হাইপারটেনসিভ রোগীর মূল্যায়ন
যখনই কারও হাইপারটেনশন ধরা পড়ে তখন তার আরও কিছু মূল্যায়ন জরুরী। কারণ হাইপারটেনশন হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক ইত্যাদির ক্ষতি করে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সেটাকে আটকানোর জন্যই এই মূল্যায়ন জরুরী। হাইপারটেনশন ধরা পড়লে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে রোগীর বিস্তারিত ইতিহাস জানা এবং কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও প্রয়োজন।
১) রোগীর জীবনযাত্রায় হৃদরোগের ঝুঁকিঃ
ইতিহাসঃ
- ধূমপান করেন কিনা।
- কতটা লবণ এবং চর্বি জাতীয় খাবার খান।
- মদ্যপান করেন কিনা।
- কতক্ষণ ব্যায়াম করেন।
- বাড়ির কারও কমবয়সে হার্টের অসুখ হয়েছে কিনা।
শারীরিক পরীক্ষাঃ
- উচ্চতা ও ওজন।
- বডি মাস ইনডেক্স।
- কোমরের মাপ।
ল্যাবটরিতে পরীক্ষাঃ
- রক্তের গ্লুকোজ
- লিপিড প্রোফাইল।
২) টারগেট অরগ্যানের কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনাঃ
হাইপারটেনশনে টারগেট অরগ্যান গুলি হলো- হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক এবং চোখ
ইতিহাসঃ
- পরিশ্রম করলে দমের কষ্ট, বুকে ব্যথা হয় কিনা?
- পা ফুলছে কিনা?
- চোখে দেখতে সমস্যা হচ্ছে কিনা?
শারীরিক পরীক্ষাঃ
- জুগুলার ভেনাস প্রেশার বেশি কিনা?
- ইডিমা আছে কিনা?
- হৃদগতি স্টেথোর সাহায্যে শুনে দেখা হয় গ্যালপ আছে কিনা? (হার্ট ফেলিওর)
- রেটিনার ফান্ডোস্কোপিক পরীক্ষা করা হয়।
ল্যাবটরিতে পরীক্ষাঃ
- ইসিজি
- মূত্রের প্রোটিন
- রক্তের ক্রিয়েটিনিন
৩) হাইপারটেনশনের কোনো কারণ আছে কিনা অর্থাৎ সেকেন্ডারি হাইপারটেশন কিনা?
ইতিহাসঃ
- রোগীর বয়সঃ কম বয়েসে (<৩০ বছর) বা বেশি বয়সে (>৬০ বছর) হঠাৎ করে খুব বেশি রক্তচাপ ধরা পড়লে সেটা কিডনির সমস্যা বা রেনাল আর্টারি স্টেনোসিসের জন্য হতে পারে।
- বুক ধড়ফর, মাথাব্যথা, অত্যাধিক ঘাম হওয়া ফিওক্রোমোসাইটোমা বা হাইপারথাইরয়েডের লক্ষণ হতে পারে।
- রাতে নাক ডাকা, কিছু সময়ের জন্য ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে যাওয়া (রোগীর বাড়ির লোক বলবে), দিনের বেলা ঘুমিয়ে পরা এগুলি স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ।
- ওষুধঃ নিয়মিত স্টেরয়েড, ব্যথার ওষুধ, কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল বা অন্য কোনও ওষুধ খান কিনা। এগুলিও হাইপারটেনশন করতে পারে।
শারীরিক পরীক্ষাঃ
- মুখ গোল হয়ে যাওয়া (মুন ফেস), স্ট্রেচ মার্ক বা স্ট্রায়া- কুশিং সিন্ড্রোম বা দীর্ঘ মেয়াদী স্টেরয়েড ব্যবহারের লক্ষণ।
- দুই হাতে দুরকম পালস ভলিউম পাওয়া বা কোনোহাতে না পাওয়া- তাকায়াসু আর্টেরাইটিস বা অন্যন্য ভাস্কুলার ডিজিজ।
- পায়ের ফিমোরাল পালস না পাওয়া বা পালস ভলুম কমে যাওয়া- কোয়ার্কটেশন অফ অ্যায়োর্টা।
- রেনাল আর্টারির উপর স্টেথো বসিয়ে ঘড় ঘড় শব্দ বা ব্রুই পাওয়া- রেনাল আর্টারি স্টেনোসিস।
ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষাঃ
- মূত্রের রুটিন ও মাইক্রোস্ক্রোপিক পরীক্ষা
- রক্তের ক্রিয়েটিনিন।
- আলট্রাসোনোগ্রাফি।
- রেনাল আর্টারি ডপলার স্টাডি।