎসকরা হয়তো এই কারণেই একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দেন। কেননা দীর্ঘায়িত টনসিলাইটিসের ফলে বাড়তে পারে জটিলতা, যেমন এর ফলে হতে পারে

  • অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ এ্যাপিনিয়ার মতো ঘুমের জটিল সমস্যা।
  • আক্রান্ত হতে পারেন পেরিটোনসিলার অ্যাবসেসে।
  • টনসিল স্টোন হতে পারে।
  • টনসিলার সেলুলাইটিস্ ।

ব্যাকটেরিয়াল টনসিলাইটিসের চিকিৎসা যদি যথাসময়ে করা না হয় তাহলে ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। কারণ আক্রান্ত রোগীর শারীরিক উপসর্গগুলোর উপশম যদি পাঁচ দিনের‌ও বেশি স্থায়ী হয় তাহলে Strep throat infection থেকে সৃষ্টি হতে পারে কঠিনতর সমস্যা, যেমন –

  • Poststreptococcal রিয়্যাক্টিভ আর্থারাইটিস । এরফলে অস্থিসন্ধির অংশগুলো ফুলে উঠতে পারে। হতে পারে তীব্র যন্ত্রণা।
  • রিউমেটিক ফিভার ।
  • আরক্ত জ্বর বা Scarlet fever.
  • আক্রান্ত হতে পারে আমাদের শরীরের কিডনি।

সুতরাং শরীরের স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধী ব্যবস্থার প্রথম দরজা আক্রান্ত হবার ইঙ্গিত পেলেই আমাদের সজাগ হতে হবে।

(৭)

 অসুস্থতা কাটিয়ে আরোগ্য লাভ – এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি।

টনসিলাইটিস নিয়ে আমাদের খুব বেশি উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। মনে রাখবেন এখন‌ও অনেক সংবেদনশীল মানুষ আছেন আমাদের পাশে, আমাদের সাথেই। তাঁদের কে, কীভাবে রোগীকে সুস্থ করবেন তা একান্তই তাঁদের আন্তরিক অভিজ্ঞতা ও নিজস্ব মন্ত্রগুপ্তির বিষয়। সেই আলোচনায় আমার মতো আনপঢ় মানুষের কখনোই যাওয়া উচিত হবে না। তাই মা- ঠাকুমার ঝুলি থেকে কতগুলো ঘরোয়া চিকিৎসার কথা এখানে ভাগ করে নেবো সবার সঙ্গে। প্রসঙ্গত মজুমদার দাদুর কথা মনে পড়লো । অনেক সময় কোনো ও ওষুধপত্র না দিয়ে তিনি প্রচলিত ঘরোয়া চিকিৎসার কথা বলতেন, তাতে উপশম না হলে বাক্স খুলে সামান্য ওষুধের ব্যবস্থা করতেন। আমি সেই বিধিনিষেধের কথাই আপনাদের সামনে হাজির করছি।

১: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

যেহেতু এই রোগের প্রাথমিক শিকার হলো ছোটরা, সেই কারণেই তাদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন। ঘুমিয়ে পড়লে ব্যথার যন্ত্রণা টের পাবে না।

২: প্রচুর পরিমাণে জল পান করা দরকার।

আমাদের শরীরের ৭৫% হলো জল, তাই শরীর অসুস্থ থাকার সময় যাতে শরীরে জলের ঘাটতি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। তরল পানীয় গলা ভেতরটাকে আর্দ্র ও পিচ্ছিল করে রাখতে সাহায্য করবে।

৩ : শক্ত খাবার বর্জনীয়।

সমস্যা মুখ ও গলার, তাই সংক্রমণের একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় চিবিয়ে খেতে হয় এমন শক্ত কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয়। চা, স্যুপ, মধু মিশিয়ে গরম জল, আইসক্রিম খাওয়া উচিত।

৪ : নুন জলে গার্গল করতে হবে।

 গলার এমন সমস্যার ক্ষেত্রে ঈষদুষ্ণ জলে নুন মিশিয়ে কুলকুচি বা গার্গল করলে টনসিলের ইনফেকশন দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব।

৫: ঘরের ভেতরটাকে আর্দ্র রাখতে হবে

শুষ্ক বায়ু গলার ভেতরে গেলে তা যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয় ফলে আর্দ্র আবহাওয়া তৈরি করতে হবে।

৬: ওষুধ যুক্ত লজেন্স মুখে রাখা যেতে পারে।

৭: ধূমপান চলবেনা।

ধূমপান করলে গলার ভেতরে টনসিলের প্রদাহ বাড়বে। এছাড়া কোনো উত্তেজক গন্ধ নাকে এলে তা থেকে কষ্ট বাড়তে পারে।

৮ : মধু মিশিয়ে চা বা গরম জল পান করুন।

ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ করতে মধু খুব কার্যকর। মধু আর আদা মেশানো চা টনসিলাইটিসের মহৌষধ।

