কোলেস্টেরল,হৃদয় ও ব্যবসা
জীবক মুন্ডা, তিন দিন তিন রাত বিছানায়-পায়ুদ্বারে গরম লোহার ডান্ডা ফোটানো শুওরের মতো চিৎকার করে’ ছটফট করলো- তারপর যে রাতে ভ্যান রিকশায় শালবনের চড়াই উৎরাই ঠেলে- হাসপাতালে যাচ্ছে….জড়িয়ে ধরা শালছায়া পেরোতে পারলক নাই- যেভাবে শুওরগুলো মরে সেভাবেই জীবক মরে গ্যালো- ডাক্তার বাবু নাকে রুমাল চেপে লিখে দিলো হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু। শুধোলো কোনও ওষুধ পত্তর খেতো না?…মরবেই তো…..
কিন্তু বাবুরা হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা গরীব খেতে না পাওয়া মানুষের মধ্যে তত বেশী নয়। সত্যি বলতে বহু খুঁজেও সেভাবে কোনও তথ্য নেই। (jagdip menon et al into j of cardiology 2015, study done on 85000 bpl population) তবে কোলেস্টেরল বেশী হয় তোমার মতো সুখী সুখী মানুষদের। যারা পুরুষ্টু গ্ল্যাক্সো বেবির মতো ঘো়ঁৎঘোঁৎ করছো। পরিশ্রমী রোগা লোকের ততটা হয় না। এদের হার্ট অ্যাটাকও কম হয়।
তাই বাজারে চলছে স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ রমরমিয়ে- শুধু তোমার জন্য। ২০০৬ সালে ইন্টারন্যাল মেডিসিনের আর্কাইভ দ্যাখাচ্ছে ৪৩০০০ মাঝবয়সী সাধারণ মানুষের ওপর স্ট্যাটিন দেওয়া হলেও মৃত্যুহার কিছুই বদলায় নি।এরপর ২০২১ সালে ইউরোপীয় কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি স্ট্যাটিনের ব্যবহারে রাশ টানলো। কেবলমাত্র ৪% মানুষ, যাদের হার্টের ঝুঁকি বেশী তারাই স্ট্যাটিন খাবে।
বাজারে এসেছিলো পলিপিল-হার্টের বিভিন্ন ওষুধ ভরে’ তৈরি করা একটা ওষুধ, যেটা সব বয়স্ক মানুষ খাবে। কোনও এক বৈঠকে এক রসিক ছোক্রা ডাক্তার বলেছিলো টালার জলে মিশিয়ে দিলেই তো হয়- সবাই একসঙ্গে খাবে। ভাবুন ব্যবসা কী ভাবে আমার আপনার জীবনে অসুখ বিক্রি করছে- সম্ভবতঃ ১৯৬২ সাল থেকে একটা বহুজাতিক কোম্পানি বিজ্ঞাপনে আর ওষুধ নিয়ে বলে না; তারা অসুখ নিয়ে ভয় দ্যাখায়। জীবনযাপনের কোনও ভূমিকা নেই-পরিশ্রম, প্রকৃতির কোনও ভূমিকা নেই- ওষুধ খাও, ভুঁড়ি বাজাও।
জীবক মুন্ডা, মরণ ওঁরাও এদের হার্ট নেই বাবু- তিনটা ছেলে মরে গ্যালো, মেয়াটাকে সাপে কাটলো- আগামীকালের জন্য জমানো কাঠকুটা দিয়ে পুড়ায়ে দিলো- পরের দিন আবার বিড়ি বাঁন্ধতে, জঙ্গলে কাঠ কুড়াতে চলে গ্যালো-এদের হার্ট নেই বাবু;এদের কেবল একটা বিশ্বজোড়া পেট আছে, বুভুক্ষু ক্ষুধা আছে- অপুষ্টি আছে…অপুষ্টিও একটা রোগ- মানুষের তৈরি রোগ, সম্পদের বিষমবন্টনে তৈরি রোগ। ইথিওপিয়া, ভারত, আফগানিস্তান, ইয়েমেন-সর্বত্র অপুষ্টি আছে, অপুষ্টি থেকে তৈরি রোগ আছে, টিবি আছে, পচুই খেয়ে লিভার পচানো আছে। এদের জন্য স্বাস্থ্য নেই। স্বাস্থ্য বড়লোকের বাপুতি সম্পত্তি।