Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

হাওড়া যাওয়া

IMG_20221023_081642
Dr. Aniruddha Deb

Dr. Aniruddha Deb

Psychiatrist, Writer
My Other Posts
  • October 23, 2022
  • 9:49 am
  • No Comments

“ভাবতে পারেন, ডাক্তারবাবু, বাড়িতে কিছু গণ্ডগোল হলেই সব দোষ আমার!”

উত্তেজিত রোগিনী পাশের চেয়ারে বসা স্বামীকে দেখিয়ে বললেন, “মেয়েকে বার বার বলা সত্ত্বেও সে ভুল বাসে উঠবে, কলেজ না গিয়ে রাস্তা হারিয়ে সারা দিন কাটিয়ে ফিরবে, সে-ও আমার দোষ।”

স্বামীও রেগে বললেন, “তোমারই তো দোষ। আমি মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছি — ও পরিষ্কার বলেছে, মা বলেছিল, ‘এসপ্ল্যানেডে নেমে রাস্তা পেরিয়ে বাসে উঠবি।’ মেয়েও তাই করে উলটো দিকে চলে গেছে। এসপ্ল্যানেডে তো রাস্তা পেরোবার কথা নয়।”

“তা বলে একবার জিজ্ঞেস করবে না, অত বড়ো ধিঙ্গি মেয়ে? কনডাকটরকে যদি জিজ্ঞেস করত, পার্ক স্ট্রিট যায়? তাহলেই তো হত।”

সামনে বসা পেশেন্ট আর তার স্বামীর ঝগড়া থামানোর উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলাম, “কতদূর চলে গেছিল?”

“তা বেশ অনেক দূর গেছিল, ডাক্তারবাবু! হাওড়া পৌঁছে গেছিল। সমস্যাটা হল ওখানে গিয়ে ঘাবড়ে গেছে। আমাকে ফোন করেছিল। আমি বলে দিলাম, কোথায় যেতে হবে, মেয়ে তারপরে বাড়ি ফিরেই মায়ের বকুনি খেতে শুরু করল।”

বাবা এসব বলে চলেছেন, আর আমি মনে মনে ভাবছি, মেয়েরা রাস্তা না চিনলে কত সহজে হাওড়া পৌঁছে যায়! এই সেদিন এক বেচারি মেয়ে ফোন করেছে, “শোনো না, আমি নিউ মার্কেট থেকে সল্ট লেক যাচ্ছি, নতুন ড্রাইভার কোন রাস্তা দিয়ে হাওড়া নিয়ে যাচ্ছে! একটু ওকে ডিরেকশন দিয়ে দাও — ও আবার হিন্দি ছাড়া কিছুই বলে না।”

ড্রাইভারকে ফোন দেওয়া হল। সে তো অবাক! “হাওড়া যানা হ্যায়? লেখিন দিদি বোলি ঘর চলো?”

আমি জানতে চাইলেম, “তো তুম হাওড়া নেহি যা রহে হো?”

সে বলল, “নেহি। ম্যায় আভি সেন্ট্রাল এভ্‌নু পর হুঁ। ইঁহা সে বিবেকানন্দ রোড পকড়েঙ্গে, সিধা জায়েঙ্গে কানকুরগাছি, ফির সল্ট লেক।”

আমি মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম, “তোর কেন মনে হল তুই হাওড়া পৌঁছেছিস?”

সদুত্তর পেলাম না।

আপনারা যারা ভাবছেন, এ তো হাওড়া যাবার গল্প নয়, এ তো হাওড়া যাচ্ছি ভাবার গল্প। তাদের বলি, হাওড়া যাবার গল্প আসছে এবার। সম্প্রীতির গল্প।

সম্প্রীতি বড়োলোক মা-বাবার মেয়ে। বাবা বড়ো পোস্টে কাজ করেন, বাড়িতে তিনটে গাড়ি থাকে (উনিশশো আশির দশকে যা খুব চমকানোর ব্যাপার), সুতরাং স্কুল (মধ্য কলকাতায় মেয়েদের নামী স্কুল) যেতে আসতে কোনওদিন অসুবিধায় পড়তে হয়নি — এবং (স্বাভাবিকভাবেই) রাস্তাঘাটও চেনা হয়নি কোনও দিন।