৯ : গলায় ব্যবহার উপযোগী থ্রোট স্প্রে নিন।

১০ : অতিরিক্ত কথা বলা মানা।

আক্রান্ত অবস্থায় গলাবাজি বন্ধ করতে হবে

** যদি বার বার টনসিলাইটিসে আক্রান্ত হবার ঘটনা ঘটে তাহলে মায়া না করে ঐ দুটোকে অপারেশন করে নেওয়াই ভালো।

PrevPreviousবাংলাদেশ
Nextবুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সমীপেষুNext
5 2 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
8 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Soumen Roy
Soumen Roy
9 months ago

শরীর বিষয়ক লেখা গুলি থেকে অনেক কিছু জানতে পারছি।লেখককে ধন্যবাদ।লিখতে থাকুন।🙏

0
Reply
sarmistha lahiri
sarmistha lahiri
9 months ago

টনসিল নামক শব্দটির সাথে ছোটবেলা থেকেই পরিচয়,কিন্তু এত বিস্তৃত ভাবে তাকে আজ জানলাম। লেখক কে ধন্যবাদ যে এতো সুন্দর ভাবে সমস্ত বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

0
Reply
Barnali Banerjee
Barnali Banerjee
9 months ago

জামাই বাবু অনেক কিছু শারীরিক বিষয়ে জানতে পারছি।খুব ভাল লিখেছেন। আরও চাই।

0
Reply
Somnath Mukhopadhyay
Somnath Mukhopadhyay
Reply to  Barnali Banerjee
9 months ago

লেখাগুলো কাজে লাগছে জেনে ভালো লাগছে। তবে লেখা পড়ে চিকিৎসা নয়। ডাক্তারবাবুর পরামর্শ মতো চলতে হবে।
লেখাগুলো ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ করছি।

0
Reply
Anjana Mukhopadhyay
Anjana Mukhopadhyay
9 months ago

খুবই কাজের লেখা। এমনভাবে রোগগুলোর কথা আগে ভাবিনি। লেখক মজা করে বোঝাতে চাইছেন দেখে খুব ভালো লাগছে। লেখা চলুক এমন বিষয় নিয়ে।

0
Reply
Sandip
Sandip
9 months ago

Anek kichu silhte parlam dada

0
Reply
Unmesh
Unmesh
9 months ago

এই সমস্যা আমার ছিল। এত সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য লেখক কে ধন্যবাদ।

0
Reply
Saswati
Saswati
9 months ago

অসাধারণ লেখা। আজকাল বাবা মায়েদের অতিরিক্ত possessiveness বাচ্চাদের immunity power তৈরীর ক্ষেত্রে একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাপারেও কিছু আলোকপাত করা দরকার।

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

সরকারি আধিকারিকদের দায়দায়িত্ব ও ‘কাজের চাপ’

May 22, 2025 No Comments

“Oblonsky had gone to Petersburg to perfom the most natural and essential duty – so familiar to everyone in Government service, yet so incomprehensible to

অন্ধকারেরও যে এত রকম শেড আছে আগে তা বুঝিনি।

May 22, 2025 No Comments

★ ছবি আঁকার স্যার বাড়ির কাজ দিয়েছিলেন দুটো টাস্ক, যে কোনও একটা আঁকতে হবে দিনের বেলার আলো ঝলমল দৃশ্য আঁকতে গিয়ে দেখি, বনাঞ্চল, নদী, ঝর্ণা

সে চারখানা

May 22, 2025 No Comments

যুদ্ধ হলো , রুদ্ধ জলও , সব নাগরিক ক্রুদ্ধ হলো, মারলো অনেক জঙ্গী ঘাঁটি ড্রোন বিমানের ঝাঁক পিষে, কিন্তু কোথায় চার অমানুষ, জ্বলছে মনে ধিকি

হো চাচা লাল সেলাম।

May 21, 2025 1 Comment

১৯ মে ২০২৫ হোচিমিন এর সাথে আমাদের দেশের বৌদ্ধিক সম্পর্ক বহুদিনের। উনি নানান প্রবন্ধ লেখেন ভারত নিয়ে যেমন ব্রিটিশ উপনিবেশিক নীতি (১৯২৩), লেটার ফ্রম ইন্ডিয়া

রূপকথার রাক্ষসী

May 21, 2025 No Comments

তোকে আমরা কী দিইনি? সততার মাদল হয়ে বাজবি বলে তোকে দিয়েছি এই শহরের মোড়ে মোড়ে অজস্র ফ্লেক্স। যথেচ্ছারের সুখে মিছে কথার ফোয়ারা ছোটাবি বলে তোকে

সাম্প্রতিক পোস্ট

সরকারি আধিকারিকদের দায়দায়িত্ব ও ‘কাজের চাপ’

Dr. Bishan Basu May 22, 2025

অন্ধকারেরও যে এত রকম শেড আছে আগে তা বুঝিনি।

Dr. Arunachal Datta Choudhury May 22, 2025

সে চারখানা

Arya Tirtha May 22, 2025

হো চাচা লাল সেলাম।

Dr. Samudra Sengupta May 21, 2025

রূপকথার রাক্ষসী

Dr. Arunachal Datta Choudhury May 21, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

555380
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]