হঠাৎ করে দিন কয়েক আগে দেখলাম, একটি টিভি চ্যানেলে করোনা মোকাবিলার জন্য কিছু ড্রাগ ট্রায়াল ও তার সাফল্য নিয়ে বিদগ্ধ সাংবাদিকের সুস্পষ্ট বিজ্ঞাপন – করোনা জব্দ! বিশ্বাস করুন, এক লাফে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম। এই অসময়ে যদি করোনাকে জব্দ করা যায়- তার চেয়ে সুখবর আর কিছু হতে পারে না!
এমনিতে ঘরে বসে বসে মানুষের পাছায় বেড সোর হয়ে গেছে, আর কতদিন এভাবে? জনাদশেক সেটা দেখে এতোটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন, মানবসভ্যতার পরম উপকার সাধন করতে, শেয়ার করে পুণ্য লাভ করেছেন তৎক্ষণাৎ! সাথে অবশ্যই উপদেশ- আজই, এখুনি কিনে আন!
তা আমার ম্যাজিকাল রেমেডিতে খানিক অ্যালার্জি হয় বলে একটু খোঁজ খবর নিলাম।
সেই ভিডিওটি দেখেছেন প্রায় বিয়াল্লিশ লাখ মানুষ! ভাবা যায়? এই দেশের কথা ধরা হলে সংখ্যাটা সামান্যই যদিও, তবু তো বিয়াল্লিশ লাখ! ফায়দা আছে বটে!
(অন্য একটি খবর দিলে জনসংখ্যার ফায়দা বোঝা যাবে! শুনলাম, করোনায় মরবে কিনা, চাকরি থাকবে কিনা, খেতে পাবে কিনা, বিয়ে করে বাচ্চা জন্ম দিতে পারবে কিনা- এই নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী শুনতে এতো এতো মানুষের লাইন পড়েছে ইন্টারনেটেই, যে জ্যোতিষ শাস্ত্র চর্চাকারী এক সংস্থা এই সময়ে রেকর্ড ইনকাম করেছে। চব্বিশ ঘণ্টা পরিষেবা চালু। তাও সামলাতে পারছে না! এই দুর্ভিক্ষের বাজারে তাঁর ইনকামের পরিমাণ নাকি চৌদ্দ লাখ! ভাবছি, গ্রহ নক্ষত্রের কি অবস্থা এখন!!)
ধরা যাক, যদি চল্লিশ লাখও ওই ওষুধ খান, ভাবা যায়, কতখানি ইমপ্যাক্ট সেই খবরটির? কি মারাত্মক ম্যাজিকাল রেমেডি হতে পারে সেটা, ভাবতে পারেন??
বাকি দু’লাখ গালাগালি করেছেন বলে বাদ দিলাম। ওগুলো এই দেশের ‘যত বেশি পড়ে, তত বেশি তর্ক করা ‘ আপন মগজে বা বিজ্ঞানে বিশ্বাসী, ভোটশক্তি নয় এমন পাবলিক, অতএব সংখ্যালঘু! বাদ দিন!
মোটের উপর- সেই ভিডিওটি দেখে মানুষ ভগবানের মত ভরসা করেছেন, ওষুধ খেতে শুরু করেছেন, করোনা নামক মারাত্মক অসুখের থেকে মুক্তির উপায় পেয়ে শ্রদ্ধায় অবনত হয়েছেন। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয় এই দেশে- আমাদের পা আর মাথা আছে, মাঝখানের শরীরটা ধরে রাখার জন্য মেরুদণ্ড অনেকেরই থাকে না বলে, মাথা ঠুকে যায় এমনিই! তার উপর ম্যাজিক হলে তো কথাই নেই! জয় মাক্কালী!