স্কুল শেষ করে যখন সম্প্রীতি কলেজে ভর্তি হল, তখন বাবা-মাকে জোর দিয়ে বোঝাল, যে দাদা, আর পাশের বাড়ি থেকে জামাইবাবু রোজ ডালহৌসি স্কোয়্যার যান অফিস করতে, সুতরাং প্রেসিডেনসি যেতে অসুবিধা হবে না। আর ফেরার সময় — আনোয়ার শা রোডে বান্ধবীর বাড়ি। একসঙ্গেই ফিরে আসবে।
তাই হল। রোজ সকালে সম্প্রীতি হয় দাদার বাইকে, নয়ত জামাইবাবুর গাড়িতে ডালহৌসি পৌঁছয়। জামাইবাবু (বা দাদা) একটা বাসের (বা ট্রামের) দিকে আঙুল তুলে বলেন, “ওটায় ওঠ!” সম্প্রীতি এক ছুটে গিয়ে উঠে, বাঁদিকের একটা সিটে বসে, জানলা দিয়ে দেখতে থাকে কখন মেডিক্যাল কলেজ পার করে কলেজ স্ট্রিটের বইয়ের দোকান দেখা যায়, দেখা গেলে গিয়ে গেটে দাঁড়ায়, পরের স্টপেই নামে, নেমেই দেখে সামনে প্রেসিডেনসি। দিনের শেষে বন্ধুরা হইহই করতে করতে বাসে-ট্রামে-হেঁটে চলে যায় ডালহৌসি, সেখান থেকে বি-বা-দী বাগ — টালিগঞ্জ লেখা মিনিবাসে চড়ে বাড়ি ফেরে।

সুখেই কাটছিল দিন, এমন সময় এক দিন এল, যেদিন কোনও কারণে অফিস কাছারিতে ছুটি, কিন্তু ইউনিভারসিটিতে নয় — এবং কলেজে সেদিন কী একটা পরীক্ষাও বটে। আশ্চর্য হলেও এরকম ঘটনা ঘটে — কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েই ঘটে — আমার জীবদ্দশাতেই ঘটেছে।

আগের দিন থেকে সম্প্রীতির বাড়িতে বিশাল আলোচনা। বাবা ডেকে পাঠিয়েছেন দাদা আর জামাইবাবুকে — কী ভাবে মেয়ে কলেজ যাবে? এই মিটিং-এর মধ্যে আড্ডা মেরে বাড়িতে ঢুকল সম্প্রীতি। আলোচনাসভা দেখে বলল, “কোনও দরকার নেই। আমি নিজেই কলেজ যাব, আবার ফিরবও। যেভাবে যাই সেই রাস্তাতেই যাব। এখান থেকে মিনিবাসে ডালহৌসি, সেখান থেকে বাস ধরে কলেজ স্ট্রীট — সেকেন্ড ইয়ার হতে চলল, এখনও কলেজ যেতে পারব না? ভাব কী আমাকে? ইত্যাদি…”

সম্প্রীতির বাবা আমাকে বললেন, “অনিরুদ্ধ, তুমি ওকে নিয়ে যেতে পারবে? তুমি তো যাবে মেডিক্যাল কলেজে…”

আমি? আমার ক্লাস শুরু সকাল আটটায়। সম্প্রীতির পরীক্ষা সাড়ে দশটায়। আটটার সময় প্রেসিডেনসির সামনের গেটের তালা-ই খোলে না! বললাম, “তোর ওই আনোয়ার শা রোডের বন্ধু? ওর সঙ্গে যেতে পারবি না?”

