পঁচাত্তুরে পদীপিসির মেজাজটা সকাল ইস্তক গরম হয়ে আছে। পৌনে নটা। কাজের লোক পদ্দ এখুনো আসেনি। আজ ওরই একদিন কি এই পদী বামনির একদিন।
ভাবতে ভাবতেই পদ্দ ঢুকল হাঁপাতে হাঁপাতে। “রাগ পরে কোরো মাসিমা, আগে কলসী দাও, জল চলে গেল বলে। কাকলিবৌদির বাড়িতে আজ যা দেরি করে দিল!”
রাস্তার কল থেকে টাটকা জল নিয়ে ফিরতেই পদীপিসি ফেটে পড়লেন।-“কেমন তোর আক্কেল লা? খাবার জল ধরা হয়নি, ঘর বাসি পড়ে, তুই কিনা কাকলের বাড়িতে বসে আছিস!”
– “কি করব বলো, সকালে গিয়ে শুনি কত্তা-গিন্নির আপিস ছুটি। ছেলের ইস্কুলের পাট ত কবেই চুকে গেছে। বেলায় ঘুম থেকে উঠে পরোটা বানাও, মামলেট ভাজো, দুকুরের মাংসের আলু-পেঁজ-আদা কুটে দিয়ে যাও – দেরি কি সাধ করে হয়েছে গো।”
-“ওরা ত গরমেন্টের চাকরি করে রে। এবার থেকে বেস্পতিবার কি লক্ষ্মীপুজোর ছুটি দেওয়া শুরু হল?”
– “তাও জানো না মাসিমা? আজ যে বিদেন রায়ের জম্মদিন। সেজন্যে আজ ত সব বন্দ গো। ছেলে বলছিল, আজ নাকি আবার ডাক্তার দিবস না কি যেন একটা। তেলিপাড়ার মোড়ে অক্তদান শিবির হচ্ছে। ও পাড়ার শিবু ডাক্তারকে ফুলের তোড়া দিয়ে বসিয়ে কাউন্সিল রমেন দাস মাইকে ডাক্তারদের সমুন্দে ভাল ভাল কথা কইছে। আমিও ত এট্টু শুনে এলুম।”
– “বিধেন রায়ের জম্মদিন নাহয় বুঝলুম, তাই বলে ডাক্তারগুলোকে নিয়েও আদিখ্যেতা রে। চামারগুলো পয়সা নিয়ে চিকিচ্ছের নামে পটাপট রুগী মারবে, তাদের আবার ফুলের তোড়া।”
– “তাই ত শুনছি গো, আজ নাকি তেনাদের ইস্পেশাল দিন, ছেলে ত মোবাইল দেকে তাই বলল।”
– “কলিরে, কলি! এই যে শিবু ডাক্তার, আঁটকুড়ির বেটা আমার হেঁটোর ব্যতাটা সারাতে পারে না। বলে কিনা বিরেনব্বই কিলো ওজন হলে ও ব্যতা কমবে কিভাবে, তাকেও না হলে কেউ ফুল দেয়! খ্যাংড়া মারি অমন তোড়ার মুকে। আমিই যদি ওজন কমাব, তাহলে তুই পাস দিলি কি টুকে?”