যদিও এই বিষয়টি প্রফেশনাল ছাড়া ভালো করে বোঝা যায় না (আমি ও তেমন বুঝি না), এমনই একটি বিষয়, তবু সাধারণ মানুষের জন্য কিছু বেসিক জায়গা নিয়ে লিখবো।
সাধারণ অর্থে ড্রাগ ট্রায়াল হলো কোন একটি ড্রাগ (প্রথমেই বলে রাখা ভালো, ড্রাগ আর মেডিসিন কথা দুটি আলাদা- ধরা যাক, আপনার শরীরে চিনি কম! এবার আপনাকে আমি ড্রাগ হিসেবে চিনি খাওয়াবো। অবশ্যই নিয়ম কানুন মেনে। এবার আপনি চিনি খেতে পারেন নানা উপায়ে। জলে গুলে, চেটে, চুষে, খাবারে মিশিয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবার এই চিনি হলো ড্রাগ, আর একটি ড্রিঙ্ক বা খাবারে মিশিয়ে বা খালি যখন খাওয়াবো বা শরীরে কোথাও গুজে দেব- তখন সেটা মেডিসিন! কারণ তখন আমাকে জেনে বুঝে নিতে হবে- ঠিক কতটা কোন মাত্রায় কখন কার সাথে আপনাকে খাওয়ালে বা দিলে চিনি কম-এর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন! আপনাকে এক ফোঁটা জল মেশানো অন্য রাসায়নিক দেয়া হলো মানে- পুরোটা মিলে মেডিসিন, রাসায়নিক পদার্থটি ড্রাগ)। মানে কোন রাসায়নিক পদার্থ/ অন্য কিছুকে যখন আমি দাবী করবো সেটা কোন অসুখ বা সমস্যাকে সারিয়ে তুলবে/দূর করবে/কমাবে/রোধ করবে/ ভবিষ্যতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে, তখন কি কি উপায়ে সেই পদার্থকে নানা বিজ্ঞান সম্মত ধাপের মধ্য দিয়ে গিয়ে, শেষ অব্দি সরকার নির্ধারিত কমিটির অনুমোদন লাভ করে মানুষের উপর প্রয়োগ করা যায়/ব্যবসায়িক উৎপাদন করা যায় ইত্যাদি বিষয়ের একটি সুস্পষ্ট গাইডলাইন ।
সারা পৃথিবীতে এই নিয়ম চলে। একটু আধটু এদিক ওদিক হয় বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে। কিন্ত মোদ্দাকথা টা প্রায় একই। কারণ, সেটাই বর্তমান পৃথিবীতে স্বীকৃত বিজ্ঞান সম্মত উপায়। এবং তার পুরোটাই কিন্ত ঠিক করা হয়েছে মানুষের কল্যাণে। আমেরিকায় যেমন FDA, আমাদের দেশেও আছে DCGI এবং CDSCO, চাইলেই যে কেউ পড়ে নিতে পারেন ইন্টারনেটে।
এই যে আপনি ওভার দ্যা কাউন্টার নিজের ইচ্ছে মত একটা ওষুধ কিনে নেন, মডার্ন মেডিসিনের ক্ষেত্রে তার সবকটাই কিন্ত এই ধাপগুলো সাফল্যের সঙ্গে পার করে আসে। বাকিদের গুলো জানা আপনার কর্তব্য কিনা, আপনি ভাববেন।
আইন আছে এর জন্য। কমিটি পরিদর্শক ইত্যাদিও আছে। এবার কে কোথায় কি মানলেন বা অমান্য করলেন, তাতে কিন্ত বিজ্ঞান সম্মত এই প্রোটোকলকে কখনোই দায়ী করা যায় না। দায়ী হয় আইন প্রয়োগকারীর সাফল্য ব্যর্থতা বা যাদের উপর সেটা প্রয়োগ করা হয়, তাঁদের জানা বা না জানা।
একনজরে এবার দেখা যাক কি কি করা উচিত এই ড্রাগ ট্রায়ালেঃ
আপনি একটি দাবী করলেন- ওমুক ড্রাগ তমুক অসুখে বা সমস্যার সমাধান করবে। এবার আপনাকে যেতে হবে চারটি ধাপের মধ্য দিয়ে। হতে পারে সেটা নতুন কোন আবিষ্কার বা অন্য কোন দেশে আবিষ্কৃত হয়েছে এবং আপনি প্রাথমিক ভাবে ভারতে সেটা নিয়ে কাজ করতে চান।
চারটি ধাপ নিম্নরূপ:
প্রথমতঃ আপনাকে সরকারি অনুমোদন লাভ করতে কিছু অফিশিয়াল ফর্মালিটি মেনে এগোতে হবে। সেসব বিষয়ে বিশদে ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।
কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলি এই ক্ষেত্রে যেটা করতেই হবেঃ
৪৪ নম্বর নামে একটা ফর্ম পূরণ করতে হয় ৫০ হাজারের চালান দিয়ে।
১. ড্রাগ বা ড্রাগ তৈরীর কাঁচামাল কোথা থেকে আসছে সেটা জানাতে হবে। (আপনার বাড়ির গাঁজার গাছ বা টয়লেটের জলও যদি হয়, সেটাও বলতে হবে!)