“বাজে কথা বোলো না তো! আমি কি নিজে কলেজ যেতে পারি না নাকি?” বলে সম্প্রীতি আমাকেই খানিক চেঁচামেচি করে টেনে নিয়ে গেল। আড়ালে বলল, “অদিতি তো কলেজ যাবার নামে মেট্রোতে সিনেমা যাবে ওর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে। ওর তো আর পরীক্ষা নেই।”

আমিও নেই। তাড়াতাড়ি পালালাম।

পরদিন সকালে ফাঁকা (অফিস কাছারি বন্ধ) টালিগঞ্জ — বিবাদী বাগ মিনিবাসে চড়ে সম্প্রীতি কলেজে চললেন। সকাল থেকে দাদা-জামাইবাবু দুজনেই তৈরি — তাদেরকে “দূর হটো” বলে। ফাঁকা রাস্তা, শনশন করে বাস চলে একটা জায়গায় থামল। সম্প্রীতিকে কন্ডাকটর ডেকে বলল, “দিদি, এসে গেছে, নামুন।”

ডালহৌসি স্কোয়ারের বাস চলা থামার ছবিটা তখন অন্যরকম ছিল, কিন্তু যা-ই হোক, বাস থামত যেখানে, আর যেখান থেকে ছাড়ত, দুটো একই জায়গা নয়। ফলে সম্প্রীতি বাস থেকে নেমে চারিদিক দেখে কিছুই চিনতে পারল না। বলল, “কলেজ স্ট্রীটের বাস কোথা থেকে পাব?”

কন্ডাকটর হাতটা আকাশে তুলে দূরের দিকে তাক করে বলল, “ওইখানে যান।”

সম্প্রীতি ‘ওইখানে’ পৌঁছল। কেউ নেই যাকে জিজ্ঞেস করা যায়। হুশ হুশ করে বাস চলে যাচ্ছে, দেরি না হয়ে যায়! এমন সময়ে হঠাৎ দেখে একটা মিনিবাস। এটা ও প্রায়ই দেখেছে কলেজ স্ট্রিটে, কলেজের সামনেই। সল্ট লেক — হাওড়া স্টেশন। হাত দেখাতেই বাসটা ঘ্যাঁচ করে থামল। গেটে দাঁড়ান হেল্পার বলল, “তাড়াতাড়ি আসুন দিদি, এখানে দাঁড়ালে কেস দিয়ে দেবে।”
সম্প্রীতির কিছু জিজ্ঞেস করা হল না, এক ছুটে গিয়ে উঠতেই আবার বাসটা শনশনিয়ে ছুটল।

ভীড় না হলেও বাসটা খালি নয়, এবং বসার জায়গা নেই।

সম্প্রীতি ঠেলেঠুলে ভেতরের দিকে গিয়ে একটু ফাঁকা জায়গা পেয়ে দাঁড়াল। সামনের জানলা দিয়ে নিচু হয়ে তাকালে রাস্তার বাঁ দিকের ফুটপাথ দেখা যায়। কিন্তু যখনই নিচু হয়, বইয়ের দোকান তো দেখা যায় না!

এতক্ষণে পৌঁছে যাওয়া উচিত। কিন্তু — এ কী! বাসটা একটা বড়ো নদী পেরোচ্ছে যে — এই নদীটা সম্প্রীতি চেনে — এটা তো গঙ্গা! ওপারে ওই লাল বাড়িটা হাওড়া স্টেশন! কী বিপদ! এখান থেকে কী করে কলেজ যাবে?

সম্প্রীতি ঠেলেঠুলে আবার বাসের দরজায় পৌঁছে বলল, “কলেজ স্ট্রীট যায় না?”

কনডাকটর বলল, “আরে কলেজ স্ট্রীট তো ওদিকের বাস যাবে। আপনি তো হাওড়ার বাসে উঠেছেন। নেমে রাস্তা পেরিয়ে যান!”
তখন হাওড়া ব্রিজ পেরিয়ে বাসটা ট্র্যাফিক জ্যামে থেমেছে। সম্প্রীতি আবার এক ছুটে রাস্তা পেরিয়ে গেল। রাস্তার পাশে দাঁড়ান একজনকে জিজ্ঞেস করল, কলেজ স্ট্রিট যায় কোন বাস?”

