এমনই এক প্যান্ডেমিক হয়েছিল ১৯১৮-‘১৯ সালে। স্প্যানিশ ফ্লু প্যান্ডেমিক। জানুয়ারি ১৯১৮ থেকে ডিসেম্বর ১৯১৯ অবধি চলেছিল সেই ভয়ংকর মহামারী।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার (১৯১১-১৯১৮) পৃথিবীতে ভালো চিকিৎসা ছিল না, ছিল না যোগাযোগ ব্যবস্থা। হাসপাতাল ছিল না বেশী, আই সি ইউ ছিল না, ভেন্টিলেটর ছিল না। ছিল না অ্যান্টিবায়োটিক। মানবজাতির দুর্দশা হয়েছিল অবর্ণনীয়। সারা পৃথিবী জুড়ে ৫-১০ কোটি মানুষ মারা গেছিল। আমাদের ভারতে মারা গেছিল এক থেকে দেড় কোটি। ব্রিটিশ শাসকের কাছে ভারতীয়দের জীবনের দাম পিঁপড়ের জীবনের থেকে বেশী ছিল না।
সনাতনবাবু ধুতি গুটিয়ে লাঠি ঠকঠক করতে করতে পাড়ার চন্ডীমন্ডপে এসে বসে হাঁক পারলেন, ওহে হরিপদ, কেমন আছো? ভাই বাড়ি ফিরেছে? পশ্চিমে শুনছি কি না কি মহামারী লেগেছে?’ এই ছিল মানুষে মানুষে যোগাযোগ! বিলেত থেকে জাহাজে একটা চিঠি এসে পৌঁছতে দু’মাস সময় লাগত। তাতেও মানুষ সেই মহামারীতে উজাড় হয়ে যায় নি।
আর আজ আমাদের হাতে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ই-মেইল, জি পি এস, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার। মানুষ তার চিন্তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে দিগ্বিদিকে। মুহূর্তের মধ্যে তার উত্তরও এসে যায়। তবু মানুষ কয়েকটি দিন ঘরবন্দী থাকতে রাজী নয়।
আপনার ঘরে তো কালকের খাবার আছে। ভাবুন তো,ভিনরাজ্যে কাজ হারানো সেই শ্রমিকের কথা, যে ২০০ কিমি পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরছে। পথে অনাহার, সঙ্গে পুলিশের মার।
অথবা, ঘর থেকে উৎখাত হওয়া সেই নার্সের কথা, যে উপযুক্ত জীবাণুরোধী পোষাক ছাড়াই উদয়াস্ত ডিউটি করে চলেছে। নিজের শিশুপুত্রের মুখটাও দেখার সুযোগ পাচ্ছে না!
এদের কথা ভেবে, নিজের প্রিয়জনের নিরাপত্তার কথা ভেবে, ঘরবন্দী থাকুন না কয়েকটা দিন!
বিশ্বাস রাখুন, এ লড়াই আমরা জিতবই। মরার আগেই মরব না।
খুব সুন্দর তথ্য!!আমরা এ লড়াই জিতবই জিতবো!!আমি ঘরে আছি!!