২. রাসায়নিক বা ফার্মাকোলজিকাল গুণাবলী, কাঁচামালের মধ্যে যদি একগাদা রাসায়নিক থাকে তাহলে ঠিক কোন রাসায়নিক পদার্থটি নিয়ে কাজ চলবে, সেটার ফর্মুলেশন ইত্যাদি। (যেমন, গাঁজার মধ্যে অনেকগুলো রাসায়নিক থাকে, তার কয়েকটি মানুষের জন্য ড্রাগ হিসেবেও ব্যবহার হয়!)
৩. মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর দেহে ওই পদার্থটির প্রয়োগের সাফল্য ও সেই সম্পর্কিত সমস্ত খুঁটিনাটি।
(আমরা যেহেতু বুদ্ধিমান প্রাণী, তাই সাধারণতঃ একটু লোয়ার শ্রেণীর প্রাণীদের এক্ষেত্রে মুরগি করা হয়!)
৪ . প্রাণীর দেহে ওই পদার্থটির বিষক্রিয়ার সমস্ত তথ্য।
নিয়ম কানুন মেনে করলেও কিছু প্রাণী মারা যায়- সে বৃহত্তর স্বার্থে তুচ্ছ অবশ্যই। সে তর্ক আলাদা।
তো উপরের সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে–এরপরে আসা যায় আসল ধাপগুলোতে।
Phase I
* ট্রায়াল করতে পারেন একমাত্র যিনি ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজিতে স্বীকৃত ডিগ্রীধারী।
* করতে পারেন এমন একটি জায়গায়, যেখানে তিনি ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের খুব কাছে থেকে মনিটর করতে পারেন।
* একটি বা দুটি সেন্টারে অন্ততঃ দু’জন সাবজেক্টের উপর সেম ডোজ প্রয়োগ করতে হবে।
** যে যে তথ্য জমা দিতে হবে এর জন্য তা হলো :
* একটি নির্দিষ্ট ডোজে কি ক্ষতিকর প্রভাব আছে, ডোজ কতটা পরিমাণ অব্দি বাড়ানো কমানো যায়, দ্বিতীয় বা পরবর্তী ডোজ দিলে কি কি ক্ষতিকর প্রভাব হয়।
* পুরুষের ইনফার্টিলিটি করে কিনা।
* আমাদের শরীরের জিনের উপর কোন এফেক্ট আছে কিনা।
* সুস্পষ্ট তথ্য লাগবে ওই ড্রাগ- শরীরে যে পথে দেয়া হবে (মুখে বা রক্তনালী বা চামড়ায় বা নাকে ইত্যাদি), যতটা দেয়া হবে বা যে উপায়ে দেয়া হবে তাতে কোন বিষক্রিয়া করছে কিনা।
* তথ্য লাগবে- ওই পদার্থটি কোনরকম ভাবে মানব শরীরে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া/অসহ্য অবস্থা তৈরি করে কিনা।
* তথ্য লাগবে- ওই পদার্থ ব্যবহার করার ফলে ভয় মানব শরীর সূর্যালোক বা কোন আলোর দ্বারা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হবে কিনা।
এর প্রত্যেকটি তথ্য কিন্ত বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে প্রমাণিত হতে হবে! বিশেষজ্ঞরা সেগুলো খুঁটিয়ে দেখবেন, তবেই অনুমোদন দেবেন!