লোকটা একটা ট্রামের দিকে দেখিয়ে বলল, “ওই তো ওটা যাবে।”

সম্প্রীতি দেখে ২৬ নম্বর ট্রাম। একটু খটকা লাগল। কই, কলেজ স্ট্রীটে তো এই ট্রামটা দেখিনি কখনও? কিন্তু ফাঁকা পাদানিতে দাঁড়ান কনডাকটরও যখন বলল, “হাঁ, হাঁ, যায়গা যায়গা…” তখন আর দ্বিরুক্তি না করে উঠে পড়ল।

লেডিজের দিকে বাঁ-ধারের সিট খালি। সম্প্রীতি তারই একটায় বসে রাস্তার দিকে নজর রাখল। বইয়ের দোকান দেখতে যাতে ভুল না হয়।

ট্রাম চলছে তো চলছেই। সম্প্রীতি জানে না হাওড়া থেকে কলেজ স্ট্রীট কত দূর। কনডাকটরও খানিক বাদে সামনের দিকের একটা সিটে বসে ঘুমিয়ে পড়ল। ছুটির দিনে তারও ব্যবসা মন্দা। ফাঁকা রাস্তায় ট্রাম চলছে, হঠাৎ একটা বিশাল সাতমাথার মোড়ে এসে সম্প্রীতির খেয়াল হল এই জায়গাটা ও চেনে। এর নাম পার্ক সার্কাস।

এ কী! চিৎকার করতে শুরু করল সম্প্রীতি, “ইয়ে তো পার্ক সার্কাস হ্যায়। আপ মুঝে বোলা কলেজ স্ট্রীট যায়গা, কিন্তু এটা কী রকম কলেজ স্ট্রীট হ্যায়?”

কনডাকটর ঘুম থেকে উঠে বলল ২৬ নম্বর ট্রাম তো কলেজ স্ট্রীটের মোড় পার করেই শেয়ালদা, মৌলালি, মল্লিকবাজার হয়ে পার্ক সার্কাস এসেছে। আপনি কলেজ স্ট্রিট — মহাত্মা গান্ধী রোডের মোড়ে নামেননি কেন?”

সম্প্রীতি আর কি বলবে, তাই, “যত্তোসব আজেবাজে কথা বোলতা হ্যায়,” বলে ট্রাম থেকে নেমে একটা ট্যাক্সি করে বাড়ি ফিরল।

গল্পটা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন পরে হঠাৎ প্রকৃতি-দা ফোন করল। এমনিতেই কম কথার লোক, সেদিন দুপুরে আরও গম্ভীর যেন।

“কী করছ?”

বললাম, “বিশেষ কিছু না।”

“আমার বাড়ি আসবে?”

প্রকৃতি-দার বাড়ি আমার পাড়াতেই। বললাম, “আসছি।”

খানিকক্ষণ পরে প্রকৃতিদার বাড়ির গেট খুলতে যাচ্ছি, পেছন থেকে হাঁক এল, “এই যে, আর ঢুকতে হবে না।”

দেখি প্রকৃতিদা বাড়ির পাশের পানের দোকানে। সঙ্গে দীনুদা।
“ঈভ্‌স উইকলি বিল্ডিং কোথায় জান?” বলল প্রকৃতিদা।

“ঈভ্‌স উইকলি তো সেই মেয়েদের ম্যাগাজিন। বম্বে থেকে পাবলিশ হয় না?”

“সম্প্রীতি ফোন করেছিল। ওর কোন বন্ধু ওই বাড়িতে থাকে। ওদের বাড়িতে নাকি একটা ভাম ঢুকে আটকে গেছে। বুড়ো, কিংবা অসুস্থ। নড়তে পারছে না। উদ্ধার করে আনতে হবে।”
ভামোদ্ধার জাতীয় কার্যে প্রকৃতিদার সমকক্ষ কেউ নেই, কিন্তু ঈভস উইকলি বিল্ডিং কোথায়? আমরা এখন লিভিংস্টোনের মতো কোথায় যাব?

