আমাদের সময়ে বিখ্যাত ‘হিট’ গানগুলোর শুধু প্যারোডি তৈরিই হতো না, রেকর্ডও হতো। এখন অবশ্য প্যারোডি মোটামুটি রাজনৈতিক প্রচারের কাজেই ব্যবহৃত হয়। যাইহোক, অনেকদিন পরে সেই রকম একটা প্যারোডির লাইন স্মৃতির ওপার থেকে হঠাৎ উঠে এলো। অরিজিন্যাল গানটি ছিল, সুপারহিট ‘সঙ্গম’ সিনেমার ‘কেয়া করু রাম মুঝে বুডঢা মিল গিয়া’ ; আর প্যারোডির প্রথম লাইন ছিল ‘তব দশা দেখে হায় রাম মরি কাঁদিয়া’, পরের লাইনগুলো আর মনে নেই! আরও একটা প্যারোডি ছিল ‘গাইড’ সিনেমার অতি বিখ্যাত গান ‘গাতা রহে মেরা দিল’ এর অনুকরণে, ‘তুমি যেন সেই চিল, কাছে পাওয়া মুশকিল, থাকো তিন তলার ছাদে, আমি দেখি রাতদিন..’। দ্বিতীয়টাই দেখছি বেশি মনে পড়ছে.. , হতেই পারে কারণ সেই যুগে আমার মতো অনেক হতভাগ্য কিশোরের সেটাই ছিল বোধহয় মনের একান্ত কথা !!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীজী অযোধ্যায় গিয়ে নাকি বলেছেন, উনি ‘রামলালা’ রও গৃহের ব্যবস্থা করেছেন! সেটা শুনেই হঠাৎ প্রথমোক্ত প্যারোডিটার কথা মনে পড়ে গেল’, সত্যিই বেচারী রামের এতদিন কি দশাই না ছিল!! যতকিঞ্চিত বর্ধিত ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’য় ঘর না পেলে তো চিরকালের মতো নিজভূমে পরবাসী হয়েই ঘুরে বেড়াতে হতো।
এসব প্রশ্ন করে লাভ নেই যে দেবালয়ই ঈশ্বরের বাসস্থান কিনা! হরপ্পা মহেঞ্জোদারোতে তো কোনও দেবালয় পাওয়া যায় নি, তাহলে তখন দেবতা থাকতো কোথায়? আসলে দেবালয় তৈরি হয় আরও অনেক পরে যখন বিত্তবান ও রাজা রাজড়ারা দেবতাকে অধিষ্ঠিত করে নির্দিষ্ট গণ্ডীতে, যতটা না ভক্তিতে তার চেয়ে অনেক বেশি নিজেদের ক্ষমতার দম্ভ ও বৈভব প্রদর্শনে। আর, রামচন্দ্রজী তো সম্ভবতঃ জীবনের সবচেয়ে ভালো সময় কাটিয়েছিলেন বনবাসে ; অযোধ্যা ফেরা ইস্তক তো হারিয়েছেন একের পর এক খুব কাছের মানুষদের !!
যাক, রামচন্দ্র তাঁর গৃহে অধিষ্ঠিত হয়েছেন এর থেকে ভালো খবর আর কী হতে পারে !! এখন থেকে আর মানুষের হৃদয়ের দোরে দোরে তাঁকে ঘুরে বেড়াতে হবে না, রাজপ্রাসাদে তাঁর অবস্থান হবে অতি সুরক্ষিত, রাষ্ট্রীয় স্পর্ধার প্রতীকস্বরূপ !!!
………………………………..
…………………………………
যাক, এসব নিয়ে মাথা ঘামিয়ে কী আর লাভ !! বরং, আসুন বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় জানাই সসম্ভ্রমে………