যদি সেই তথ্য না থাকে, তাহলে ওই পদার্থটি কোন ভাবেই phase 1 ট্রায়ালে অনুমোদন পাওয়ার কথা নয়।
Phase II
ফেজ ওয়ান পাশ করলে এই ফেজ-এ প্রত্যেকটি নির্ধারিত ডোজের জন্য ১০-১২ জন সাবজেক্ট লাগবে।
৩-৪ টি সেন্টারে একসাথে কাজটি চলবে, যেখানে যথাযথ ব্যবস্থা থাকবে ওই পদার্থের efficacy and safety (কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা) পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে।
এই পর্যায়ে এসে আপনাকে যে যে তথ্য দিতে হবে (ফেজ ওয়ান পেরিয়ে এলে বা সরাসরি শুরু করলে) তা হলোঃ ফেজ ওয়ান-এর সমস্ত তথ্য, বারবার ব্যবহারের ফলে তৈরি হওয়া বিষক্রিয়ার তথ্য, জিনের উপর কোন এফেক্ট আছে কিনা, মহিলাদের স্বাভাবিক ডেভেলপমেন্ট বা রিপ্রোডাক্টিভ ব্যবস্থার উপর কোন এফেক্ট আছে কিনা! (যদি সাবজেক্ট মহিলা হন)
Phase III
যদি ওষুধটি অন্য কোন দেশে অলরেডি অনুমোদন পায়/ব্যবসায়িক ভাবে উৎপাদিত হয়, তাহলে কমপক্ষে ১০০ জনের তথ্য লাগবে, যাঁদের ৩-৪ টি সেন্টারে সাবজেক্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। যদি একদম নতুন কোন ড্রাগ হয় যেটা ভারতে আবিষ্কার করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ৫০০ জনের তথ্য মিনিমাম ১০-১৫ টি সেন্টার থেকে নিতে হবে।
এই ক্ষেত্রে ও আপনাকে আগের দুই ফেজ এর সমস্ত তথ্য দিতে হবে। অনুমোদনের তথ্য দিতে হবে। বিষক্রিয়া, মহিলাদের/গর্ভবতী মা ও শিশুর উপর প্রয়োগের ভাল মন্দ নিয়ে তথ্য, পদার্থটি ক্যান্সারের কারণ কিনা সেই তথ্য লাগবে।
Phase IV
এই ফেজে আপনাকে আগের সব ফেজ এর সমস্ত প্রমাণিত/অনুমোদিত তথ্য জমা দিতে হবে। কোন তথ্য অন্য কোথাও থেকে নেয়া হলে, ব্যবহার করা হলে- তার রেফারেন্স লাগবে।
তারপর যদি তথ্যে ঘাটতি থাকে, তাহলে হয়- গবেষকের কাছে ফেরত পাঠানো হবে/Investigational New Drug COMMITTEE বা New Drug Advisory Committee র কাছে পাঠানো হবে।
তাঁরা Drug and Cosmetic Rule-এর ১৩ ধারা মেনে ড্রাগটির শ্রেণীবিভাগ করবেন/বাতিল করবেন/পুনরায় সব বিষয় খুঁটিয়ে দেখবেন।
এইসব ধাপ পেরিয়ে এসে লাইসেন্সিং অথরিটি ড্রাগটিকে সঠিক বলে ঘোষণা করবেন এবং আমজনতার ব্যবহারের জন্য স্বীকৃত ডাক্তারকে সেটা প্রেসক্রাইব করতে বলবেন।
এই হলো গোদা বাংলায় ড্রাগ ট্রায়াল!
