আধুনিক এই যুগে অর্জুন হতে পারেন স্রেফ জনগণ।
ভোটের গাণ্ডীবে টংকার দিলে, ঢিলে ও হলুদ হয় এগারো অক্ষৌহিনী সেনার পাতলুন
আন্দোলনের দেবদত্তে ফুঁ দিলে কেঁপে ওঠে অন্ধ রাজার হাজার কোটির প্রাসাদ।
স্বভাবত , তাকে নিয়ে চিন্তিত দুর্যোধন স্বৈরাচার,
জনগণ ধনঞ্জয় যুদ্ধে থাকলে অভিমন্যু গণতন্ত্রকে মারবার প্ল্যান হবে পুরো বরবাদ।
সুতরাং ছক হয়, শলা হয় , কিভাবে সরানো যায় সব্যসাচীকে মূল যুদ্ধের থেকে।
যুদ্ধের ভ্রমে ফেলে ব্যস্ত রাখবে তাকে সংশপ্তক,
ফ্রি ডেটা ফাঁদ ধরে ফোন জুড়ে বিরাজিত সোশ্যাল মিডিয়া,
সেখানেই নাচগান আড্ডা তর্ক আর বাকবিতণ্ডা এসে আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে জনগণ-মন,
মনকে দখল করে চলে বিনোদন,
বিগ টেক রাখছে নজর,
ভুল করে আলোচনা না চলে যায় যেন গণতন্ত্র অভিমন্যুর দিকে,
আলোচনা থেকে ক্ষোভ,
ক্ষোভ থেকে জমায়েত,
জমায়েত থেকে আসে সত্যি জানতে চাওয়া গণ-অভ্যুত্থান,
ধর্ম অস্ত্র করে লড়া কৌরবদল ধর্মযুদ্ধ হলে কোনখানে যান!
সুতরাং চালু থাকা অ্যালগরিদম,
দেখে নেয় অকাজেই ব্যস্ত যেন থাকে অর্জুন,
সারাদিন খরচেও অন্তিমে ফল যার অশ্বের ডিম।
ওদিকে জয়দ্রথ সেডিশন
যুদ্ধের সাজে সেজে দাঁড়িয়েছে চক্রের গেটে,
অর্জুন বাদ দিয়ে তাকে জয় করবে না কোনো পাণ্ডব,
ছাত্র শ্রমিক কবি কৃষক বুদ্ধিজীবি সকলেই অসহায় এন এস এর কাছে,
ব্যুহের গোড়ায় ওই দাঁড়িয়ে জয়দ্রথ,
হাতে তাঁর সবাই আটকে যাওয়া রাওলাট আছে।
আহা অভিমন্যুটি নেহাত কিশোর,
তবু সে অজেয় বীর, পৃথিবীর জানা আছে বীরত্ব ওর,
একা কোনো মহারথী সম্মুখসমরে ওকে পারে না হারাতে,
নিরস্ত্র করে ওকে ঘিরে মেরে দিতে হবে সাতের আঘাতে।
তৈরী ধর্মান্ধতা মহাবীর ,
ভয়ানক ভেদাভেদ শস্ত্রটি হাতে নিয়ে তাঁর,
রয়েছেন বন্ধুবর বিকৃত সংবাদ বিক্রেতা,
এক একটি খবর তার ঘায়েল করতে পারে লক্ষ মগজ,
ওইপাশে বর্ম পরে ফুঁসছেন কল্পিত বিদেশী শত্রুর আতংক,
যাকে দেখলেই খিদে চেপে লোকে যুদ্ধাস্ত্র দেখে উল্লাস করে,
শিক্ষার দাবী ভুলে চেয়ে বসে বোমারু বিমান।
জাতপাত কোটা মহারথী শান দিচ্ছেন তাঁর শতাংশ অস্ত্রে,
বংশ ও জন্মের নথি ধূলিসাৎ করে দেয় যোগ্যতামান,
আরো চাই , আরো চাই,
ওই যে কোদণ্ডে তাঁর ছিলা টানটান।
রয়েছেন বুদ্ধিজীবি সুযোগসন্ধানী,
স্বৈর মহান বলা মোহন কলমে তাঁর
নিত্য ফলোয়ার বাড়ে ট্যুইট আর রিট্যুইটে,
বড় মোলায়েম ভাবে মুছে দেন তিনি সব রক্তের ছিটে।
গর্জন করছেন বেজামিন গারদবাস,
যখন তখন যে কাউকে তিনি আনতে পারেন নিজের দখলে,
একবার এসে গেলে আজীবন বন্দী সে,
লাভ নেই প্রমাণেরা বিপরীত হলে।
স্বয়ং স্বৈরাচার দুর্যোধনই রয়েছেন পুরোভাগে,
এ কিশোর জন্ম অবধি তাঁর শান্তি কেড়েছে,
বহু পূর্বজন্মের আর এক শত্রুর মতো,
জনতার মনে মনে গোকুলে বেড়েছে।
তৈরী হয়েছেন সাত মহারথী,
ফাঁদ পাতা আছে কুরুক্ষেত্র জুড়ে চক্রব্যুহতে,
অভিমন্যু গণতন্ত্র পড়েওছে ঢুকে তার অভ্যন্তরে,
সে শুধু নিরস্ত্র নয়, একেবারে একা।
অর্জুন জনগণ ব্যস্ত মোবাইল জুড়ে মিডিয়ার সংশপ্তকে।
আসল যুদ্ধ তার মুশকিল দেখা।
কে জানে কোথায় বসে যুগস্রোতনিয়ন্তা অর্জুনসখা,
দ্বাপরের যুগে যার নিবাস দ্বারকা…