প্রকৃতিদা বলল, “সম্প্রীতি এখন ওখানে যাচ্ছে। আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। আমাকে মোটামুটি যা ডিরেকশন দিয়েছে, তাতে বুঝছি মিন্টো পার্কের কাছাকাছি কোথাও। চলো, গিয়ে মিন্টো পার্কের ওখান থেকে ফোন করব।”

তার চেয়ে এই ভালো নয় কি, যে সম্প্রীতি ওখানে পৌঁছে আমাদের ফোন করে ঠিকমত ডিরেকশন দিক?

দীনুদা ফিসফিস করে বলল, “আমিও তো তাই বলছি। কিন্তু কী তাড়া লেগেছে বুঝছি না।”

(এই ঘটনার মাস ছয়েক বাদে যখন প্রকৃতিদার মা আমাদের আলাদা আলাদা ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “সম্প্রীতি মেয়েটা কেমন গো?” তখন দীনুদা বলেছিল, “এইবার বুঝছি।”)

যাই হোক, আমরা বাসে করে গেলাম মিন্টো পার্ক (এখন ভগত সিং উদ্যান), সেখানে নেমে একটা দোকান খুঁজে ফোন করা হল (তখন মোবাইল ফোন তো ছিলই না, রাস্তায় রাস্তায় নানা প্রাইভেট কম্পানির ফোন বুথও ছিল না। শুধু ছিল ক্যালকাটা টেলিফোনস যাদের পাবলিক ফোন বুথ খুঁজে পাওয়া গেলেও তাতে ডায়াল টোন পাওয়া মুশকিল হত। সুতরাং দোকানে দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে হত, “দাদা একটা টেলিফোন করা যাবে?”)।
তা-ই করা হল। ফোনে কথা বলল প্রকৃতিদা-ই। তারপরে রাস্তা পেরিয়ে মিন্টো পার্কের পাশের সরু রাস্তা ধরে হাঁটা দিল।

“এই রাস্তার শেষে বলেছে।”

এই রাস্তা? হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রীটের শেষে ঈভস উইকলি বিলডিং? কই কোনও দিন দেখিনি তো?

যাই হোক, রাস্তার শেষ এল। যেমন চিরকাল ছিল, একদিকে সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাইমারি সেকশন, অন্য দিকে কয়েকটা বাড়ি। কোথাও ঈভস উইকলি বলে কিছু নেই।

একটা পানের দোকানে কিছু ছাত্র দাঁড়িয়ে সিগারেট কিনছিল আর জটলা করছিল। ওদের জিজ্ঞেস করলাম, “এখানে ঈভস উইকলি বলে কোনও বিল্ডিং আছে?” তারা অবাক হল, একে তাকে জিজ্ঞেস করল, কিন্তু কিছু বলতে পারল না। পানদোকানওয়ালা ভেবে পেল না এমন কোনও বিল্ডিং-এর নাম।

এমন সময় প্রকৃতিদা ডাকছে, “এই যে, এই বাড়ীটা।”
একটা পাঁচ না ছতলা বাড়ি — তাতে কোনও ঈভের দেখা নেই। কী করে জানলে?

“এই তো নম্বর মিলে যাচ্ছে। আর সম্প্রীতির বন্ধুর নাম রেখা ঝুনঝুনওয়ালা, ফ্ল্যাট ৩বি। এই বাড়ির সিঁড়ির নিচের একটা লেটার বক্সে লেখা আছে — ৩বি ঝুনঝুনওয়ালা। এটাই হবে।”
গোয়েন্দাগিরি সাক্সেসফুল। রেখার বাড়িতে ঢুকে দেখা গেল, সম্প্রীতি অপেক্ষমানা, সেই সঙ্গে পোক্ত কাঠের একটা খাঁচা, যাতে এর আগে ওর বাড়িতেই রাখা হয়েছিল অসুস্থ কোনও প্রাণী।
কসরত করে তাতে ধরা হল রেখার বাড়িতে ঢুকে পড়া বুড়ো ভাম। সকলে নামলাম নিচে। দীনুদা ছুটল ট্যাক্সি ডাকতে।
সম্প্রীতিকে বললাম, “হ্যাঁ রে, ঈভস উইকলি বিল্ডিং কেন বলেছিলি রে?”

