ডায়াবেটিস আমেরিকায় ২০ থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ। যদিও আমাদের দেশে অন্ধত্বের প্রধান কারণ ছানি বা ক্যাটারাক্ট। তবে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিও এক বড় অংশের মানুষের অন্ধত্বের জন্য দায়ী।
ডায়াবেটিস থাকলে একজনের অন্ধত্বের সম্ভাবনা প্রায় ২৫ গুণ বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসে অন্ধত্ব হয় ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও ম্যাকুলার ইডিমার জন্য।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি কি? কারো ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে অর্থাৎ রোগী ওষুধ পত্র এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে ডায়াবেটিস হওয়ার বছর দশেকের মধ্যেই তার চোখের রেটিনার পাতলা রক্তনালীগুলিতে নানা রকম পরিবর্তন দেখা যায়। একেই ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি বলে।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১.পলিফারেটিভ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিঃ এক্ষেত্রে রেটিনাতে উপস্থিত রক্ত নালীগুলি কোনো কোনো জায়গায় বেলুনের মতো ফুলে যায়। কোনো কোনো জায়গায় নালী গুলি ফেটে রক্ত বেরোয়। (blot hemorrhage এবং cotton- wool spots)। এর ফলে রেটিনায় রক্তচলাচল ব্যহত হয়।
২. পলিফারেটিভ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিঃ রেটিনায় রক্তচলাচল কম হলে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য নতুন নতুন রক্ত নালী তৈরি হয়। একে বলা হয় নিওভাস্কুলারাইজেশন। কিন্তু এই নতুন রক্তনালীগুলির দেওয়াল খুব পাতলা হয়। এর ফলে এরা সহজেই ফেটে যায় এবং ভিট্রিয়াস বা চোখের মধ্যে যে তরল থাকে তাতে হেমারেজ করে। যার ফলে শেষ পর্যন্ত রেটিনা তার নীচের পর্দা থেকে আলাদা হয়ে যায় (retinal detachment)।
ডায়াবেটিসের সাথে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে রেটিনোপ্যাথি হওয়ায় সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
চিকিৎসাঃ
১. রক্তে গ্লুকোজ এবং রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
২. ডায়াবেটিস থাকলে প্রতি বছর চিকিৎসকের কাছে চোখ দেখানো। যাতে প্রথম অবস্থাতেই রেটিনোপ্যাথি ধরা পরে।
৩. রেটিনোপ্যাথি উপস্থিত থাকলে লেজার ফটো কোয়াগুলেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। প্রথম অবস্থায় চিকিৎসা করলে ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষ জনক।