সিলিকোসিসসে ঝাঁঝরা হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল নাসির। কি এই সিলিকোসিস?? খাদান ভাঙ্গা পাথরের বিষাক্ত নিঃশ্বাস। একটু একটু করে ক্ষয় হয় শরীর। তারপর মন। রাষ্ট্রের চ্যুৎস্পা। চুপিসারে মুছে যায় খুনিদের রাঙ্গা হাত। না না এই ভরা ডিসেম্বরে উৎসব নিয়ে আমরা বড় ব্যস্ত। আইপিএলের গোলাপি বল থেকে পার্কস্ট্রিটের গোলাপি টুনি। মিনাখাঁর নোনা জল ছোঁয় না আমাদের। আমাদের কিছু করার নেই। বিদায় নাসির।
নাসির মোল্লার শেষ লেখা
কিছু দিন আমার শরীরটা খুব অসুস্থ এবং গত কালকে আমাকে মিনাখাঁ হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। সিলিকোসিস রোগে আমার ফুসফুসটা নষ্ট করে দিয়েছে।
আজকে আমার লেখার মতো শক্তি নেই তবুও জানিনা হয়তো বেশিদিন লিখতে পারবোনা । অতি কষ্টের মধ্যেও কষ্ট করে শ্রমিক কৃষকদের ন্যায্য অধিকারের জন্যে একটু লিখতে চাই। কারণ এখন সবসময় মনে হচ্ছে এটাই আমার হয়তো শেষ লেখা।
আজকে শ্রমিকরা অট্টালিকা বানাচ্ছে আর কৃষকরা সোনার ফসল ফলাচ্ছে কিন্তু তারা কী পেল? ন্যায্য দাম না পেয়ে সস্তা শ্রমিক হয়ে গেল, কেউ পরিযায়ী শ্রমিক, কেউ পাথর ভাঙার শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা কর্পোরেট পুঁজিবাদের আঙুলের ইশারায় চলছে। তাদের অতি মুনাফার লোভের শিকার হয়ে যাচ্ছে আমাদের মতো শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা। আমরা সিলিকোসিস আক্রান্ত সংগ্রামী শ্রমিক কমিটি অধিকারের দাবি নিয়ে লড়াই করছি ।
আমি গ্রামের ছেলে একটু কম বুঝি, তবে এইটুকু বুঝেছি যে, এই রাষ্ট্রের অন্নদাতা কৃষক আর শ্রমিকের শ্রম ছাড়া কখনও বড় বড়় অট্টালিকা আর সুন্দর মার্বেল পাথর দিয়ে সাজানো আপনার বাড়িটা বানানো সম্ভব হতনা।
অনেক কষ্টের মধ্যে থেকেও লিখলাম। উদ্দেশ্য একটাই এই অধিকারের লড়াইটা যেন থেমে না যায়।