বছরখানেক আগে | স্কুলের একটি মেন্টালি চ্যালেঞ্জড বাচ্চাকে গান শেখাচ্ছিলাম —আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে | সাধারণ বাচ্চার থেকে আমার বাচ্চাটির বুদ্ধি একটু কম তো ! কম মানে প্রচলিত ধারণা মতে কম | ফলে সাধারণ শব্দ ও বাক্য বুঝতে তার অসুবিধে হয় ! আর এ জাতীয় বিশেষ মানের গান তো তার কাছে আরোই দুর্বোধ্য | অথবা নাচতে নাচতে সে বুঝি ভাবছিলো কোনোই অর্থ নেই এ গানের |
Conventional Teaching Method এ বার বার ফেল হচ্ছিলাম ওকে communicate করতে | বোঝাতে | নিজের অক্ষমতা ঢাকতে ওকেই বেধড়ক বকতে লাগলাম | অনেকক্ষণ মাথা নিচু করে বসে রইল মেয়েটা | তারপর চোখে দুহাত চাপা দিয়ে হড়হড় করে কেঁদে ফেলল |
মুহূর্তটা ভাবালো আমায় | মনে হলো — ঠিক নিজে যেটুকু বুঝেছি ওটুকুই বোঝাই ওকে | বোঝাই ওর মত করে |
—–” আছছা ভাব এমন একটা জায়গা যেখানে আমরা সবাই রাজা বা সবাই রানী ! সবাই খুব সেজেগুজে গলা জড়িয়ে চলছি | ঘুরছি একটা বিরাট মাঠে ! দৌড়োচ্ছি —খেলছি—- হেসে গড়াচ্ছি মাটিতে ! আবার খিদে পেলে খাচ্ছি যত ইচ্ছে | সে মাঠের পেটমোটা ফলফুলুরিগুলো খেয়েই যাচ্ছি ! কিন্তু সবাই মিলে ও same same ভাগে | সবার হাতে একই সাইজের ঝুড়ি আর তাতে ধর গোটা দশেক ফল ! এতে হয়ে যাবে না আমাদের ?”
একদম থ মেরে রয়েছে মেয়েটা | — “আচ্ছা এবার ধর সে মাঠে প্রচুর রোদ ? “— এবার গলা দিয়ে প্রচন্ড এক আওয়াজ বার করে উত্তর দিলো —- ” তাহলে তাও সমান আন্টি ! সবার হাতেই হলুদ রোদ | ” ‘
দুহাতের মুঠি আকাশে ছুঁড়ে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে লাফ মেরে নাচতে শুরু করলো সে মেয়ে | —আমরা সবাই রাজা | যত বলি –‘ ওরে এ তো নাচ ! হাত দুখানা তালে ছন্দে খেলা ! ” ততই সে হাতগুলো ছুঁড়তে লাগে বেতাল | বেহিসেবী | ঠিক যেমন করে আকাশ ঘষটে ছোটে পাখির রাশ !
ভাবছি আবার যদি ও নাচ করাই ? মঞ্চ না পাই ক্লাসঘরেই করাই যদি ? — তখন নাচুনীটাকে পরাব একটি শতছিন্ন নোংরা শাড়ি ও একটি সলমা ঘেরা রানীমুকুট !
ও রে বেগমবাহার | দেখবি তখন কী সুখ কী সুখ ! সেদিন তুই আর আমি কারোর কথা শুনব না | শুনবই না মোটে |
দিদি আপনার চিন্তা ধারনা অন্য লেভেল এর।আমার ছোট খাটো অসুবিধে পড়লেই ভিমরি খেয়ে যাই।।আপনি আপনিই।।কোন তুলনা নেই।।
এই পোস্টের মধ্যে দিয়ে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে তাঁর নৃত্যের প্রতি আহ্বানকে জীবনের ছন্দে নিয়ে আসার যে কর্ম প্রচেষ্টা আন্তরিকতা নিষ্ঠা এক পূর্ণরূপে প্রকাশ পেয়েছে দেখে মনের মধ্যে আত্মার শান্তি লাভ করলাম। সত্যিই জগতের আর পাঁচটা প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ও অনুভতিকে জাগ্রত করার পথে আপনি দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাবেন সে বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত। আপনার মননশীলতার তারিফ না করে পারছি না ও আমার স্পষ্ট ধারণা আপনিই স্বকীয় প্রতিভায় ও নিষ্ঠায় অভীষ্ট লাভে সমর্থ হবেন।
ঠিক বুঝেছে, সবাই রাজার দেশে সব সমান, রোদ্দুরটাও? লেখনী অনবদ্য ?
