আজ ওয়ার্ল্ড
ডে। গন্ডার বললেই যে কথাটা সবচেয়ে আগে মাথায় আসে তা হলো ‘গণ্ডারের চামড়া’। শব্দটা প্রশংসার না নিন্দা করার জন্যে ব্যবহার করা হয় এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। তবে একথা ঠিক মানুষকে গণ্ডারের চামড়া বললে গণ্ডারের অপমান হয়। আজ আর একটা বিশেষ চামড়ার কথা বলি, ডাক্তারের চামড়া।
রোগী, পেশেন্ট বা কর্পোরেট কালচারে ক্লায়েন্ট এই শব্দগুলোর মধ্যে কোনটা বললে সম্পর্কটা ঠিকভাবে বোঝানো হবে জানিনা। বিশেষ করে আজকের পরিস্থিতিতে। এই পারস্পরিক ভালবাসা-বিশ্বাস-শ্রদ্ধা-স্নেহ কোন শব্দ ব্যবহার করা ঠিক হবে তা আমার জানা নেই। এই কথাগুলো কেন উঠলো? ফেসবুকের একটা মেমোরি দেখে।
প্রায় চার বছর আগের ঘটনা। এগরা হাসপাতালের সিনিয়ার ডাক্তারবাবু পেশেন্টদের অনৈতিক দাবিতে রাজি না হওয়ায় “মার” খেয়েছেন। তিনি দোষীদের শাস্তির দাবিতে কোনো কিছু পোস্ট করেননি। তাঁর একটা ছোট্ট চাওয়া। ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকা তাঁর ছোট্ট মেয়েটা যেন বাবার মারধর খাওয়ার খবর না পায়। সেই মেয়েটিও হয়তো তিজুর বয়সী হবে। কিংবা একটু বড় বা ছোটোও হতে পারে। কিন্তু আমি জানি, তার বাবা তার কাছে সব থেকে বড় হিরো। কারণ তিজুই তো আমার সেই বছরের জন্মদিনে কার্ডে লিখেছিল, “Dad, You are my Hero, my role model, the man I look up to and dream to become”. আমার মনে হয় এখনও হয়তো তাই ভাবে।
আপনাদের রাগ হলে আমাদের “উচিত শিক্ষা” দিতে দু ঘা দিতেই পারেন। ফেসবুক ওয়ালে আমাদের বাবা-মাকে নিয়ে যা ইচ্ছে লিখতেই পারেন। আমাদের পরের প্রজন্মের স্বপ্ন ভেঙে দিতেই পারেন। কিন্তু একবার ভাবুন তো, আপনার ছোটো ছেলে বা মেয়ে কি আপনাকে সুপার হিরো মনে করে স্বপ্ন দেখে না? আপনিই কি তার রোল মডেল নয়? আপনি কি স্বপ্ন দেখেন না, সে বড় হয়ে মস্ত বড় ডাক্তার হোক?
আপনি হয়তো আমার গুগল রিভিউ পড়ে বন্ধু বা আত্মীয়র কাছে আমার কথা শুনে তবে আসছেন চিকিৎসার জন্য। আমি কিন্তু আপনাকে না চিনে, কারো কাছে আপনার প্রশংসাপত্র যাচাই না করেই আপন করে নিচ্ছি। আপনাকে ভরসা করছি।
তাই বলি কী, ডাক্তারের চামড়ার যত্ন নিন। নাহলে তারাও একদিন গণ্ডারের মত হারিয়ে যাবে, তখন বিপদে পড়বেন আপনারা।