প্র: কোভিভ রোগে পালস অক্সিমিটার যন্ত্রটি কি কাজে লাগে ?
উঃ নিঃশ্বাসের কষ্ট এই উপসর্গ ছাড়াই রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার পরিস্থিতি যা সাইলেন্ট হাইপোক্সিয়া নামে পরিচিত সেটি নির্ণয় করতে; রোগীর ক্লিনিক্যাল অবস্থার অবনতিকে দ্রুত নির্ণয় করতে; এবং রক্তে মিশে থাকা অক্সিজেনের পরিমানকে সুনিশ্চিত ভাবে নিরুপন করতে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়।
প্র: ফিঙ্গার টিপ পালস অক্সিমিটার যন্ত্রটি সঠিক ভাবে ব্যবহার করার পদ্ধতি কি ?
উঃ সঠিক পদ্ধতিটি ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হ’ল
১: নেলপলিশ, হেনা, নকল নখ ইত্যাদি তুলে/সরিয়ে দিন।
২: হাত যদি খুব শীতল মনে হয় তাহলে হাতে হাত ঘষে কিছুটা উষ্ণ করে নিতে হবে। আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এই ধাপটি খুব একটা দরকার হয় না।
৩: পালস অক্সিমিটার লাগানোর আগে মিনিট পাঁচেক রিল্যাক্স অবস্থায় বিশ্রাম নিন।
৪: হৃদপিন্ড এর লেভেলে বুকের ওপর হাত পেতে দিন।
৫: যন্ত্রটি অন করুন/ চালু করুন বোতাম টিপে। দেখুন যন্ত্রের স্ক্রিনে ডিজিট বা সংখ্যাগুলি ভেসে উঠলো কিনা। যন্ত্রটি চালু করার পরে তার মধ্যের ইন্টারনাল ক্যালিব্রেশন সিস্টেমটি কাজ করতে শুরু করে।
৬: হাতের মধ্যম আঙুলটি সঠিকভাবে যন্ত্রে ঢুকিয়ে দিন প্রস্তুতকারক সংস্থার দেওয়া ছবি অনুযায়ী।
৭: যন্ত্রটিকে সময় দিন যাতে সেটি পালস ও অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে পারে। হাত, আঙ্গুল ও যন্ত্রটি কমবেশি এক মিনিট নাড়াচাড়া করবেন না।
৮: পাঁচ সেকেন্ড ধরে অপরিবর্তিত যে সর্বোচ্চ ফলাফল দেখতে পাবেন সেটি টুকে নিন।
৯: দিনে কমপক্ষে তিনবার মাপুন ও টুকে রাখুন।
১০: যন্ত্রটি ব্যবহারের পরে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিন।
প্ৰ: পালস অক্সিমিটার যন্ত্রের ফলাফলের ব্যাখ্যা কি?
উঃ SPO2 যদি ৯৪% বা তার বেশি থাকে এবং কোনো বিপদ সঙ্কেত (যেমন বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাসের কষ্ট, হাঁফ ধরে যাওয়া, মানসিক বিকার ইত্যাদি) না থাকে তাহলে বাড়িতে হোম আইসলেশনে থেকেই চিকিৎসা চালানো যাবে। রুগী যদি সেফ হোমে থাকেন তাহলে তাকে কোভিভ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার প্রয়োজন নেই।
SPO2 যদি ৯৪% এর কম হয়ে যায়, তাহলে রুগীকে কোভিভ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করার দরকার হবে, সেফ হোমে নিয়ে গেলে চলবে না। তার জন্য প্রয়জনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ধরণের রুগীকে বাড়িতে রেখে কেবল অক্সিজেন এর সাহায্যে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না।
SPO2 যদি ৯০% এর কম হয়ে যায়, তাহলে সেটি মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি বলে বিবেচিত হবে এবং সবচেয়ে ভালো হয় যদি এই রুগীকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট যুক্ত কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা যায়।
প্ৰ: পালস অক্সিমিটার যন্ত্র কতটা নিখুঁত ? ভুলভাল ফলাফল আসতে পারে?
উঃ সাধারণত এই যন্ত্রগুলিতে নিখুঁত ফলাফল পাওয়া যায় (মোবাইল এপ বিশিষ্ট যন্ত্র এখনো অনুমোদিত নয়), যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়াও কয়েকটি ক্ষেত্রে ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে যেমন: আঙুলে নেলপলিস, হেনা, কৃত্রিম নখ ইত্যাদি থাকলে; হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেলে, রক্তচাপ নেমে গিয়ে থাকলে, রুগী শকে চলে গেলে; মাপার সময় আঙ্গুল, হাত বা যন্ত্র অত্যধিক নাড়াচাড়া করলে; আগে থেকেই হিমোগ্লোবিন অস্বাভাবিকতা রোগ থাকলে; কার্বন মনোক্সাইড পয়জনিং থাকলে।
মোটের ওপর এই খুদে যন্ত্রটি খুবই শক্তিশালী পরীক্ষিত প্রযুক্তিবিদ্যা অনুযায়ী তৈরি করা এবং একটি অত্যন্ত কার্যকরী অনুমোদিত যন্ত্র। নির্দ্বিধায় ব্যবহার করুন। ব্যবহার পদ্ধতি অতীব সহজ সরল।
[বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রক ভারত সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী লিখিত]