Chotto othocho govir r ojana onubhuti ke samne mele dhorlen
মেয়েটি প্রতিবন্ধী তাকে তার জায়গায় থেকে দাড়িয়ে তবে বোঝাতে হয়েছে। শিক্ষা দেবার কৌশল অবলম্বন করে ধৈর্য ধরে রাখাটা আসল বিষয়। শিশুর মন বোঝা আপনার বহু দিনের অভিজ্ঞতার জন্য সহজ হয়েছে। খুব ভালো লাগল
ওই নাচই দেখতে চাই। অন্তরের অনুভূতির সরল প্রকাশ। আরোপিত নয় একদমই। অনেক ভালোবাসা ছোট্ট নাচুনীর জন্য।
যাদের আমরা সমস্যা ভাবি তাদের তুই সম্পদ করে তোলার দায়িত্ব বহন করছিস। এ কাজটাই যথেষ্ট দামি ; তার ওপর তাদের কথা লিখে আমাদের চেতনাকে সমৃদ্ধ করছিস, কী বলে তোকে কৃতজ্ঞতা জানাব। ভ্যান গখের ছবিটার ব্যবহার খুব সুন্দর হয়েছে।
সত্যি, এই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের পড়া,গান,নাচ,খেলা শেখাতে যে ধৈ, আন্তরিকতার প্রয়োজন তোমার মধ্যে তা পূর্ণাঙ্গভাবে রয়েছে।তাই এদের সাথে তুমি এদের মত করে মিশতে পারো যা খুব কম মানুষ পারবে।এগিয়ে চল বন্ধু।জয় হোক তোমার।
সত্যি, এই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের পড়া,গান,নাচ,খেলা শেখাতে যে ধৈর্য,আন্তরিকতার প্রয়োজন তোমার মধ্যে তা পূর্ণাঙ্গভাবে রয়েছে।তাই এদের সাথে তুমি এদের মত করে মিশতে পারো যা খুব কম মানুষ পারবে।এগিয়ে চল বন্ধু।জয় হোক তোমার।
ওর ভাবনা একেবারে পরিস্কার, হলুদ রোদ সবার সমান। ওদের ভাবনা গুলো এতো সুন্দর করে তুমি বুঝতে পারো ! ওরা সমস্যা নয়,ওরা সম্পদ..এটা সবার মনের ভেতর স্থাপন করাতেই তোমার সার্থকতা। ভালো থেকো।
“–তাহলে তাও সমান আন্টি । সবার হাতেই হলুদ রোদ।” — এই কটা কথা ভুলব না।
গভীর ভালোবাসা ও অতি সুক্ষ অনুভব ব্যতীত এমন লেখা সম্ভব নয়। বেশ লিখেছিস।
ওরা খুব ভালো করে ভালোবাসতে জানে। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরাই ডিস্যাবেলড। ওদের বুঝতে অক্ষ্মম। আমার একটা বাচ্চা বন্ধু আছে সে দেওয়াল বেয়ে উপরে উঠে যেতে পারে স্পাইডারম্যানের মতো।দড়ির মধ্যে নিজেকে পেচিয়ে নিতে পারে। কত কিছু করতে সক্ষম তা কল্পনাও করা যায় না।
একজন বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুকে কিভাবে উতসাহ দিয়ে, ভালবাসা দিয়ে তার মধ্য থেকে যে অন্ততরনিহিত গুনগুলো প্রকাশ করানো যায়, সে দক্ষতা আপনার মধ্যে আছে। স্নেহ ভালবাসা শিশুদের প্রতি না থাকলে এমন কাজ করা যায় না।
ডঃ মযূরী
সবার হাতেই হলুদ রোদ, কি অনবদ্য কথা !!
এই বিশেষ শিশু রা সবাই সত্যি ই রাজা ।
I realized the meaning of the expressed differently abled today. So far I thought this is an imposed imagery of political correctnes. But this litlle girl offered us a new connotation what equality means in the arena of nature. Also the vastness of Tagore’s meaning is as abundant as nature, beyond the limits of any precised premise or perspective. She pronounced a philosophy through this spontaneous and pure expression. Many thanks Mayuri for capturing this moment.
অসাধারণ ,অনবদ্য।আপনার সন্তানদের নানান গল্প পড়লে বোঝা যায় কত ধৈর্য সহকারে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে শিশুদের পরিপূর্ন বিকাশ সম্ভব।বাঃ।অপূর্ব।