সুকান্তবাবু (ইনি কবি নন, রাজনৈতিক ন্যাতা, মজুমদার নামের) বলিলেন, সেনাবাহিনীতে যৌবনের অভাব হইয়াছে! অগ্নিপথের প্রয়োজন সেইকারণেই।
******************************
অভাব হওয়ার কথা তো বটেই। সেনাবাহিনীতে এই মুহূর্তে সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ২৫ হাজারের বেশী শূন্য পদ আছে। তিন বাহিনী মিলিয়ে “অফিসার”-এর পদ ফাঁকা ৯ হাজারের বেশী। কোভিড সময়কালের অজুহাতে বা অন্যান্য কারণে দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ। (কেউ কেউ বলছে, আসল কারণ, অর্থের অভাব, তাই এইসব সস্তার “ঠিকা” সৈন্য নেওয়ার উদ্যোগ!! নিন্দুকেরা বলছে, অস্ত্র কেনাকাটার টাকা কমে গেছে, মাইনে আর পেনশন দিতে গিয়ে; অস্ত্র কেনার টাকা কমায় কমিশনের সম্ভাবনাও কমেছে! তাই এই “পথ”!!)
তা, কতটা “যৌবন” সেনাবাহিনীতে আদতে পাওয়া যায়? মূলবাহিনীতে স্থায়ী চাকরিতে ঢোকার বয়:সীমা ২১ থেকে ২৫ বছর। “অগ্নিপথ” প্রকল্পে “অগ্নিবীর” হওয়ার বয়:সীমা সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর। (বিক্ষোভ ইত্যাদির পরে তা বাড়িয়ে ২৩ করার কথা বলা হয়েছে, মূল বিজ্ঞপ্তিতে এখনো ২১!)
সুতরাং পূর্বের বিধি অনুযায়ী সেনাবাহিনীতে কখনই এই বয়সের “যৌবন” ছিল না। আর যা ছিলই না, তার অভাব কি করে হবে?? ঘুরিয়ে “মিথ্যাচার” হয়ে গেলো না তো, প্রাক্তন অধ্যাপক মহাশয়??
আচ্ছা, সাড়ে সতেরো বছরে একজন তো এদেশের ভোটারই হয় না, তাকে সেনাবাহিনীতে ঢোকানো কতটা যুক্তিযুক্ত?
প্রায় দুই বছর নিয়োগ বন্ধ রেখে এখন, সেনাবাহিনীতে স্থায়ী চাকরীর স্বপ্ন দেখা যে ২৩ থেকে ২৫ বছরের “যৌবন”কে বঞ্চিত করা হল (যাদের বয়স দুই বছর আগে ছিল, ২১ থেকে ২৩ বছর), তাদের স্বপ্নভঙ্গের দায় কার?
আচ্ছা, সাড়ে সতেরো বছর থেকে একুশ বছর বয়সের মধ্যে “যৌবন” উচ্চ-মাধ্যমিক আর কলেজের গ্র্যাজুয়েশনের পড়াশোনার মধ্যে থাকে। এই বয়সীদের সেনাবাহিনীতে ঢোকাতে চেয়ে এদের শিক্ষার অধিকারকে কিছুটা হলেও খর্ব করা হলো না কি? পরে চাকরী থুড়ি দেশসেবা থেকে ফিরে এসে এদের মধ্যে কত শতাংশই বা আবার পড়াশোনার মূল স্রোতে ফিরতে পারবে??
সব মিলিয়ে এই রঙ্গতামাশা বেকার ছেলেমেয়েদের উত্তেজিত করবার পক্ষে যথেষ্ট… আরো অনেকগুলো কারণ আছে… গালভরা নামের আড়ালে আরো নানা বিপজ্জনক দিক আছে… ২, ৩, ৪ করে বলার চেষ্টা করবো… আজ এইটুকু।
(ছবি গুগুলবাবার দৌলতে)