এর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আছে ৬৩৫ পাতার Drug and Cosmetic Rule, আছে magical remedy act ইত্যাদি।
এই ম্যাজিকাল রেমেডি অ্যাক্ট নিয়ে অন্য একদিন লেখা যাবে।
অল্প একটু বলি।
এই আইন মেনে চলতে গেলে দেখা যায়- সাধারণ অর্থে জ্বর/নিউমোনিয়া সহ অন্যান্য কমন ৫৪ টি অসুখের ক্ষেত্রে (তার মধ্যে পড়বে যৌনক্ষমতা বর্ধক ওষুধ বা ঋতুস্রাবের সমস্যাও), কোন রকম পদার্থকে ম্যাজিকাল রেমেডি বলে দাবী করা বা বিজ্ঞাপন দেয়া যাবে না!
দাবী করা যায় না- এই পদার্থ ওইসব অসুখের ক্ষেত্রে নিরাময়/ডায়াগনসিস/রোধ করবে!
খাতায় কলমে তার জন্য রয়েছে শাস্তিও!
ড্রাগ ট্রায়ালের পথ পেরিয়ে আসার পর ও কিন্ত এই একই শর্ত প্রযোজ্য!
যে কারণে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে এমন ওষুধ প্রেসক্রাইব করা যায় না।
এবার আসুন , তথাকথিত টিভি চ্যানেলে প্রচারিত ‘করোনা জব্দ’ করার ওষুধ নিয়ে।
আপনারা নিজেরাই দেখে শুনে নিতে পারবেন যে, ওই তথাকথিত ড্রাগ ট্রায়াল কোন নিয়ম কানুন আদৌ মেনেছে কিনা!
দেখতে পাবেন- কিভাবে জেনারেল মেডিসিন (মানে মডার্ন মেডিসিন)-এর সাথে মিশিয়ে মাত্র চুয়াল্লিশ জন রোগীর উপর (মাথায় রাখুন রোগীর উপর, বাছাই করা সাবজেক্ট নয় কিন্ত!), কোন রকম তথ্য ছাড়াই ড্রাগ প্রয়োগ করা হয়েছে ! প্রশ্ন তুলবেন না কি করে হয়! দেখবেন দাবী করা হয়েছে- জেনারেল মেডিসিনের সাথে মিশিয়ে দেয়া রোগীর ক্ষেত্রে ওই ওষুধ কি সাফল্য পেয়েছে!! অন্যদের তথ্য নেই কিন্তু!
নিজে খুঁজে দেখতে পারেন- পৃথিবী জুড়ে কোথাও করোনা রোধে ওই ওষুধের কোন প্রমাণিত তথ্য আছে কিনা।
সে সব ছেড়ে দিন। ভাবুন তো, আইনের কথা। করোনার প্রাথমিক উপসর্গ কিন্ত জ্বর সর্দি কাশি। ফুসফুসের সমস্যা হলো নিউমোনিয়া!!
হ্যাঁ নিউমোনিয়া!!
যেটা নিয়ে কোন রকম মিরাকল সদৃশ দাবি আইন বিরোধী!
অথচ, আমাদের দেশে এসব চলে। লাখে লাখে মানুষ ভিডিও দেখেই খুঁজতে লেগেছেন কোথাও ওই ওষুধ পাওয়া যায় কিনা!! খাচ্ছেনও বহু মানুষ!!
আরো বড় ব্যাপার হলো- আমাদেরই মন্ত্রণালয় একবার ওষুধটি নিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল , পরে ঘুরিয়ে ইমিউনিটি বুস্টার বলে ফের বিজ্ঞাপন দিয়েছে!
ওই ওষুধ যাঁরা প্রেসক্রাইব করেন, তাঁদেরই অনেকে বিরোধিতা করেছেন ওই ওষুধ নিয়ে!!
যাইহোক, তারপরও আমাদের দেশে ওই ওষুধ খাবার লোকের অভাব হবে না। তথাকথিত ওষুধটির ব্যবসায়িক সাফল্য অতএব আকাশছোঁয়া হবে- এ নিয়ে সন্দেহ নেই!
হ্যাঁ, অনেকে বিরুদ্ধে যুক্তি দেবেন- মডার্ন মেডিসিন ও এখনো অব্দি করোনা রোধে কোন বলার মত সাফল্য পায়নি! তাহলে এটা যদি সফল হয় তো সমস্যা কি??