– “আমিও ত তাই বলি মাসিমা, আমার সোয়ামীটার কথাই ভাবো। বেটাছেলে মানুষ, একটু মদ ত গিলবেই। সস্তা খুঁজতে গিয়ে বিষমদ খেয়ে ফেলল। পারল ডাক্তারের গুষ্টি মানুষটারে বাঁচাতে? এয়াঁদেরও আবার খাতির করা! তবে হ্যাঁ, রমেনের পাটিকে দিয়ে থুয়েও নাকখানেকের ওপর টাকা ঘরে এসেছিল, তাই দে বড় করে ছেলের বে টা দিলুম। ”
– “যেতে দে পদ্দ, যেতে দে। সব বিচার যমের দুয়োরে হবে রে। তুই বরং আমার রুটি দুটো করে দে মা, সাড়ে ন’টা বাজতে যায়, খিদে লেগে গেল যে।”
********************************************
আকাশনীল দত্ত আজ হাল্কা মুডে। ওঁর কর্পোরেট ব্যাঙ্কে আজ হলিডে নয়, কিন্তু গাভমেন্ট সেক্টর বন্ধ বলে কাজের প্রেসারটা একটু লাইট ছিল। ভায়রা চন্দ্রজিৎ, কালচার না কি একটা ডিপার্টমেন্টের ডাইরেক্টর। ওর আজ ছুটি। শালী রীনা একটা প্রাইভেট স্কুলের প্রিন্সিপাল, ওর ত এখন লং হলিডে। ইভনিং এ একটা ঘরোয়া গ্যাদারিং বসেছে। ছোট করে শিভাস রিগাল আর জোম্যাটো দিয়ে আনানো হাল্কা কিছু মাঞ্চিস্।
“টোস্ট টু লেট ডঃ বি সি রয়, একটা ফালতু ছুটি পাইয়ে দেবার জন্য। আর একটা অ্যাড হল ছুটির লিস্টে।” – চোখ টিপে চন্দ্রজিৎ গ্লাস তুললেন।
“চিয়ার্স। তবে যাই বলো বাপু, এই ডক্টর্স ডে ব্যপারটা কেন জানি না, আই থিংক আ বিট ওভারহাইপড।” আকাশনীলের স্ত্রী লীনা বললেন।
“একজ্যাক্টলি। আফটার অল, ইটস্ নো সার্ভিস। দোজ পিপল আর বিয়িং পেইড ফর হোয়াট দে আর ডুইং, ডিয়ার।” – আকাশনীল স্ত্রীর সাথে সহমত।
“দিদি, তোকে দুটো পোস্ট দেখাই। আমাদের বুকুন শেয়ার করেছে।” – রীনা মোবাইল বার করলেন।
“বুকুন কে?” – আকাশনীল শালীর দিকে ঘুরলেন।
“বুকুন ওর ননদের ছেলে। অফথ্যালমোলজিতে পোস্ট গ্রাজুয়েশন করছে ডেলহিতে” – লীনার উত্তর।
“কি পোস্ট করেছে বুকুন?” – উৎসুক চন্দ্রজিৎ।
রীনা ঘুরিয়ে দেখালেন সবাইকে। একটা কোলাজ। তাতে কয়েক ডজন ডক্টরের ছবি। এরকম নাকি মোর দ্যান থাউজ্যান্ড ডক্টরস প্যানডেমিক টাইমে কান্ট্রিকে সার্ভ করতে গিয়ে লাইফ স্যাক্রিফাইস করেছেন। দে অল আর কোভিড মার্টারস অ্যান্ড ডিজার্ভ আ স্পেশাল হোমেজ অন ডক্টরস্ ডে – এই সব কথা ইনিয়ে বিনিয়ে লেখা আর কি।
“একটা প্রফেশনাল হ্যাজার্ডকে মার্টারডম বলে চালানো – এ শুধু ক্লেভার ডাক্তারগুলোর পক্ষেই সম্ভব।” লীনা মতামত দিলেন।
“কান্ট এগ্রি মোর। অত যদি শহীদের স্টেটাস পাবার শখ হয়, তাহলে গো টু সিয়াচেন ফ্রন্ট। ফাইট ফর দ্য সভার্নিটি অব দ্য কান্ট্রি।” চন্দ্রজিৎ উত্তেজিত।
“আমারও ব্যপারটা, ওই যাকে বাংলায় বলে আদিখ্যেতা, তাই মনে হচ্ছে।” – রীনা যোগ করলেন।
