গত দু মাসের কোভিড পরিস্থিতি এক অদ্ভূত সংকটে ফেলেছে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে। এ রোগ থেকে বাঁচার সেরা উপায় ঘরে থাকা। আতংক অনিশ্চয়তার আঘাতে সাধারণ মানুষের সাথে সাথে অধিকাংশ ডাক্তারও গৃহবন্দী। সরকারি ব্যবস্থার সাথে যুক্ত ডাক্তারদের কাজ করতেই হচ্ছে। কিন্তু প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলো প্রায় না চলার মত। তার ফলে ব্লাড প্রেসার, কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস, মানসিক রোগ, অর্থোপেডিক্স, গাইনি ও অবস্টেট্রিক্স ইত্যাদি অন্যান্য রুগীরা এবং তার বাড়ির লোকেরা চিকিৎসার অভাবে এক ভয়ংকর বিপদের সম্মুখীন। বাড়ছে মৃত্যুও।
কিন্তু এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কাজ করে যাচ্ছেন বেশ কিছু ডাক্তার। তার ফলে বাড়ছে তাঁদের নিজেদের সংক্রমণ সম্ভাবনা। অনেকে কোভিডে আক্রান্তও হচ্ছেন। মুশকিল হচ্ছে এই পর্যায়ে। তখন তাঁরা যেন চোরের দায়ে ধরা পড়েছেন বা কোনো গুপ্ত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, এরকম প্রতিক্রিয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অদ্ভুত সব গুজব ছড়াচ্ছে তাঁদের নিয়ে। সব থেকে বড় ব্যাপার যাঁদের সত্যিকারের করোনা সংক্রমণ হচ্ছে সেই ডাক্তারকে এই রোগ পাড়া বা ফ্ল্যাটে নিয়ে আসার জন্যে দোষারোপ করা হচ্ছে। পরিবারকে পারলে ফ্ল্যাট বা পাড়াছাড়া করার চেষ্টা হচ্ছে।!!
মনে রাখবেন সম্ভবত এই ডাক্তাররাও চাইলে খাবার দাবার স্টক করে ঘরে বসে নিরাপদে থাকতে পারতেন। করতে পারতেন তাঁদের ক্রিয়েটিভিটি নিয়ে নানা এক্সপেরিমেন্ট। তা না করে পরিষেবা দিতে এসেই তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের দায়বদ্ধতা —আচ্ছা ছাড়ুন, দায়বদ্ধতা নয় চিকিৎসা করে পয়সা কামানোর জন্যেই ক্লিনিক বা হাসপাতালে ডাক্তারি করছেন। কিন্তু ডাক্তারিই করছেন।
তাই দয়া করে তাঁদের শ্রদ্ধা না করতে পারেন অন্তত অসম্মান করবেন না। কাঁসর ঘন্টা বাজান, গোলাপ পাঁপড়ি ছড়ান কিছুই লাগবে না। এই অসময়ে প্রাপ্য ন্যূনতম সম্মানটা দিন।
আনন্দে থাকুন। নিরাপদে থাকুন।