কাজল লতা আর লোহার টুকরোটি এখনো আমাদের সম্বল। কারণ, সচেতনতাকে এখনও আমরা হাতিয়ার করতে পারিনি।
পরিবারের একরত্তির স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা সবসময় চিন্তিত। নামিদামি জিনিস তার জন্য হাজির হয়। সামান্য সমস্যা হলেও রাতবিরেতে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। কিন্তু নিজেরা কখনই সচেতনতার পাঠ শিখি না।
বাড়ির প্রাপ্ত বয়স্করা সাধারণ কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর রাখলেই শিশুদের ভোগান্তি এড়ানো যায়।
শিশুর দ্রুত বিকাশের জন্য প্রাথমিক শর্তই তার শারীরিক সুস্থতা। সদ্যোজাতের শরীরে প্রতিষেধক ক্ষমতা থাকে না। তাই তাকে সুস্থ রাখা বেশ কঠিন কাজ। আর এক্ষেত্রে বাড়িই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরে যে ঘরে সদ্যোজাত থাকবে তাকে জীবাণু মুক্ত করা জরুরি ।
- সেই ঘরের বিছানা, পর্দাসহ সমস্ত আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- জিনিস পত্র পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি নবজাতকের পরিবারের সদস্যদের ও পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
- অধিকাংশ সময় সদ্যোজাতকে আদর করার সময় পরিবারের প্রৌঢ়দের সচেতনতার দিক খেয়াল রাখেন না। একরত্তির মুখে চুমু দেন। যা পুঁচকে সদস্যের জন্য বেশ বিপজ্জনক। কারণ, প্রৌঢ় সদস্যদের অনেকেরই দাঁতে নানা সমস্যা থাকে।
- আবার অনেকের তামাকজাত পণ্য যেমন পানমশলা কিংবা সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস থাকে। শিশুকে আদর করার আগে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নেন না। ফলে শিশু তামাকের উগ্র গন্ধ পায়।
- তাছাড়া চুমু খাওয়ায় সময় মুখের লালায় সদ্যোজাতের গাল ভিজে যায়। লালা থেকে অনেক জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি ও থাকে। তাই সংক্রমক রোগ এড়াতে সদ্যোজাতের মুখের খুব কাছে গিয়ে কথা না বলাই উচিত।
- সেই সঙ্গে বাইরে থেকে এসে হাত না ধুয়ে কখনোই সদ্যোজাতকে ধরা উচিত নয়।
- বাবা-মায়ের ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সতর্ক হওয়া জরুরি। অনেক সময় তাঁরা ও সর্দি-কাশি বা ভাইরাস ঘটিত জ্বরে আক্রান্ত হন। সেই সময় সন্তানের থেকে দুরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন। হাঁচি কিংবা কাশি হলে সদ্যোজাতের ঘরে যাওয়ার আগে মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে। সামান্য ভাইরাস ঘটিত জ্বর ও কিন্তু সদ্যোজাতের জন্য বড় বিপদ হতে পারে। তবে, মায়ের স্তন্যপান করানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
মা ও পরিবারের অন্যান্যদের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সদ্যোজাতের পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।
- জন্মের কয়েক দিন পর থেকেই ভালোভাবে স্নান করানো দরকার। অনেক সময়ই জন্মের পরে কয়েক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেও শিশুকে স্নান করানো হয় না। যা শিশুর পরিচ্ছন্নতার পরিপন্থী। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ঠিকমতো শিশুকে স্নান না করালে চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হয়।
- অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের নখ ঠিক মতো পরিষ্কার করা হয় না। কিন্তু অধিকাংশ শিশুর মুখে হাত দেওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই নখ পরিষ্কার না থাকলে পেটের অসুখের ঝুঁকি তৈরি হয়।
বারবার ভাইরাস ঘটিত জ্বর কিংবা সংক্রমক রোগে আক্রান্ত হলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সমস্যা তৈরি হতে পারে। পরিবারের সামান্য কিছু সচেতনতা বড় বিপদ রুখে দিতেই পারে।