“দেশে ল্যাকস্ অফ পিপল মারা গেল, ইচ ডেথ ইজ আ হিউজ লস টু দেয়ার ফ্যামিলিজ। এরপর ত তাহলে সবাই গ্রুপ তৈরী করে গান স্যালুট চাইবে। রিডিকিউলাস।” – আকাশনীলের গলা চড়ল।
“আর একটা পোস্ট দেখো আকাশদা – একজন ডক্টর-কাম-পোয়েট একটা কবিতায় কেমন কেঁদেকেটে কলিগস্ দের জন্য সিমপ্যাথি বিল্ড আপ করার চেষ্টা করছেন।” – একটু ঘন হলেন টিনা।
“এখন আর পদ্য পড়িওনা, সখী।” – আকাশনীল শ্যালিকার সাথে রসিকতা করলেন।
“আমার ত মনে হয়, এসব ডিসকাস করে ইভনিংটা স্পয়েল করার কোনও মানেই হয়না। কতগুলো লোক স্রেফ টাকার জন্য কাজ করতে গিয়ে মারা গেছে। তাছাড়া, এদের মধ্যে অনেক রিটায়ার্ড ডক্টরসএর ছবিও আছে বলে জানি- তারাও কি কোভিড মার্টার? আ বাঞ্চ অব হিপোক্রিটস। লিভ ইট, লিভ ইট।” চন্দ্রজিৎ আড়চোখে একবার শালী-জামাইবাবুর ডিসটান্সটা মেপে নিলেন।
“হ্যাঁরে বোনু, ছুটকি কেমন আছে রে টেক্সাসে? একটু অ্যাডজাস্টমেন্ট হয়েছে? আমার পাপাইটা ত প্রথম প্রথম শিকাগোতে খুব কষ্ট পেত।” – লীনা প্রসঙ্গ ঘোরালেন।
********************************************
রাত এগারোটা। খেয়ে উঠে অনেক আগে পড়া একটা বই নিয়ে বসেছিলেন ডাঃ প্রদ্যুম্ন বসু। রাহুল সাংকৃত্যায়নের ‘ভোল্গা থেকে গঙ্গা’। কি অল্প পরিসরে দীর্ঘ আট হাজার বছরের নৃতাত্ত্বিক ইতিহাস গল্পের ছলে লিখেছেন মহাপণ্ডিত মানুষটি।
প্রদ্যুম্ন পড়ছেন, কিন্তু মন চঞ্চল, মেয়ে সুমা এখনও ফোন করল না। পিজি হাসপাতালে জেনেরাল সার্জারির ফার্স্ট ইয়ার ট্রেনি। যদিও জানেন, আজ ওদের অ্যাডমিশন ডে, সকাল আটটা থেকে কাল সকাল আটটা টানা ডিউটি, তারপরে পোস্ট অ্যাডমিশন রাউন্ড – নিস্তার পেতে পেতে দুপুর। তাও চিন্তা থাকে। নিজে ত জানেন, রোজই অল্পবিস্তর ঝামেলা হয়, কটা আর খবরে আসে।
এমন সময়ে ফোনটা এল। মেয়ে সকালে ক্যান্টিনে ব্রেকফাস্ট সেরে ওয়ার্ডে ঢুকেছে, সারাদিন লাঞ্চের সময় হয়নি, আউটডোর শেষ হতেই ওটিতে ছুটতে হয়েছিল। একটার পর একটা কেস। অবশেষে একটু আগে এক জিডিএ দাদাকে বলে রাস্তার ওপারে গোখেল-এর ফুটপাথ থেকে ডিম-টোস্ট আনিয়ে চিবোচ্ছে। ওই দোকানগুলো মাঝরাত অবধি খোলা থাকে। সুইগ্গি দিয়েও ভাল কিছু আনানো যায়, কিন্তু পেশেন্ট পার্টিরা দেখলে সামনেই টেরাবাঁকা মন্তব্য করে, “ডাক্তারী করতে এসে খাওয়ার বহর দেখো”, “আরে খাচ্ছে-পড়ছে ত আমাদেরই ট্যাক্সের পয়সায়”। তাই ভাল্লাগে না। বাবা বুঝলেন, মেয়ের চামড়া এখনও মোটা হয়নি। সবে ত শুরু।
“হ্যাপি ডক্টরস ডে বাবা।”
“থ্যাঙ্ক য়ু অ্যান্ড সেম টু য়ু মামণি। সারাদিন কোনও ঝামেলা হয়নি ত?” আসল প্রশ্নটা করেই ফেললেন।
