দার্জিলিং নিয়ে অনেকেরই অনেক মধুর স্মৃতি আছে। সেই স্মৃতি নিয়ে নস্টালজিয়ায় ভোগেন।
তবে দার্জিলিং নিয়ে আমার আগের স্মৃতি ততটা মধুর নয়। এর আগে দার্জিলিং এসেছিলাম একবারই। সেটা ১৯৮৯ সাল। তখন সাত বছরের। স্মৃতি খুব বেশি নেই।
তবে একটা ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে। দার্জিলিঙে যে হোটেলে ছিলাম, একটা ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হতো। সিঁড়িটা ভালো লেগে গেছিল। একা একাই ওঠানামা করতাম।
সামনের রাস্তায় স্থানীয় ক’টা ছেলে খেলছিল। প্রায় আমারই বয়সী। তাদের খেলা দেখছিলাম। একটা ছেলে হঠাৎ করে কোথা থেকে এসেছি জিজ্ঞেস করল।
বললাম,’কলকাতা।’
‘বাংগালী। থু থু…’ বলে ছেলেটি মাটিতে একদলা থুতু ফেলল।
গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন, বাঙালী বিদ্বেষ এসব বোঝার বয়স তখনও হয়নি। তবে সেই তীব্র ঘৃণা মনে ভালো মতো ছাপ ফেলে গেছিল। বাদবাকি স্মৃতি মুছে গেছে। শুধু এই স্মৃতিটুকুই রয়ে গেছে।
এবারো দার্জিলিং ঘোরা খুব সুবিধাজনক হলো না। বাতাসিয়া লুপ থেকে চিড়িয়াখানার সামান্য রাস্তা যেতে জ্যামের কল্যাণে লেগে গেল প্রায় দুই ঘণ্টা। গাড়ি আর এগোয়ই না। গাড়ির মধ্যে দুই মেয়েই অধৈর্য হয়ে গেল।
অবশেষে চিড়িয়াখানায় পৌঁছালাম। এখানকার চিড়িয়াখানা রেড পাণ্ডার জন্য বিখ্যাত। চিড়িয়াখানায় গেলেই অস্বস্তি লাগে। মানব চিড়িয়াখানা বা ‘হিউম্যান জু’ এর কথা মনে পড়ে। উনিশ শতকের পুরোটাই এবং বিংশ শতকের প্রথম দিকে সভ্য (?) দেশগুলিতে আফ্রিকা বা অন্যান্য পিছিয়ে পরা দেশ বা দ্বীপ থেকে ওখানকার মানুষদের এনে খাঁচায় ভরে প্রদর্শন করা হতো। উৎসাহী ব্যক্তিরা টিকিট কেটে তাদের দেখতো, ঠিক এখনকার চিড়িয়াখানার মতোই। নেটে সার্চ করে এই হিউম্যান জু সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
চিড়িয়াখানা দেখে গেলাম মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে। সেখানকার মিউজিয়াম ঘুরে দেখলাম। পাহাড়ে চড়ার বহু জিনিসপত্র এখানে সযত্নে প্রদর্শিত হয়েছে।
তবে এই চিড়িয়াখানা আর মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট দেখার জন্য অনেক চড়াই উৎরাই ভাঙতে হয়। রীতিমতো হাঁটুর জোর দরকার।
আবার গাড়িতে উঠলাম। এবার গন্তব্য রক গার্ডেন।