কোন সমস্যা নেই! খোলাখুলি বলছি- কোন সমস্যা থাকার কথা নয়! মানুষের কাজে লাগবে এমন কোন আবিষ্কারই সাদরে গ্রহণ করতে হবে!
(মডার্ন মেডিসিনের কিন্ত এইসব ধাপ মেনেই এগোতে হবে! কোন টিভি চ্যানেলের শর্টকাট রাস্তা নেই! হ্যাঁ, এই কারণেই ম্যাজিকালের দাবিও করা যাচ্ছে না! ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি বহু অসুখের, এমনকি ত্রিশ চল্লিশ বছর ধরে চেষ্টা র পরেও!
AIDS এর উদাহরণ দিই। ১৯৮১ সালে জানা গেছে এই অসুখ নিয়ে। আজো কোন ম্যাজিকাল রেমেডি আছে বলে মডার্ন মেডিসিন দাবি করতে পারেনি!!)
কিন্ত সেই দাবী সত্যি কিনা, তার প্রমাণিত তথ্য আছে কিনা, সে সব না জেনে টিভি চ্যানেলের খবর দেখে যদি কিছু খাওয়া হয়, তাহলে তার সাথে এক গ্লাস নদীর জল খাবার কোন পার্থক্য থাকে না।
একটা উদাহরণ দিই- একজন টিভি দেখে হলুদ আর দুধ খেয়ে এই গতকাল এসেছিলেন কিডনিতে বিষক্রিয়া নিয়ে! তথ্য যদি থাকতো, তাহলে তিনি খেতেন কি? বা খেলেও নিয়ম মেনে খেতেন, তাই না?
এটা বুঝতে সামান্য জ্ঞান লাগে। আর যদি সেই জ্ঞান না থাকে, তাহলে সরকারের উচিত সব মানুষের পারমিশন নিয়ে এইসব কমিটি পরিদর্শক সংস্থা তুলে দেয়া! এইসব আইন কানুনকে গঙ্গায় বিসর্জন দেয়া উচিত এখুনি!! খালি খালি কেন বিজ্ঞানের নাম করে এতো ট্রায়ালের ঝামেলা রাখা হবে??
যা খুশি টিভিতে দেখিয়ে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়!!
আমরাও পড়াশোনা না করেই মিরাকল ড্রাগগুলো বস্তা ভরে ঘরে রেখে দিতে পারি!
কোথায় কি করোনা!!
আমরা জব্দ করে দেব অনায়াসে!!
তা না করে, বিজ্ঞানের নামে সারা পৃথিবীর একগাদা বিজ্ঞানী, সরকার সবাই টাকা খরচ করে মৃত্যু রোধ করতে নেমেছে! যত্তসব!!
আসুন প্রতিবাদ করি।
কোনটা প্রতিবাদ করবেন– সেটা নির্ধারণ করার জন্য আপনার মগজের উপর বিশ্বাস রাখলাম।
তর্ক করতে পারবো না ৷আমার সে জ্ঞান বুদ্ধি নেই ৷ তবে কী জানেন , আমাকে ভারতবর্ষের অন্যতম এক ইউরোলজিষ্ট বলেছিলেন , ” Sorry , I can’t answer everything..god has made human and man has written the books… I can’t tell you what is wrong with her.” উনি ভগবানের দোহাই দিয়েছিলেন ৷ আমি তো ভগবানের খোঁজে যাইনি ! মন্দিরেও নয় ! পুণার KEM হাসপাতালের অভিজ্ঞতা ৷ কিছু মনে করবেন না ৷ সাধারণ মানুষ ইচ্ছে করে ‘মুরগী’ হতে যায় না , উপায় নেই বলেই খড়কুটো আঁকড়ে ধরে ৷
Like!! Really appreciate you sharing this blog post.Really thank you! Keep writing.
I really like and appreciate your blog post.
I always spent my half an hour to read this web site’s articles or reviews daily along with a mug of coffee.