“হবে না আবার? এই ত দশটার সময় – হেলমেট ছাড়া, এক বাইকে তিনজন বৃষ্টির মধ্যে, মদের গন্ধ ভকভক করছে। স্কাল তুবড়ে গেছে, ব্রেনে ক্লটস। ছটা পাঁজর ভেঙেছে, কেশে রক্ত বার হচ্ছে। একশ দেড়শ লোক বাইরে শাসাচ্ছে – মরে গেলে সবকটার ছাল-চামড়া তুলে নোব। তার সাথে মেয়েদের দিকে যে হুমকিটা এখন ন্যাশনাল থ্রেট হয়ে গেছে সেটা – রেপ করে দোব।”
“টেক কেয়ার মামণি। দেখ যদি এক-দু ঘন্টা রেস্ট পাস।”
“ও কে বাবা। মাকে এত কিছু জানিও না। টেনশন করবে। বোলো, কাল কথা বলব।”
“তিনি এখন আগাথা ক্রিস্টিতে মজে আছেন। বলে দিচ্ছি। গুড নাইট।” বুঝলেন মেয়ে ক্লান্ত। কথা বাড়ালেন না আর।
********************************************
বইটা বন্ধ করলেন প্রদ্যুম্ম। আজ ডক্টরস ডে। প্রবাদপ্রতিম ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম-মৃত্যুদিন। গত একবছরে করোনার চিকিৎসা করতে গিয়ে বা করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় দেড় হাজার চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তারদের কয়েকটি প্লাটফর্ম এবছর তাই দিনটাকে ‘শহীদ দিবস’ বলে মান্য করার সময়োচিত প্রস্তাব করেছে। অনেক নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও নিশ্চয় মারা গেছেন – সে সংখ্যাটা উনি কোথাও পাননি অবশ্য। দু চারজন রাজনীতির কারবারি আজ এ উপলক্ষে ডাক্তারদের সম্বর্ধনা দিচ্ছেন, বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গর্বিত পোস্ট দেখলেন। যদিও জানেন তার গুরুত্ব থালা-বাটি বাজানোর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
তাঁর অনেক বন্ধুরা আজ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন মৃত সহকর্মীদের স্মরণ করে। ভালো লেগেছে সে সহমর্মিতা দেখে। কিন্তু সেখানেই নদীর বুকে পুরীষের মত ভেসে এসেছে উল্টোদিকের জমাট বাঁধা অন্ধকার। স্ত্রী অঞ্জলি, যাদবপুরে আইআইসিবি-র বৈজ্ঞানিক। তিনি সন্ধ্যায় দেখালেন ফেসবুকের ট্রোলগুলো। লজ্জিত, বিরক্ত – সেধে মৃত মানুষগুলোর প্রতি অপমান ডেকে আনার কি খুব দরকার ছিল। উত্তরদাতারা অনেকেই শিক্ষিত, একজন আবার নিজেকে ‘ক্রিয়েটিভ থিংকার’ বলেও জাহির করেছেন।
– “হারামি ডাক্তারগুলোকে এমনিই গুলি করে কুত্তার মত মারা উচিৎ । মেরে একসাথে শহিদ দিবস করব।”
– ” মাত্র এই কটা? তার মানে ত শালারা নিজেরা ভালো প্রোটেকশন নিয়ে কাজ করে।”
– “সমাজের কটা শত্রু মরেছে, সমাজটা ক্লিন হল, এতে নাকিকান্নার কি আছে।”
– “শুয়োরের বাচ্চাগুলো আমাদের পয়সায় পড়বে, আমাদের পয়সায় খাবে। তারা কাজ করতে গিয়ে মরলে কি গান স্যালুট দেওয়া হবে?”