সম্প্রীতি বলল, “এটাই তো ঈভস উইকলি বিল্ডিং। সব্বাই জানে।”

“কেউ জানে না।”

“এই তো অ্যাত্তো বড়ো বড়ো করে লেখা আছে। দেখতে পাও না? অন্ধ নাকি?”

দেখি গ্যারেজের পাশে একটা নেম-প্লেট, তাতে লেখা ঈভস উইকলি — রিজিওনাল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট অফিস। তারপরে কার নাম, ফ্ল্যাট নম্বর — এই সব। নেম-প্লেটটার সাইজ ৬” বাই ৪”-র বেশি নয়।

বললাম, “হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট বলতে পারলি না, সেন্ট জেভিয়ার্সের উলটো দিকে বলতে পারলি না, এই গ্যারেজের পাশে রুমালের সাইজের কাঠের টুকরোয় ঈভস উইকলি লেখা — তাতে গোটা বাড়িটাই ঈভস উইকলি হয়ে গেল?”

“যাও যাও, সারা কলকাতার লোক জানে আর তুমি জানো না, তাই বলছ। আর আমার হাওড়া যাওয়া নিয়ে হাসাহাসি কর। লজ্জা করে না?”

সবার সঙ্গে তর্ক করে পারা যায় না।

PrevPreviousধরি মাছ, না ছুঁই পানি
Nextমেডিকেল কাউন্সিল নির্বাচনে বেনিয়মের ধারাবাহিকতাNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

An Open appeal to Doctors Opposing Right to Health Bill of Rajasthan

March 30, 2023 No Comments

Dear Healers: We would still use healers for the fraternity of doctors, as that is your prime occupation, to heal people, bodily and mentally. You

স্বাস্থ্যের অধিকার: অধিকারের সুরক্ষা

March 29, 2023 No Comments

করোনা দূর করতে আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রীয় থালাবাটি বাজানো তৃতীয় বর্ষপূর্তির দিনে রাজস্থান সরকার স্বাস্থ্যের অধিকার বিল চালু করেছেন!মানুষের ভরসা ও স্ফূর্তির জন্যই যে এই পদক্ষেপ

Without Laboratory Activities: Further Progress of CMC and the Emergence of Modern Public Health

March 28, 2023 1 Comment

Preliminary Remarks As we shall see later, in the entire report of 1842-43, besides dissection, details of classes, different subjects taught in the College and

ডাক্তারির কথকতা-৭ বেসিক লাইফ সাপোর্ট

March 27, 2023 No Comments

ধরুন মাঝ রাস্তায় আপনার গাড়ি খারাপ হয়ে গেছে। কিছুতেই আর ইঞ্জিন চালু হচ্ছে না। তখন কি করা হয়? আপনি বা ড্রাইভার গাড়ির ষ্টিয়ারিং ধরে ড্রাইভার

অচেনা অন্ধকারে

March 26, 2023 1 Comment

রুগী দেখার ফাঁকে চোখ পড়ল ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এক রূপসী মহিলা। বেশ বড়সড়ো এক ছেলে কোলে। সোজা তাকিয়ে আমার দিকে—আমার কাজকর্ম লক্ষ্য করছে মনে

সাম্প্রতিক পোস্ট

An Open appeal to Doctors Opposing Right to Health Bill of Rajasthan

Doctors' Dialogue March 30, 2023

স্বাস্থ্যের অধিকার: অধিকারের সুরক্ষা

Dr. Koushik Lahiri March 29, 2023

Without Laboratory Activities: Further Progress of CMC and the Emergence of Modern Public Health

Dr. Jayanta Bhattacharya March 28, 2023

ডাক্তারির কথকতা-৭ বেসিক লাইফ সাপোর্ট

Dr. Chinmay Nath March 27, 2023

অচেনা অন্ধকারে

Dr. Asish Kumar Kundu March 26, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

429177
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]