যদিও ডাঃ বসু জানেন, এঁরা সব নয়। এখনও অনেক রুগী আছেন, যাঁরা চেম্বারে ঢুকেই একগাল হেসে জিজ্ঞাসা করেন, “ডাক্তারবাবু, ভালো আছেন?” পুরোনো রুগীরা মেসেজ করে খোঁজ নেন, ডাক্তারবাবু নিজে এই মহামারীতে সুস্থ আছেন কিনা। এই সোশ্যাল মিডিয়াতেই কত মন ভালো করা কাহিনী পড়েন। কিন্তু এও জানেন, তাঁরা সমাজের একটি ছোট্ট অংশ। একঘর অন্ধকারের এককোণে প্রদীপের আলোর মত। নিজেরা সুস্থ মানুষ, তাই সকলের সাথে সুস্থ ব্যবহার করেন।
বাস্তবে সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মধ্যে – শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিত্ত নির্বিশেষে এক তীব্র বিতৃষ্ণা, সন্দেহ এমনকী হন্তারক মানসিকতার সৃষ্টি হয়েছে চিকিৎসক সমাজের প্রতি। তালি অবশ্য এক হাতে ত নয়ই, দু হাতেও বাজছে না – এ হল বারো হাতের অর্কেস্ট্রা যা কয়েক দশকের সঞ্চিত বিষফল। ভোটসর্বস্ব রাজনীতি, উদাসীন প্রশাসন, দুর্বল পরিকাঠামো, স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বার কর্পোরেটাইজেশন, আগ্রাসী বাজার অর্থনীতি, ভোগবাদী জীবনদর্শনের দাবি, হতমান শিক্ষাব্যবস্থা, মূল্যবোধের জলাঞ্জলি, সর্বব্যাপী অর্থনৈতিক হতাশা, তার থেকে জায়মান শ্রেণীবিদ্বেষ- সব মিলিয়ে এ যেন এক কুম্ভীপাক তৈরী হয়েছে। কে জানে এর সমাধান কোথায়। নিজে ত প্রায় শেষ করে আনলেন। চিন্তা হয় পরবর্তী প্রজন্মের জন্য – মেয়ে, ছাত্রছাত্রীরা। এই পরিবেশে মন দিয়ে চেয়ার-টেবল বানানোর কাজও করা যায় না, আর ডাক্তারী করা যায়? একটা ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক – একদিকে আতঙ্ক, অন্যদিকে অবিশ্বাস। প্রতিটি রুগীই সম্ভাব্য মামলাকারী, প্রতিটি রুগীর বাড়ির লোক সম্ভাব্য হামলাকারী। অন্যদিকে প্রত্যেক ডাক্তার কমিশনখোর, ধান্দাবাজ। তল পাচ্ছিলেন না।
হঠাৎ মুঠোফোনটা আওয়াজ করল। সাড়ে এগারো। মেসেজ এসেছে। পুরানো পেশেন্ট। রয়ে গেছে নম্বরটা।
“আমি মসলন্দপুরের রশিদ। এখন দুবাইতে। চার বছর আগে মেডিকেল কলেজে আপনি ও আপনার জুনিয়ররা আমায় দাফনের দুয়ার থেকে টেনে এনেছিলেন। ব্রেনে, কিডনিতে ম্যালেরিয়া ধরে গিয়েছিল। মনে আছে স্যর? ফেসবুকে দেখলাম দেশে আজ ডক্টরস্ ডে। আপনেরা সকলে ভালো আছেন ত? নমস্কার নিবেন।”
ডাঃ বসু তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলেন। “ভালো আছি রে। ভালো থাকিস। দেশে এলে একবার দেখা করে যাস।” তারপরে ফোনটা নিয়ে উঠলেন অঞ্জলিকে দেখাতে।
******************************************
শিরোনাম ঋণ – শ্রী মৃণাল সেন।
******************************************
একটি দুরন্ত লেখা যা একুশের মহামারীতে চিকিৎসক এবং সমাজের পারস্পরিক সম্পর্কের দলিল হয়ে রইল।